খতিয়ান নং ৩২৯। জে এল নং-৩২। মৌজা ধুলাসার। মালিকের নাম হাফেজ শিকদার। এসপিএইচ কেস নম্বর ৩২/৭-কে/৫৭-৫৮। মিস কেস নম্বর ১৭২-কে/৬৭-৬৮। ২৬৫১ নম্বর একটি দাগে মোট জমির পরিমান সাত একর। ২০০৯ সালের সই মোহর পর্চায় এভাবে উল্লেখ রয়েছে। আবার মালিকের নাম ও খতিয়ান নম্বর ঠিক রেখে অপর একটি সই মোহর পর্চায় এসপিএইচ কেস নম্বর ৩২/৭-কে/৪৭-৪৮। মিস কেস নম্বর ১৭২-কে/৩৭-৩৮। কেস নম্বর ঠিক রেখে সনের নাম পাল্টে দেয়া হয়েছে। ২৬৫১ দাগের জমির পরিমাণ ঠিক রেখে নতুন একটি দাগ ২২৪৭ লিখে জমির পরিমান আরও ১০ একর বাড়িয়ে ওই খতিয়ানের জমির পরিমাণ দেখানো হয়েছে ১৭ একর।

এ জমি বিক্রির জন্য আমমোক্তার নামা দেখানো হয়েছে মাওলানা হাবিবুর রহমানের নামে। এ জমি কিনে নির্বিঘেœ বসবাস করে আসছেন দরিদ্র কৃষক নুর মোহাম্মদ চাকলাদারসহ অন্তত ১৫টি পরিবার। তারা ২১ কে/৮০-৮১, ৬ কে/৭৮-৭৯, ১৪ কে/৫৬-৫৭, ৩০ কে/৪৯-৫০, ১৬১ কে/৬৬-৬৭ এবং ৬১৮ কে/৫৯-৬০ কেসের মাধ্যমে ২৩ একর ৮৩ শতক জমি বন্দোবস্ত প্রাপ্তদের কাছ থেকে ক্রয় করে মালিকসুত্রে নির্বিঘেœ বসবাস করে আসছিলেন। নামজারিসহ সকল কাগজপত্র এদের ঠিকঠাক রয়েছে। নুর মোহাম্মদের অভিযোগ আনুমানিক কলাপাড়া ভুমি অফিসে কর্মরত থাকাকালে সার্ভেয়ার আব্দুল হক একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সহায়তায় বাউফলের রায়তা তেরকাঠি গ্রামের জোনাব আলী আকনের ছেলে ছাবের আকন ২৫২ কে/৬৭-৬৮ নং বন্দোবস্ত কেস দেখিয়ে ২২৪৭ দাগের তিন একর জমি, যার খতিয়ান দেখানো হয়েছে ৩৫৮।

বাকেরগঞ্জ উপজেলার বাহেরচর গ্রামের আঃ করিম হাওলাদারের ছেলে সুলতান আহম্মেদ ২৫১ কে/ ৬৭-৬৮ নং বন্দোবস্ত কেসের মাধ্যমে একই দাগের তিন একর যার খতিয়ান দেখানো হয়েছে ৩৮৮। এভাবে আলাউদ্দিনের নামে ৩৫৩ কে/৬৭-৬৮ নং বন্দোবস্ত কেসের মাধ্যমে একই দাগের তিন একর। যার খতিয়ান নম্বর- ৪৭৩। হাসেম আলীর নামে ২৫৪ কে/৬৭-৬৮ নং বন্দোবস্ত কেসের মাধ্যমে তিন একর, যার খতিয়ান নম্বর ৪৭২। এভাবে মোট ১৫ একর জমির পাঁচটি বন্দোবস্ত কেস কাগজপত্রে দেখিয়ে ভুয়া খতিয়ান বানানো হয়েছে বলে নুর মোহাম্মদ চাকলাদার দাবি করেন। এসব জমি পায়রা বন্দরের উন্নয়নের জন্য অধিগ্রহনের আওতায় নেয়া হলে নুর মোহাম্মদ গং সকল কাগজপত্র পটুয়াখালী এলএ শাখায় সাবমিট করেছেন। একই সময় ওই চক্রটিও মালিকানা দাবি করেছেন। ফলে সৃষ্ট জটিলতায় এখন অন্তত ৩০টি দরিদ্র পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। মোঃ রফিক সিকদার জানান, তারা বিএস রেকর্ডের কাগজপত্রও দাখিল করেছেন। শুধুমাত্র ভূমি অফিসের এক সার্ভেয়ারের যোগসাজশে তাদের এমন প্রায় ২৫ একর জমির মালিকদের সর্বনাশ করা হয়েছে। এখন এসব দরিদ্র কৃষক পরিবারের সদস্যরা দুচোখে অন্ধকার দেখছেন। তোফাজ্জেল হোসেন জানান, তারা এজমি কিনে বহু আগে বসতবাড়ি করেছেন। বিল্ডিং করা আছে। এখন জাল কাগজে মালিকানা দাবি করে একটি চক্র হয়রানি চালাচ্ছে। তারা জড়িত চক্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। অভিযুক্ত সার্ভেয়ার আব্দুল হক জানান, তিনি বর্তমানে গলাচিপায় কর্মরত রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সমাপুর্ণ মিথ্যা। কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিপুল চন্দ্র দাস জানান, বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে হবে।