BNP-December30,2015 (6)

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৫: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, সরকারের নীল নকশা অনুযায়ী আরেকটি প্রহসনের নির্বাচন হয়ে গেল। তিনি বলেন, এত দিন আশঙ্কা করেছিলাম প্রহসনের একটা নির্বাচন হতে যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত সেই আশঙ্কাই প্রমাণ হয়েছে। বুধবার বিকেল চারটার দিকে বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, এই সরকারের অধীনে কোনো দিন সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না, যত দিন তাঁরা ক্ষমতা থাকতে চায়, তত দিন হতে দেবে না।মির্জা ফখরুল বলেন, সকাল থেকে দিনভর নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশ দূরের কথা, মারামারি-সংঘাত, কেন্দ্র দখল ইত্যাদিতে নির্বাচন একটি ট্র্যাজেডিতে পরিণত হয়েছে। বিকেল চারটা পর্যন্ত যতটুকু খবর পেয়েছি, তাতে ১৫৭টি পৌরসভায় ধানের শীর্ষের এজেন্টদের মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এই সংখ্যা শেষ পর্যন্ত ২০০-র কম হবে না। অনেককে কেন্দ্রেই যেতে দেওয়া হয়নি। ভোটারদেরও অনেক জায়গায় বের করে দেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ ভোট কেন্দ্র দখল করা হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আরেকটি বিষয় আরেকবার লক্ষ্য করলাম যে, সরকার সব রাষ্ট্রযন্ত্রগুলোকে নির্বাচনে তাদের পক্ষে ব্যবহার করল।স্থানীয়ভাবে যেসব কেন্দ্রের ব্যাপারে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, সেগুলোতে পুনর্র্নিবাচনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব। তিনি বলেন, স্থানীয় ও কেন্দ্রীয়ভাবে যেসব পৌরসভার কেন্দ্র দখল, ভোট কারচুপির অভিযোগ করা হয়েছে সেসব কেন্দ্রে পুননির্বাচন দিতে হবে। এই নির্বাচন আবারও প্রমাণ করেছে, এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্ভব নয়।বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকার ঘোষণা দিলেও কোনো কোনো পৌরসভায় বিএনপির প্রার্থীরা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, স্থানীয়ভাবে ভোট বর্জনের কোনো সুযোগ নেই। কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া ছিল, কেন্দ্রের সঙ্গে কথা না বলে, স্থানীয়ভাবে কেউ ভোট বর্জন করতে পারবে না। আমরা নির্দেশ দিয়েছিলাম, যেকোনো অবস্থায় শান্ত থাকার, কোনোভাবেই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা না দেওয়ার এবং ভোট গণনা পর্যন্ত কেন্দ্রে অবস্থান করার।

পৌর নির্বাচনের ফলাফলে কারচুপির আশঙ্কা করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলীয় এজেন্টদের ভোট গণনা শেষ হওয়া পর্যন্ত কেন্দ্রে অবস্থান করার নির্দেশ দিয়েছেন। সব শেষে ফলাফলপত্রে প্রিজাইডিং অফিসারের স্বাক্ষর সম্বলিত কপি নিয়ে কেন্দ্র থেকে বের হতে বলেছেন।তিনি বলেন, যেসব পৌরসভায় নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে সেসব পৌরসভায় পুনঃনির্বাচন দিতে হবে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, সরকারের নীল নকশা অনুযায়ী নির্বাচন হয়েছে। অধিকাংশ ভোটকেন্দ্র থেকে বিএনপির প্রার্থী ও এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। সংবাদ কর্মীদের হামলা ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সবকিছু করা হয়েছে নির্বাচনে কারচুপি করার জন্য। ইসির কাছে বারবার অভিযোগ করেও এর কোনো প্রতিকার পাইনি।এরপরও যে কোনো পরিস্থিতিতে বিএনপি নেতাকর্মীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেছেন কেন্দ্রের নির্দেশ আছে, স্থানীয়ভাবে দলের কোনো প্রার্থীর নির্বাচন বর্জনের সুযোগ নেই। সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুলের সঙ্গে ছিলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড, ওসমান ফারুক, এমএ কাইয়ুম, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন প্রমুখ।