বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বের হয়ে যাওয়ার কারণে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে নতুন করে আবার আলোচনা করতে হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তবে যে সুবিধা বর্তমানে পাওয়া যায়, তা অব্যাহত থাকবে বলেই তিনি আশা করেন। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে তৈরি পোশাকের ক্ষেত্রে যে সুবিধা বাংলাদেশ পেয়ে আসছে তার ব্যতয় ঘটবে না বলেও আশা করেন তিনি।রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্ত সাতটি সংস্থার সঙ্গে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের কর্মপরিকল্পনা চুক্তি বাস্তবায়ন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ কথা বলেন।মন্ত্রী বলেন, ‘ইইউ থেকে যুক্তরাজ্য বেরিয়ে যাওয়ার কারণে নতুন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে আমাদের অনেক করণীয় আছে। বাংলাদেশ যে পরিমাণ তৈরি পোশাক রপ্তানি করে, তার মধ্যে ৫৪ শতাংশ ইইউতে যায়। যুক্তরাজ্য একক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশি পণ্যের তৃতীয় গন্তব্যস্থল।

যুক্তরাজ্য ইইউ থেকে বের হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের করণীয় নির্ধারণে ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যানকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।ইইউ থেকে যুক্তরাজ্য বের হয়ে যাওয়ার কারণে ইউরো ও পাউন্ডের দরপতন হয়েছে। ব্যবসায়ীরা তিন ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। পাউন্ডের দর ১১৮ থেকে ১০৩-এ নেমে গেছে। এ অবস্থায় তৈরি পোশাক খাতকে সহায়তা করতে হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই খাতকে সহায়তা করতে হবে, যাতে এটি থমকে না দাঁড়ায়।

সম্প্রতি ভারত তাদের তৈরি পোশাক খাতকে সহায়তা দিতে ছয় হাজার কোটি টাকা নগদ সহায়তা দেওয়ার প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এর প্রভাবও দেশে পড়তে পারে। আর সে কারণে বিদেশে তৈরি পোশাক খাতকে সহায়তা করার পক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে বলে জানান মন্ত্রী। তোফায়েল আহমেদ বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেক্সিট অর্থাৎ যুক্তরাজ্য বেরিয়ে যাওয়ার জন্য যে গণরায় হয়েছে তাতে আমাদের সামনে নতুন পরিস্থতির সৃষ্টি হয়েছে। এসব ব্যাপারেও আমাদের অনেক করণীয় আছে।এ ব্যাপারে ইতোমধ্যে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাজ শুরু করেছি। আমরা আন্তর্জাতিক বিশ্বে যে পণ্য রফতানি করি তার ৫৪ শতাংশ, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নে রফতানি করি। অস্ত্র ছাড়া সব পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেয়ে থাকি।

তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের রফতানির তৃতীয় গন্তব্যস্থান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রথম, জার্মানি দ্বিতীয় এবং তৃতীয় যুক্তরাজ্য। নতুন সিদ্ধান্তের কারণে আমাদেরও কোন কোন ক্ষেত্রে নতুন করে রি-নেগোসিয়েশন, আবারও আলোচনা করতে হতে পারে।আমরা জানি, ইইউ থেকে যে সুবিধা পেয়ে থাকি বা পাচ্ছি তা অব্যাহত থাকবে বলেই আমার কাছে প্রতীয়মান। কারণ যুক্তরাজ্যের সাথেও আমাদের ভালো সম্পর্ক। সুতরাং যে সুবিধা পাই এর কোনো ব্যতয় ঘটবে না।তবে কঠিন একটা অবস্থায় পড়বে আমাদের যারা রফতানিকারক তারা। ইতোমধ্যে ইউরোর মান কমেছে। রফতানি করে যেটা ১১৮ টাকা পেতাম সেটা এখন ৭০ টাকা। আন্তর্জাতিক বাজারের ব্যবসায়ীদের তিন ট্রিলিয়নের ডলার ক্ষতি হয়েছে, বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমরা যদি এখন থেকে কাজ শুরু করি, ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে কমিটি করবো যে আমাদের কীভাবে এগোতে হবে। সেই কমিটি পদক্ষেপ নেবে।শুল্ক মুক্ত সুবিধার ব্যতিক্রম হবে না জানিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, এটা নিয়ে চিন্তিত নেই। আবার ভোট করার জন্য যুক্তরাজ্যে লিখিত দিয়েছে।