মুফতি হান্নানসহ ৩ জঙ্গির ফাঁসি বহাল রেখে পূর্ণাঙ্গ রায়

সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার ঘটনায় শীর্ষস্থানীয় জঙ্গিনেতা মুফতি আবদুল হান্নান মুন্সিসহ তিন জঙ্গির ফাঁসির আদেশ বহাল রেখে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি এই রায় ঘোষণা করা হয়।ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ এ কে এম মনিরুজ্জামান কবির প্রথম আলোকে বলেন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের লেখা ১৬৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় আজ প্রকাশিত হয়েছে। এতে আসামিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে কোনো বাধা থাকল না।

তবে আসামিরা যদি সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেন, তাহলে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে না। আসামিরা হলেন মুফতি আবদুল হান্নান, হুজির সিলেট অঞ্চলের সংগঠক শরীফ শাহেদুল আলম (বিপুল) ও দেলোয়ার হোসেন (রিপন)। মামলার অপর দুই আসামি মুফতি হান্নানের ভাই মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান (অভি) এবং মুফতি মঈন উদ্দিন ওরফে আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মুফতি হান্নান নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের (হুজি-বি) শীর্ষস্থানীয় নেতা। তাঁর পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় বাংলাদেশে উগ্র জঙ্গিবাদ ও নাশকতা বিস্তৃত হয়েছে। ২০০০ সালে গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাস্থলের কাছে বোমা পুঁতে রাখার ঘটনায় প্রথমবারের মতো তিনি আলোচনায় আসেন। ২০০১ সালে রমনা বটমূলে বোমা হামলা, ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা কিংবা ২০০৫ সালে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলার মতো উল্লেখযোগ্য নাশকতার ঘটনার অন্যতম সংগঠন ও পরিকল্পনাকারী ছিলেন এই মুফতি হান্নান। তাঁরই পরিকল্পনায় ২০০৪ সালের ২১ মে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনারের ওপর গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে।

২০০৪ সালের ২১ মে নবনিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী সিলেটে গেলে হজরত শাহজালালের (র.) মাজার জিয়ারত করতে যান। সেখানে দরগাহ মসজিদে জুমার নামাজ আদায় শেষে বের হওয়ার সময় প্রধান ফটকের কাছে তাঁকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ভয়ংকর ওই হামলায় তিনজন নিহত হন। আনোয়ার চৌধুরী, সিলেটের জেলা প্রশাসক আবুল হোসেন, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবদুল হাই খানসহ প্রায় ৭০ জন আহত হন।