রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী জন্ম নিয়েছে। সশস্ত্র বাহিনী আমাদের জনগণের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। বন্যা, জলোচ্ছাস, ঘূর্ণিঝড়ের মতো জাতীয় দুর্যোগে সশস্ত্র বাহিনী সবসময় সাধারণ মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। তিনি বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাসস্থ ৬ষ্ঠ অর্ডন্যান্স কোর পুনর্মিলনী উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, অর্ডন্যান্স কোর সেনাবাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে অর্ডন্যান্স কোর জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। উপসাগরীয় যুদ্ধের পর বিধ্বস্ত কুয়েতের নিরাপত্তায় বিশেষতঃ মাইন, ঝুঁকিপূর্ণ গোলাবারুদ ও বিষ্ফোরক অপসারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অর্ডন্যান্স কোরের সদস্যরা অসামান্য সাহস ও দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে।

এর আগে রাষ্ট্রপতি বেলা ১২টার দিকে গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাসের শহীদ মেজর হাসিব প্যারেড স্কয়ারে এসে পৌঁছালে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক তাকে স্বাগত জানান। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিক (অবঃ), নৌবাহিনীর প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট রহমত আলী, জাহিদ আহসান রাসেল, সিমিন হোসেন রিমি, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এসএম মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম আলম, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ হারুন অর রশীদ, জেলা পরিষদের প্রশাসক আখতারউজ্জামান, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ, গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সাবেক এমপি কাজী মোজাম্মেল হক, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ প্রমুখ।

রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অংশ হিসেবে অর্ডন্যান্স কোরের সদস্যরা বিভিন্ন যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে দেশ ও জাতির জন্য সম্মান বয়ে এনেছে। বাংলাদেশ সমরাস্ত্র কারখানা ও বাংলাদেশ মেশিন টুলস্ ফ্যাক্টরীর উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও অর্ডন্যান্স কোরের সদস্যদের রয়েছে উল্লেখ্যযোগ্য অবদান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে অর্ডন্যান্স কোরের অনন্যসাধারণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালে অর্ডন্যান্স সেন্টার এন্ড স্কুলকে জাতীয় পতাকা প্রদান করেন। দেশ ও জাতির সার্বিক উন্নয়নে এবং সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে জাতির পিতা প্রণীত প্রতিরক্ষানীতির বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেন। বর্তমান সরকারের ‘রূপকল্প ২০১০’ এর আলোকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ফোর্সেস গোল ২০৩০ চুড়ান্তকরণ ও পর্যায়ক্রমে বাস্বতবায়নের প্রক্রিয়া চলছে। ক্রমান্বয়ে ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ এর সার্বিক বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি পরিপূর্ণ আধুনিক, কার্যকর ও যুগোপযোগী বাহিনীতে রূপান্তরিত হবে বলে আমার বিশ্বাস।

রাষ্ট্রপতি বলেন, অর্ডন্যান্স কোরের সামগ্রিক সাংগঠনিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন সেনাবাহিনীর অগ্রযাত্রাকে করেছে আরো শাণিত। দুটি নতুন ডিভিশন অর্ডন্যান্স কোম্পানী গঠনের পাশাপাশি নতুন অর্ডন্যান্স ডিপো এবং স্বতন্ত্র গোলাবারুদ পাল্টুন প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া, সিএডিতে আধুনিক ও যুগোপযোগী অ্যামিউনিশন ল্যাবরেটরি স্থাপন, জনবল বৃদ্ধির উদ্যোগ, বৈদেশিক মিশন ও প্রশিক্ষণের সুযোগদান এবং সর্বোপরী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সমর সম্ভারে সমৃদ্ধি অর্ডন্যান্স কোরের কর্মকান্ডকে করেছে আরো গতিময়।

তিনি আশাপ্রকাশ করে বলেন, নেতৃত্বের প্রতি পরিপূর্ণ অনুগত থেকে এ কোরের সদস্যগণ কোরের উন্নতির ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে ভবিষ্যতে বাংলেেদশ সেনাবাহিনী ও দেশের সার্বিক উন্নয়নে অনন্যসাধারণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। পরে রাষ্ট্রপতি অর্ডন্যান্স কোরের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে কেক কাটেন এবং প্রীতিভোজে অংশগ্রহন করেন।

মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর।