21-10-16-al_council-1বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এক ও অভিন্ন এবং বাঙালী জাতির অবিচ্ছেদ্য অংশ৷ আওয়ামী লীগের ইতিহাস মানে বাঙ্গালী জাতির সংগ্রাম ও গৌরবের ইতিহাস৷ এ রাজনৈতিক দলটি এদেশের সুদীর্ঘ রাজনীতি এবং বাঙালি জাতির আন্দোলন-সংগ্রামের গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক৷প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী এ দলটির নেতৃত্বেই এদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়৷ রোজগার্ডেনে জন্মগ্রহণের পর থেকে নানা লড়াই, সংগ্রাম, চড়াই-উত্‍রাই পেরিয়ে দলটি এখন রাষ্ট্রক্ষমতায়৷ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দুদিনব্যাপি ২০তম জাতীয় কাউন্সিল শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে৷ ঐতিহাসিক সোহরাওয়াদর্ী উদ্যানে এই কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে৷১৯৪৯ সালের ২৩ জুন প্রতিষ্ঠিত এই দলটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে এদেশের গণমানুষের সংগঠনে পরিণত হয়৷আওয়ামী লীগের ইতিহাস থেকে জানা যায়, এদেশের অসামপ্রদায়িক, প্রগতিশীল ও তরুণ মুসলিম লীগ নেতাদের উদ্যোগে ১৯৪৯ সালের ২৩-২৪ জুন পুরনো ঢাকার কেএম দাস লেনের বশির সাহেবের রোজগার্ডেনের বাসভবনে একটি রাজনৈতিক কর্মী সম্মেলনের মাধ্যমে পাকিসত্মানের প্রথম বিরোধী দল পূর্ব পাকিসত্মান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়৷

মুসলিম লীগের প্রগতিশীল নেতা-কর্মীরা সংগঠন থেকে বেরিয়ে গিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন আওয়ামী মুসলিম লীগ৷ প্রথম সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এবং সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক৷ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন প্রথম কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক৷

১৯৬৬ সালের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান৷ পরে তিনি হয়ে ওঠেন বাঙালির একছত্র নেতা, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি ও জাতির জনক৷

৬৯-এর গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে পাকিসত্মানি ঔপনিবেশিক শাসক-শোষক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বাঙালির যে জাগরণ ও বিজয় সূচিত হয়, সেই আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিল আওয়ামী লীগ এবং এই আন্দোলনের পথ ধরেই বাঙালি জাতি স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে৷

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা, ৩ নভেম্বর জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর নেতৃত্ব শুন্যতায় পড়ে আওয়ামী লীগ৷ এর পর দলের মধ্যে ভাঙনও দেখা দেয়৷ ১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন৷ তার নেতৃত্বে দ্বিধা-বিভক্ত আওয়ামী লীগ আবার ঐক্যবদ্ধ হয়৷ তিন দশক ধরে তাঁর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ পরিচালিত হচ্ছে৷ এই সময়ে আন্দোলন-সংগ্রামের পাশাপাশি তিন বার রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে পেরেছে এ দলটি৷আবার ৬৭ বছরের মধ্যে প্রায় ৫০ বছরই আওয়ামী লীগকে থাকতে হয়েছে রাষ্ট্র ক্ষমতার বাইরে৷ বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু সরকারের সাড়ে তিন বছর এবং ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৫ বছর, ২০০৯ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যনত্ম আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনা করছে৷২০০১ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের পর অনেকটা সুসংহত হতে সক্ষম হয়ে জোট সরকারবিরোধী আন্দোলনে সফলতার পরিচয়ও দিয়েছিল দলটি৷ কিন্তু এই আন্দোলনের শেষপর্যায়ে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নিলে আবারো নতুন সংকটের মুখে পড়ে যায় দলটি৷ দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনাসহ প্রথম সারির অসংখ্য নেতারা গ্রেফতার এবং একাংশের সংস্কার তত্‍পরতায় কিছুটা সংকটে পড়ে দলীয় কার্যক্রম৷

তবে সকল প্রতিকুল পরিস্থিতি মোকাবেলা করেই ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও মহাজাট ঐতিহাসিক বিজয় অর্জন করে৷ ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি গঠিত হয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার৷ দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা৷

পরে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিএনপি-জামায়াত জোটের শত প্রতিকুলতাকে মোকাবেলা করে নির্বাচনের বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে এবং তৃতীয় বারের মত প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা৷

নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী ২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধা, দারিদ্র্য মুক্ত, আধুনিক বিজ্ঞান ও তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর সুখী, সমৃদ্ধ ‘ডিজটাল বাংলাদেশ’ গড়াসহ বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করছে এই দলটি৷আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও সাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আওয়ামী লীগ শুধু দেশের পুরনো ও সর্ববৃহত্‍ রাজনৈতিক দলই নয়, এটি হচ্ছে গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িক ভাবাদর্শের মূলধারাও৷ প্রতিষ্ঠাকাল থেকে শুরম্ন করে গত ৬৭ বছর ধরে নানা আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ আমাদের সমাজ-রাজনীতির এ ধারাকে নিরবচ্ছিন্নভাবে এগিয়ে নিচ্ছে৷তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠাকালিন সময় থেকেই এই দলের নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে অসামপ্রদায়িক দেশ হিসাবে গড়ে তোলার কাজ প্রথম শুরম্ন করেন৷ পরবর্তিতে বঙ্গবন্ধুর কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসামপ্রদায়িক দেশ গড়ার লক্ষে কাজ শুরু করেছেন৷

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এ দলটিকে দেশের অন্যতম প্রাচীন সংগঠন হিসাবে আখ্যায়িত করে বলেন, ভাষা, স্বাধিকার, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা অর্জনে মহোত্তম গৌরবে অভিষিক্ত আওয়ামী লীগের সাত দশকের অভিযাত্রায় শানত্মি, সমৃদ্ধি ও দিন বদলের লক্ষ্যে অবিচল বাঙালি জাতির মুক্তির দিশারী৷তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের অর্জন পাকিসত্মান আমলের গণতান্ত্রিক মানুষের অর্জন, এই দলের অর্জন বাংলাদেশের অর্জণ৷ আওয়ামী লীগ কখনো মানুষকে ভ্রানত্ম আশ্বাস দেয় না৷ জাতির জন্য যখন যা প্রয়োজন মনে করেছে, সেটি বাসত্মবায়ন করেছে৷ইতিহাসবিদ, লেখক ও লোক সাহিত্যিক শামসুজ্জামান খান এই দলকে মূল্যায়ন করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ পাকিসত্মান’ নামের অবৈজ্ঞানিক এবং ভৌগোলিক ও নৃতাত্তি্বকভাবে এক উদ্ভট রাষ্ট্রের পূর্ব বাংলার বাঙালি জনগোষ্ঠী ও অন্যান্য ক্ষুদ্র জাতিসত্তাকে অবজ্ঞায়, অবহেলায় ও ঔপনিবেশিক কায়দায় শোষণ-পীড়ন-দমন ও ‘দাবিয়ে রাখা’র বিরম্নদ্ধে লাগাতার প্রতিবাদ, প্রতিরোধ এবং গণসংগ্রামের মধ্যদিয়ে গড়ে ওঠা বিপুল জনপ্রিয় একটি রাজনৈতিক দল৷ এই দলের নেতা-কমর্ীদের ত্যাগ-তিতীক্ষা ও অঙ্গীকারদীপ্ত সংগ্রামী ভূমিকা ইতিহাসবিদিত৷তিনি বলেন, পুরনো ঢাকার ঐতিহ্যবাহী রোজ গার্ডেনে আওয়ামী মুসলিম লীগ নামে এই দলের আত্নপ্রকাশ ঘটলেও পরে শুধু আওয়ামী লীগ নামে অসাম্প্রদায়িক সংগঠন হিসাবে বিকাশ লাভ করে৷প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ দেশে পাকিসত্মানি সামরিক শাসন, জুলুম, অত্যাচার-নির্যাতন ও শোষণের বিরুদ্ধে সকল আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে এ দলটি৷

৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ‘৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, আইয়ুবের সামরিক শাসন-বিরোধী আন্দোলন, ‘৬৪-এর দাঙ্গার পর সামপ্রদায়িক সমপ্রীতি প্রতিষ্ঠা, ‘৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন ও ‘৬৯-এর গণঅভু্যত্থানের পথ বেয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ২৪ বছরের আপোষহীন সংগ্রাম-লড়াই এবং ১৯৭১ সালের নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ তথা সশস্ত্র জনযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে৷ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ানত্ম বিজয় অর্জনের মধ্যদিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় বাঙালির হাজার বছরের লালিত স্বপ্নের ফসল স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ৷

দীর্ঘ একুশ বছর লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে দলের সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জয়ী হয়ে ২৩ জুন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরে আসে৷ ২০০১ এবং ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির পর আর এক দফা বিপর্যয় কাটিয়ে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে তিন-চতুর্থাংশ আসনে বিজয়ী হয়ে আবারো রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায় এই দলটি৷ পরবর্তিতে ২০১৪ সালের ৫ জানুযারীর সাধারন নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আবারও সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ৷

দল হিসাবে যে অর্জন আওয়ামী লীগের একই ভাবে অনেক প্রতিকূলতা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে, এই ৭ বছর ৯ মাসে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারও সবক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করে চলেছে বলে তারা মনে করেন৷

এমিরেটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান আওয়ামী লীগ সরকারের এই ৭ বছর ৯ মাসের কর্মকান্ড নিয়ে বলেন, ১৯৭২-৭৩ সালে বিশ্বে যারা বাংলাদেশকে তলাবিহিন ঝুড়ি বলে অপপ্রচার করেছিল, তারা এখন বাংলাদেশের সাফল্যকে বিস্ময়কর বলে অভিহিত করছে৷ অনেক চাপ উপেক্ষা করে শহীদদের উত্তরাধিকারদের ন্যায় বিচার প্রদান করা হয়েছে, উন্নয়নের গতিধারা আরো বেগবান হয়েছে৷

মৌলবাদের উত্থান রোধ, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও শক্তিশালী, স্থানীয় সরকারকে আরও কার্যকর এবং শক্তিশালী জাতি গঠনে একমুখি শিক্ষা ব্যবস্থা কায়েম করার আহ্বান জানিয়ে তিনি নানামুখি প্রতিকূলতা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সবক্ষেত্রে ক্রমাগত সফলতা অর্জনের মাধ্যমে সফলভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সি প্রশংসা করেন৷

পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য সামসূল আলম বলেন, ২০০৮ সালে উন্নয়ন বাজেট ছিল ২৪ হাজার কোটি টাকা এখন এর পরিমাণ ৯৫০০০ কোটি টাকা৷ গত ৭ বছরে ১ কোটি ৩৩ লক্ষ মানুষের নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে, বিদেশী উন্নয়ন সহয়তা তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে৷ নতুন করে এক সাথে ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করে সরকার বিশ্ব রেকর্ড সৃষ্টি করেছে৷

অধ্যাপক একে আজাদ চৌধুরী বিভিন্ন পরিসংখ্যান উল্লেখ করে বলেন, শেখ হাসিনা বিগত ৭ বছরে এতো বিশাল সফলতা অর্জন করেছেন যা বিরল ও অভূতপূর্ব৷ জিডিপির হার ৫.৪ শতাংশ থেকে ৬.৭ শতাংশের ওপরে ছিল৷ বিভিন্ন আনত্মর্জাতিক সমিক্ষায় বলা হচ্ছে, আগামীতে শীর্ষ ১১ অর্থনীতিক শক্তিশালী দেশগুরোর অন্যতম হবে বাংলাদেশ৷তিনি বলেন, প্রবৃদ্ধি সৰমতায় চীনকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে৷ একটি বাড়ী একটি খামার ও আশ্রায়ণ প্রকল্পে এক কোটি অতি দরিদ্র মানুষকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে৷ মাতৃ ও শিশু মৃতু্যর হার কমে এসেছে৷ সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়৷ দেশের মানুষের গড় আয়ু ৭১ বছরে উন্নীত হয়েছে৷

প্রাথমিক শিক্ষায় ভর্তির প্রায় শতভাগ৷ ড্রপ আউট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪০ শতাংশ থেকে ১৯.৫০ শতাংশে নেমে এসেছে৷ বিদু্যত্‍ উত্‍পাদন সৰমতা ১৪০০০ মেগাওয়াট৷ দেশের ৭৪ শতাংশ মানুষ, বিদু্যত্‍ ব্যবহারের আওতায় এসেছে৷ সরকার এ পর্যনত্ম বিনামূল্যে ১শ ৯৫ কোটি বই বিতরণ করেছে৷ নারী জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ কর্মৰেত্রে নিয়োজিত, দেশে বছরে ৩৮.৪০ মিলিয়ন টন খাদ্য উত্‍পাদন করে পৃথিবীর ৪র্থ শীর্ষ খাদ্য উত্‍পাদনকারী দেশে পরিণত হয়েছে৷ মাথাপিছু আয় সাত বছর আগে ছিল ৪২৭ ডলার এখন এটা ১৪০০ ডলারে উপনীত হয়েছে৷ সাৰরতার হার ৭৫ শতাংশ হয়েছে বলে তিনি বলেন৷তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যায়ে ৬ লাখ শিক্ষার্থীর স্থানে এখন শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩১ লাখ৷ নিজের টাকায় চলমান পদ্মাসেতু নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পথে৷ মেট্রোরেল নির্মাণ হচ্ছে৷বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. বিনায়ক সেন বলেন, অনেক সময় কোন সংকট মানুষকে নতুন সফলতার দিশা দেয়৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তেমনি করে জাতিকে সফলতার নতুন পথ দেখিয়েছেন, দেশের টাকায় পদ্মাসেতু নির্মাণ শুরু করার সুবাদে বাংলাদেশের মর্যাদা আনত্মর্জাতিকভাবে সৃষ্টি করেছে এবং আমরা মর্যাদাশীল জাতিতে রূপানত্মরিত হয়েছি৷বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন দল আওয়ামী লীগ৷ এদেশের যত অর্জন, আন্দোলন সংগ্রাম আর ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে জড়িয়ে আছে দলটির নাম৷ অসামপ্রদায়িক আর সাধারণ, খেটে খাওয়া মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে যুগে যুগে বহু নেতা তৈরি হয়েছেন এই দলে৷ তৃণমূল পর্যায় থেকে উঠে আসা এসব নেতাকে ধীরে ধীরে দল পরিচালনায় অনত্মভর্ুক্ত করে সফল হয়েছে আওয়ামী লীগও৷

প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যনত্ম ১৯টি জাতীয় সম্মেলন হয়েছে আওয়ামী লীগের৷ এই সম্মেলনে দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে কার্যনির্বাহী কমিটি পর্যনত্ম নির্বাচিত হয়েছেন শত শত নেতা৷ তবে এখন পর্যনত্ম সভাপতি হয়েছেন সাতজন৷ এর মধ্যে বর্তমান সভাপতি শেখ হাসিনা সর্বোচ্চ সাতবার, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী তিনবার করে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন৷ এছাড়া আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ দুইবার এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও আবদুল মালেক উকিল একবার করে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন৷ আর সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দিন একবার নির্বাচিত হয়েছেন দলের আহ্বায়ক৷এখন পর্যনত্ম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ৯ জন৷ সবচেয়ে বেশি চারবার করে হয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জিল্লুর রহমান৷ এছাড়া তাজউদ্দিন আহমেদ তিনবার, আবদুর রাজ্জাক ও সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী দুইবার করে, প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক এবং আবদুল জলিল একবার করে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন৷

১৯৪৯ সালের ২৩ ও ২৪ জুন পুরান ঢাকার রোজ গার্ডেনে গণতান্ত্রিক কর্মী সম্মেলনের মাধ্যমে জন্ম নেয় পূর্ব পাকিনত্মান আওয়ামী মুসলিম লীগ৷ পরে ১৯৫৫ সালের তৃতীয় জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে সব ধর্ম, বর্ণের প্রতিনিধি হিসেবে দলের নাম থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দেয় আওয়ামী লীগ৷শুরু থেকেই মাঠ পর্যায় থেকে উঠে আসা নেতারা নেতৃত্ব দিয়েছেন দলটিকে৷ প্রভাবশালী বা অভিজাত হিসেবে পরিচিতরা সেভাবে আসেনি এই দলে৷ প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যনত্ম দলটির ১৯টি নিয়মিত জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়, যার মাধ্যমে দলটিতে আসেন নতুন মুখ৷

পাকিসত্মান আমল :আতাউর রহমান খানের সভাপতিত্বে প্রথম জাতীয় সম্মেলনে প্রতিনিধি ছিল প্রায় ৩০০ জন৷ উদ্বোধনী ভাষণ দেন মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী৷ পরে প্রতিনিধিদের সমর্থনে ৪০ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়৷ এই সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন মাওলানা ভাসানী, সাধারণ সম্পাদক হন শামসুল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন শেখ মুজিবুর রহমান৷১৯৫৩ সালের ৩ থেকে ৫ জুলাই মুকুল সিনেমা হলে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় সম্মেলন৷ এই সম্মেলনেও সভাপতি নির্বাচিত হন মাওলানা ভাসানী৷ আর দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদটি পান শেখ মুজিবুর রহমান৷

১৯৫৫ সালের ২১ থেকে ২৩ অক্টোবর রূপমহল সিনেমা হলে তৃতীয় সম্মেলনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধানত্ম হয় দলের৷ দলের নাম থেকে একটি ধর্মের নাম বাদ দিয়ে অসামপ্রদায়িক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে আওয়ামী লীগের৷ এ সম্মেলনে প্রথমকবারের মত পাঁচজন নারীও অংশ নেন৷ এ সম্মেলন পুনরায় নির্বাচিত হন মাওলানা ভাসানী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান৷

১৯৫৭ সালে চতুর্থ সম্মেলনের আগে দলের মধ্যে বিভক্তির পর আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করেন মাওলানা ভাসানী৷ ১৩ জুন আরমানিটোলার নিউ পিচকার হাউজে এবং পরদিন গুলিসত্মান সিমেনা হলে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রতিনিধি ছিল আটশত জন৷ এ প্রতিনিধিদের ভোটে মাওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং শেখ মুজিবুর রহমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন৷দলের পঞ্চম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৬৪ সালে৷ ৬ মার্চ থেকে ৮ মার্চ পর্যনত্ম অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে কাউন্সিলর ও ডেলিগেট ছিল প্রায় এক হাজার৷ এতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হন মাওলানা তর্কবাগীশ ও শেখ মুজিবুর রহমান৷

১৯৬৬ সালের ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলনটি ছিল আওয়ামী লীগের জন্য ঐতিহাসিক একটি সম্মেলন৷ এ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর ছয়দফা দলীয় ফোরামে পাস হয়৷ ১৮ থেকে ২০ মার্চ হোটেল ইডেনে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনের মাধ্যমে দলের সভাপতি নির্বাচিত হন শেখ মুজিবুর রহমান৷ আর প্রথমবারের মতো সাধারণ সম্পাদক হন তাজউদ্দীন আহমেদ৷ এতে কাউন্সিলর ও ডেলিগেটের সংখ্যা ছিল এক হাজার ৪৪৩ জন৷

১৯৬৮ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় কারাগারে আটক তখন অনুষ্ঠিত হয় দলের সপ্তম জাতীয় সম্মেলন৷ ১৯ থেকে ২০ অক্টোবর হোটেল ইডেন প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম৷ প্রায় এক হাজার চারশত ৫৩ জন কাউন্সিলর ও ডেলিগেট এতে অংশ নেন৷ এতে আবার শেখ মুজিবুর রহমান সভাপতি ও তাজউদ্দীন আহমেদ সাধারণ সম্পাদক পুনঃনির্বাচিত হন৷

১৯৭০ সালের উত্তাল সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয় আওয়ামী লীগের অষ্টম জাতীয় সম্মেলন৷ এ সম্মেলনের মাধ্যমে ছয় দফা ও ১১ দফা গ্রহণ করে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিকভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রস্তুতি নেয়৷ ৭০ সালের ৪ থেকে ৫ জুন হোটেল ইডেন প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে কাউন্সিলর ছিল এক হাজার ১৩৮ জন৷ কাউন্সিলরদের ভোটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সভাপতি ও তাজউদ্দীন আহমেদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন৷স্বাধীন বাংলাদেশে সম্মেলন :১৯৭২ সালের ৭ থেকে ৮ এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের প্রথম এবং সব মিলিয়ে নবম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ১১২, সার্কিট হাউজ রোডে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে৷ যুদ্ধবিধ্বসত্ম দেশের পুনর্গঠন এবং পুনর্বাসনসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাসত্মবায়নের জন্য শপথ নিয়ে এ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়৷ এ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সভাপতি ও জিল্লুর রহমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন৷

আওয়ামী লীগের ১০ম জাতীয় সম্মেলন ১১২ সার্কিট হাউজ রোডে দলীয় কার্যালয়ে সামনে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠিত হয় ১৯৭৪ সালের ১৮ জানুয়ারি থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যনত্ম৷ সম্মেলনের মাধ্যমে তত্‍কালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করেন৷ এতে এ এইচ এম কামরুজ্জামান সভাপতি ও তাজউদ্দীন আহমেদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন৷

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারের নিহত হওয়ায় তত্‍কালীন সামরিক সরকারের ভয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা ঘরছাড়া হয়৷ এতে নেতৃত্ব শূন্য হয় দলটি৷ এমন একটি পরিস্থিতিতে ১৯৭৭ সালের ৩ থেকে ৪ এপ্রিল হোটেল ইডেন প্রাঙ্গণে দলের ১১তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়৷ এতে কাউন্সিলর ছিলেন প্রায় এক হাজার ৪০০ জন এবং ডেলিগেটও সমসংখ্যক ছিল৷ এতে দলের আহ্বায়ক নির্বাচিত হন সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দিন৷

এর পরের বছর ১৯৭৮ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত হয় দলটির ১২ তম জাতীয় সম্মেলন৷ ৩ থেকে ৫ মার্চ হোটেল ইডেন প্রাঙ্গণে প্রায় এক হাজার ৫০০ কাউন্সিলর এবং সমসংখ্যক ডেলিগেট নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় এ সম্মেলনটি৷ এতে সভাপতি নির্বাচিত হন আবদুল মালেক এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন আবদুর রাজ্জাক৷

শেখ হাসিনা যুগ :১৯৮১ সালের ১৩ তম জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা৷ দলীয় ঐক্যধরে রাখার জন্য এ সম্মেলনের মাধ্যমে নেতৃত্বে আনা হয় বঙ্গবন্ধু কন্যাকে৷ ৮১ সালের ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে কাউন্সিলর ও ডেলিগেট ছিল তিন হাজার ৮৮৪ জন৷ সভায় শেখ হাসিনা সভাপতি ও আব্দুর রাজ্জাক সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন৷ পরে ১৯৮২ সালে আব্দুর রাজ্জাক দলত্যাগ করলে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী৷ দলের নেতৃত্ব পাওয়ার পর দেশে ফেরেন বঙ্গবন্ধু কন্যা৷

১৯৮৭ সালের ১ থেকে ৩ জানুয়ারি পর্যনত্ম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত হয় আওয়ামী লীগের ১৪ তম জাতীয় সম্মেলন৷ এতে কাউন্সিলর ও ডেলিগেট ছিল প্রায় চার হাজার৷ সম্মেলনে শেখ হাসিনা সভাপতি ও সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন৷এরপর ১৯৯২ সালের ১৯ থেকে ২০ সেপ্টেম্বর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে দলের ১৫তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়৷ এ সম্মেলনে কার্যনির্বাহী কমিটির মেয়াদ দুই থেকে বাড়িয়ে তিন বছর মেয়াদী করা হয়৷ এতে কাউন্সিলর ছিল প্রায় দুই হাজার ৫০০ ও ডেলিগেটও ছিল সম সংখ্যক৷ এতে শেখ হাসিনা সভাপতি ও জিল্লুর রহমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন৷

১৯৯৭ সালের অনুষ্ঠিত ১৬ তম জাতীয় সম্মেলন আওয়ামী লীগের জন্য বিশেষ গুরম্নত্বের৷ কারণ প্রায় ২১ বছর পর ক্ষমতায় আসার পর অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় সম্মেলন৷ ৬ থেকে ৭ মে আউটার স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে কাউন্সিলর ছিল দুই হাজার ৫১৬ এবং ডেলিগেটও ছিল সমসংখ্যক৷ এতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পুনঃনির্বাচিত হন শেখ হাসিনা ও জিল্লুর রহমান৷

২০০২ সালে আওয়ামী লীগ যখন বিরোধী দলে তখন পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় দলের ১৭ তম জাতীয় সম্মেলন৷ এ সম্মেলনে সভাপতি শেখ হাসিনা এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন আব্দুল জলিল৷

২০০৭ সালের পটপরিবর্তনের পর ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসে দলটি৷ এরপর ২০০৯ সালের ২৪ জুলাই অনুষ্ঠিত হয় দলটির ১৮তম জাতীয় সম্মেলন৷ বঙ্গবন্ধু আনত্মর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে দলের নেতৃত্বে বেশকিছু পরিবর্তন হয়৷ দল থেকে বাদ পড়েন এক এগারো সময়ের বিতর্কিতরা৷ এ সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম৷২০১২ সালে ২৯ ডিসেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয় দলটির ১৯তম জাতীয় সম্মেলন৷ সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পুনর্নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা ও সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম৷