25-04-16-Dubol Muder_Kalabagan-3

রাজধানীর কলাবাগান থানা এলাকার একটি বাড়িতে ২ জনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ৩৫ নম্বর লেক সার্কাস এলাকার সাত তলা বাড়িটির দ্বিতীয় তলায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন বাড়ির নিরাপত্তা রক্ষী মো. পারভেজ।

পুলিশ জানায়, নিহতদের মধ্যে জুলহাস ঢাকাস্থ একটি বিদেশি দূতাবাসের সাবেক কর্মকর্তা ছিলেন। নিহত আরেক জনের নাম তনয় জানা গেলেও বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপ-কমিশনার আবদুল বাতেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করছে। কুপিয়ে হত্যা করেই পালিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। বিষয়টি নিয়ে আরও খোঁজ-খবর চলছে বলে জানান ডিসি আবদুল বাতেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আহত নিরাপত্তা কর্মী মো. পারভেজ বলেন, বিকেলে ১০ থেকে ১২ জন লোক কুরিয়ারের পার্শ্বেল আছে বলে বাসায় ঢুকতে চান। আমি তাদের দরজায় দাঁড় করিয়ে দ্বিতীয় তলায় জুলহাস সাহেবের ফ্ল্যাটে যাই।

‘কিন্তু তারাও আমার পিছু পিছু সেখানে যেতে চায়, মানা করলে আমার মাথায় আঘাত করে তারা। পরে দরজা খুললে জুলহাস সাহেব ও তনয় সাহেবের ওপর হামলা চালায়। স্থানীয় সূত্র জানায়, নিহত জুলহাস সমকামী বিষয়ক পত্রিকা ‘রূপবানে’র সম্পাদক ছিলেন। এমনকি গত পহেলা বৈশাখে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে সমকামীদের নিয়ে মিছিল করতে চান, পরে পুলিশের হাতে আটকও হন। নিহতের প্রতিবেশী এক নারী সাংবাদিকদের বলেন, বিকেলে ডাকাত, ডাকাত চিৎকার শুনে ওই বাসায় প্রবেশের চেষ্টা করি। প্রথমে যেতে না পারলেও পরে ঘরে গিয়ে দেখি চারদিকে রক্ত ছড়িয়ে আছে।

25-04-16-Dubol Muder_Kalabagan-6‘এ সময় ঘরের ডান দিকে দুই ব্যক্তিকে পড়ে থাকতেও দেখি,’ বলেন তিনি। এদিকে স্থানীয় লোকজন জানায়, ডাকাত ডাকাত চিৎকারের পর ওই বাসা থেকে আনুমানিক ছয় থেকে সাতজনকে দৌড়ে বেড়িয়ে যেতে দেখেছেন তারা। পরে লেক সার্কাস তেঁতুলতলা মাঠের পাশ দিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ওই বাসায় জুলহাসের মা ও আরও ক’জন ছিলেন বলে জানান স্থানীয়রা।

25-04-16-Dubol Muder_Kalabagan-2এদিকে হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গেছেন ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া, ডিআইজি মনিরুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা। রাজধানীর কলাবাগানে জোড়া হত্যার ঘটনায় অন্তত ছয়জন সন্ত্রাসী অংশ নেয়। আর এই হত্যাকাণ্ড ঘটাতে তারা সময় নেয় ৫ মিনিট। সোমবার (২৫ এপ্রিল) ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।

তিনি বলেন, আমরা ধারণা করছি এটি টার্গেট কিলিং। হত্যাকাণ্ডে ছয়জন অংশ নেয়। প্রথমে তিনজন প্রবেশ করে। পরে জোর করে আরও তিনজন প্রবেশ করে। আর তারা মোট সময় নেয় পাঁচ মিনিট। পরে তারা কলাবাগানের ডলফিন গলি দিয়ে পালিয়ে যায়।

‘এ সময় এএসআই মুমতাজ তাদের ঝাপটে ধরলে তারা তাকে কোপায়। এ সময় তিনি সন্ত্রাসীদের মধ্যে একজনের ব্যাগ ও মোবাইল রেখে দেন।’ ডিএমপি কমিশনার বলেন, পুলিশ তদন্ত করছে। আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের ওপর কোনো হুমকি ছিলো কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, হুমকি ছিলো কিনা তা তাৎক্ষণিক বলা যাচ্ছে না। কেনো ঘটনাটি ঘটলো তা বোঝার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। হুমকি আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে একটু সময়ের প্রয়োজন।