facebook

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৯ নভেম্বর ২০১৫: বিকল্প পন্থায় ফেসবুক ব্যবহারকারীরা গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারিতে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী।এদিকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম জানিয়েছেন, ইন্টারনেট সংযোগ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ না করে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো শতভাগ বন্ধ করা সম্ভব নয়।রোববার সকালে সচিবালয়ের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে অনুষ্ঠিত এক সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা জানান তিনি। ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব বলেন, বিকল্প পন্থায় যারা ফেসবুক ব্যবহার করছেন তারা গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারিতে রয়েছেন। তাদের সবাইকে না ধরা হলেও, যাদেরকে ধরার তাদেরকেই ধরা হচ্ছে।

গত ১৮ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগর মাধ্যমগুলো বন্ধ রয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পরই ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো খুলে দেওয়া হবে।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য দিয়ে ফেসবুক বন্ধ থাকায় অনেক নাশকতা কমেছে বলেও জানান তিনি।ফেসবুক কবে নাগাদ খুলে দেওয়া হবে এমন এক প্রশ্নের জবাবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেছেন, একই প্রশ্ন বারবার করলে আমি আহত হই। তিনি আগের মতোই বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চাইলে খুলে দেয়া হবে। ফেসবুক পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয় জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হলে ইন্টারনেট শাটডাউন করতে হবে। সেটা আমরা করতে চাই না।এক প্রশ্নের জবাবে তারানা হালিম বলেন, আমি জনগণের প্রতিনিধিত্ব করি। যারা আইন মানছেন না তাদের প্রতিনিধিত্ব করি না। আপনারা তাদেরকেই প্রশ্ন করুন।এ সময় বিকল্প পন্থায় ফেসবুক ব্যবহারকারীদের প্রয়োজন হলে ধরা হচ্ছে বলে জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী। ফেসবুক বন্ধ থাকলেও বিকল্প পন্থায় গোয়েন্দা সংস্থা ব্যবহার করছে, মন্ত্রিসভার সদস্যও ব্যবহার করছেন, তাহলে সাধারণ মানুষ কেন নয় জানতে চাইলে সচিব বলেন, গোয়েন্দা সংস্থা বিকল্প পথে ব্যবহার করছে না, গোয়েন্দাগিরি করছে ।

তিনি বলেন, ‘বিকল্প পন্থায় যারা ব্যবহার করছেন তারা প্রত্যেকে গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারির মুখে আছেন। আমরা সবাইকে ধরছি না, যাকে ধরার তাকেই ধরছি।গত ১৮ নভেম্বর থেকে ফেসবুক, ভাইবারসহ বেশ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে মন্ত্রিসভার সদস্যসহ সরকারের অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বিকল্প উপায়ে ফেসবুক ব্যবহার করছেন। সাময়িক বন্ধ রাখার পরও যারা ফেসবুক ব্যবহার করছেন তাদের উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, ইন্টারনেট সম্পূর্ণ বন্ধ না করে ফেসবুক শতভাগ বন্ধ রাখা যায় না। যারা ব্যবহার করছেন তারাই বলুন কীভাবে সম্ভব?সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইন্টারনেট সম্পূর্ণ বন্ধ না করে ফেসবুক শতভাগ বন্ধ করা সম্ভব কি-না, এটা আপনারাই খোঁজ নেন। আশা করি খোঁজ নিয়ে আপনারাই উত্তরটা দেবেন। পৃথিবীর কোন দেশে, এমনকি যেখানে ফেসবুকের অ্যাডমিনও আছে, হান্ড্রেড পার্সেন্ট (শতভাগ) বন্ধ করা সম্ভব নয়।উপস্থিত কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, অপনারা কী অ্যাগ্রি করেন, আপনারা তো দীর্ঘদিন আছেন, আমি তো স্বল্পসময়। হান্ড্রেন্ড পার্সেন্ট কী বন্ধ করা সম্ভব?

তারানা হালিম বলেন,ফেসবুক হান্ড্রেড পার্সেন্ট বন্ধ করা সম্ভব নয়। ইন্টারনেট যতক্ষণ না সম্পূর্ণ শাটডাউন করেন। সেটা আমরা করতে চাই না। আমরা ইন্টারনেট শাটডাউন করবো না।সবারই সীমাবদ্ধতা থাকে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রযুক্তি দিয়ে প্রযুক্তির মোকাবেলা করছি। কিন্তু কেউ যদি বলেন, একশ’ ভাগ এটি (ফেসবুক ব্যবহার) সম্ভব, আমি অনুরোধ করবো একশ’ ভাগ কীভাবে সম্ভব আমাকে একটু জানিয়ে যান। তাহলে তিনি একজন অত্যন্ত স্বনামধন্য উদ্ভাবক হিসেবে পুরস্কারও পেতে পারেন। পৃথিবীর কোথাও ইন্টারনেট শাটডাউন ছাড়া ফেসবুক বন্ধ রাখা কোনো প্রযুক্তিবিদ বলতে পারেননি।

বিকল্প পথে দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যাবে না জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ব্যান্ডউইথ ক্যাপাসিটি কম হলে ব্যবহার করতে পারবেন না। নাশকতাকারীরা ব্যবহার করলেও দ্রুত ফেসবুকের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারছেন না বলে দাবি করেন প্রতিমন্ত্রী।কবে নাগাদ ফেসবুক খুলে দেওয়া হবে- প্রশ্নে তারানা হালিম বলেন, এই কথাগুলো আমাকে আহত করে। এখানে আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কিছু নেই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যখন মনে করবে এখন নিরাপদ, তখন খুলে দেওয়া হবে। যখন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মনে করবে, তখনই খুলে দেওয়া হবে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরীসহ টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীনস্ত বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।