%e0%a6%b8%e0%a6%bf%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a6%b8%e0%a6%b9%e0%a6%bf%e0%a6%82%e0%a6%b8%e0%a6%a4%e0%a6%be-%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a7%e0%a7%87-%e0%a6%b8%e0%a6%ae

অবশেষে সিরিয়ায় সহিংসতা বন্ধের উপায় ও প্রক্রিয়া বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছেছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের দীর্ঘ বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী- সোমবার সূর্যাস্তের পর থেকে সিরিয়াজুড়ে সব ধরনের হামলা থেকে বিরত থাকবে সরকারি বাহিনী, রাশিয়া ও মার্কিন জোট।

একইসঙ্গে অবরুদ্ধ এলাকাগুলোতে ত্রাণ পৌঁছানোর সুযোগ দেয়া হবে। তবে, জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস ও আল নুসরা ফ্রন্টের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই চলবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়। শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে সুইজার‌ল্যান্ডের জেনেভায় সিরিয়া বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা শেষে বাইরে বেরিয়ে এলে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভকে ঘিরে সংবাদকর্মীদের জড়ো হতে দেখা যায়।

আলোচনা যে ফলপ্রসূ হয়েছে, রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হাসিমুখ দেখেই তা আঁচ করা যায়। পরে সিরিয়ায় চলমান সহিংসতা বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতার বিষয়টি উদযাপনে সংবাদকর্মীদের হাতে পানীয় তুলে দেন তিনি। এর কিছুক্ষণ পরই, রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে টানা প্রায় ১৩ ঘণ্টা আলোচনার প্রাপ্তি আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। অস্ত্রবিরতি চুক্তি অনুযায়ী- ১২ই সেপ্টেম্বর সূর্যাস্তের পর থেকে সিরিয়ায় মার্কিন জোট, রাশিয়া ও সিরিয়ার সরকারি বাহিনী বিমান হামলা চালানো থেকে বিরত থাকবে।

এ সিদ্ধান্তকে ঐতিহাসিক- উল্লেখ করে এর মাধ্যমে সিরিয়া-সঙ্কট সমাধানের দিকে মোড় নিলো বলে মন্তব্য করেন তিনি। আলোচনার মাধ্যমে এ সঙ্কট উত্তরণ ও দেশটিতে গ্রহণযোগ্য একটি রাজনৈতিক পরিবর্তনের লক্ষ্যেই রাশিয়ার সঙ্গে এ মতৈক্য বলে জানান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেন, ‘আমরা এমন একটি অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছি, যেখানে যুদ্ধ অথবা শান্তি- যেকোনো একটি বেছে নিতে হচ্ছে। রাজনৈতিক সমাধানের মাধ্যমে সিরিয়ায় সহিংসতা কমে আসবে বলে আশা করছি আমরা। আইএস ও আল নুসরা ফ্রন্টকে নিশ্চিহ্ন করার লড়ই পরিচালনায় যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার একটি যৌথ পরিচালন-কেন্দ্র খোলা হবে।’

সিরীয় জনগণের ঈদ-উদযাপনকে অর্থবহ করতে ও তাদের কাছে সাহায্য পৌঁছে দিতে সব পক্ষকে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতি মেনে চলতে হবে বলে মন্তব্য করেন কেরি। পাশাপাশি, বিদ্রোহীদের ওপর সরকারি বাহিনীর বিমান হামলা বন্ধ ও আসাদ সরকারকে আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনতে রাশিয়া ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এ মতৈক্যের ব্যাপারে সিরীয় সরকারকে জানানো হয়েছে উল্লেখ করে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেন- অস্ত্রবিরতি কার্যকর করতে আসাদ সরকার সম্পূর্ণ প্রস্তুত। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, ‘এ চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া পূর্ণাঙ্গ অস্ত্রবিরতি বাস্তবায়ন করতে বাধ্য। সহিংসতা বন্ধে নিজেদের মিত্রপক্ষগুলোকে রাজি করাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো আমরা। সিরীয় সরকার অস্ত্রবিরতি করবে বলে আমাদের নিশ্চিত করেছে।’

২০১১ সালের মার্চে শুরু হওয়া সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ গত সাড়ে ৫ বছরে বহুমুখী সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে। সর্বনাশা এ যুদ্ধে প্রাণ গেছে সাড়ে চার লাখেরও বেশি মানুষের। আসাদ সরকারের ক্ষমতায় থাকা-না থাকার প্রশ্নে বিভক্ত রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এ যুদ্ধবিরতির সমঝোতা, সিরিয়া-সঙ্কট সমাধানে নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছে।