farmar-pic-jhenidah“দিলে নারী কৃষকের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, মিলবে ক্ষুধা ও দারিদ্র থেকে নি®কৃতি” এ শ্লোগানকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস উপলক্ষে ঝিনাইদহে বর্ণাঢ্য র‌্যালী অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকালে খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি), স্বাধীন কৃষক সংগঠন ও উন্নয়ন ধারা কর্তৃক আয়োজিত র‌্যালিটি শহরের খাদ্য অফিসের সামনে থেকে র‌্যালী বের হয়। নারী কৃষকের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিসহ বিভিন্ন দাবী সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুন, প্লাকার্ড সজ্জিত এক বর্ণাঢ্য র‌্যালি থেকে উক্ত দাবি জানানো হয়।

এই দাবীর প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন কৃষক, সাংবাদিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। র‌্যালীটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। পরে উন্নয়ন ধারা অফিস মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উন্নয়ন ধারার উপদেষ্টা তালিব বাশার নয়ন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন নির্বাহী পরিচালক শহিদুল ইসলাম, মানবাধিকার কর্মী আমিনুর রহমান টুকু, সময়ন্বয়ক হায়দার আলী, প্রকল্প সমন্বয়কারী রাজু আহম্মেদ, স্বাধীন কৃষক সংগঠন এর সভাপতি রুবায়েত হোসেন মোল্লা। কর্মসুচীতে উন্নয়ন ধারার কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন কৃষক সংগনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেয়।

আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস ২০১৬ উপলক্ষে জাতিসংঘের সদ্যবিদায়ী সেক্রেটারী জেনারেল বান কি মুন এর বক্তব্যানুসারে সম্প্রতি নির্ধারিত স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় জেন্ডার সমতা এবং নারীর ক্ষমতায়ন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহের অন্যতম। স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় খাদ্যের উৎপাদনশীলতা এবং ক্ষুদ্র খাদ্য উৎপাদকদের বিশেষ করে নারী উৎপাদকদের আয় দ্বিগুণ করার কথা বলা হয়েছে।

প্রকৃতপক্ষে ১৭ টি স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার প্রায় সবগুলোর সফলতার জন্যই গ্রামীণ নারীদেরকে অগ্রাধিকার দেওয়া সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ গ্রামীণ নারীগণ যাদের বেশিরভাগই কৃষি ও প্রাকৃতিক সম্পদের উপর নির্ভরশীল তারা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশ। উন্নয়নশীল দেশসমূহে কৃষিনির্ভর জনগোষ্ঠীর শতকরা ৪৩ ভাগই নারী যারা খাদ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে খাদ্য প্রত্রিয়াজাতকরণ ও রান্না-বান্না করাসহ পারিবারিক ও জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।

বাংলাদেশের গ্রামীণ কৃষক জনগোষ্ঠীর অর্ধেকই নারী এবং গ্রামীণ নারী শ্রমশক্তির শতকরা প্রায় ৭৯ ভাগ কৃষিতে নিয়োজিত। কৃষির অধিকাংশ কাজই নারীরা করে থাকেন। কিন্তু নারী কৃষকের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি না থাকায় রাষ্ট্রীয় নানা উদ্যোগ-আয়োজনে এখনো নারী কৃষকদের যথাযথ মূল্যায়ন হচ্ছে না। নারীরা কৃষি কার্ড, কৃষি ঋণ, কৃষি ভর্তুকীসহ সরকারি নানা প্রণোদনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কাজেই নারী কৃষকের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এখন সময়ের দাবী। নারী কৃষকের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির ফলেই মিলবে ক্ষুধা ও দারিদ্র থেকে নিষ্কৃতি।

জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি