ব্যতিক্রমী উদ্যোগে মাসব্যাপী উন্মুক্ত ইফতার মাহফিল

এখন রমজান মাস। রমজান মাসে অনেকেই অসহায়, গরীব ও দুস্থ মানুষদেরকে সাহয্য-সহযোগিতা করে থাকে। তবে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগের দেখা মিলল টাঙ্গাইল শহরের শহীদ মিনারে। ত্রিবেণী টাঙ্গাইলের উদ্যোগে প্রথম বারের মতো মাসব্যাপী উন্মুক্ত ইফতার মাহফিল চলছে। এখানে যে কেউ ইফতার করতে পারেন। তবে মূলত অসহায় গরীব ও দুস্থদের জন্য এ আয়োজন। নিজস্ব তহবিল থেকে তারা খরচ করছেন। প্রতিদিন প্রায় ৪ হাজার থেকে ৬ হাজার খরচ হয়। প্রায় ১৫০ জনের মতো রোজাদার প্রতিদিন ইফতার করেন ।ইফতারে মুড়ি, বুট, পিয়াজো, খেজুর, জিলাপি, শরবত ইত্যাদি দেয়া হয়। তবে সপ্তাহে দুইদিন খিচুির এবং মাংশও দেয়া হয়। সরেজমিনে দেখা যায়, ইফতার করার জন্য সারিবদ্ধভাবে লোকজন বসে আছেন। অনেকেই স্কুল-ছাত্র, কেউবা ব্যবসায়ী, আমার অনেকেই ভ্যান চালক, রিকশাচালক, পথচারি, ভিক্ষুক, অসহায় এবং দরিদ্র শ্রেণীর মানুষ।

এ বিষয়ে কথা হয় ত্রিবেণীর সভাপতি মমেনুল ইসলাম খান বাপ্পির সাথে । তিনি বলেন, আমাদের এ সংগঠন ১৬ বছর ধরে চলছে। সংগঠনের শুরুর থেকেই আমরা বিভিন্ন কল্যাণমূলক কাজ করছি। সংগঠনের প্রথম বছরে আমরা স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির মধ্য দিয়ে কাজ শুরু করেছি। আমরা প্রতিবছরই গরীব ও দুঃখীদের সাহয্য সহযোগিতা করতে চাই। এরই ধরাবাহিকতায় এ বছর আমরা শহীদ মিনারে অসহায় গরীব ও দুস্থদের জন্য মাসব্যাপী উন্মুক্ত ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছি। তবে এখানে বিভিন্ন শ্রেণীর রোজাদাররা ও ইফতার করছেন। আমাদের এ সংগঠনে ৬০ জন সদস্য রয়েছে। তাদের কাছ থেকে আমরা অনুদান নিয়ে উন্মুক্ত ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছি। তিনি আরো বলেন, আমরা বিভিন্ন কল্যাণমূলক কাজ করছি। এ দেখে সমাজের বৃত্তবান লোকজনেরাও অসহায় এবং গরীব লোজদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করুক এটিই আমাদের উদ্যেশ।কথা হয় ভ্যান চালক মোহাম্মদ মুসার সাথে। তিনি বলেন, আমি ইফতার করার জন্য বাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম। শহীদ মিনারে উন্মুক্ত ইফতার মাহফিল দেখে আমি এখানে আসলাম এবং ইফতার ও করলাম। যারা এ আয়োজন করেছে তাদেরকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।

কথা হয় ভিক্ষুক শহীদুলের সাথে। তিনি বলেন, আমি ভিক্ষা করে কোন মতে নিজের খরচ চালাই। এক বেলা খাবার জুটলে আরেক বেলা জুটে না। আমি উন্মুক্ত ইফতার মাহফিলে রোজার প্রথম দিন থেকেই ইফতার করছি। আমাদের মতো অসহায় এবং গরীব লোকদের জন্য এমন আয়োজন সত্যিই প্রসংশণীয়। আমি দোয়া করি তারা যেন ভবিষ্যতে আরো বড় কোন কল্যানমূলক কাজ করতে পারে।কথা হয় পথচারী হেলাল উদ্দিনের সাথে। তিনি বলেন, আজ আমি এখানে ইফতার করেছি। এর আগে কোন সংগঠন টাঙ্গাইলে উন্মুক্ত ইফতার মাহফিল করেননি। তাদের এ উদ্যোগে কে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমার মতো অনেক পথচারীও এখানে ইফতার করেছেন। তবে এখানে গরীব এবং দুস্থ লোকজনের সংখ্যা বেশি।