বাংলাদেশে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডকে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় হিসেবে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র। আর এর পেছনে সরকারের মদদ রয়েছে বলে ইঙ্গিত করেছে দেশটি।শুক্রবার প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে গত ২০১৬ সালের বৈশ্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।২০১৬ সালের বৈশ্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের বিষয়টিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।শুক্রবার প্রকাশিত এই প্রতিবেদনের শুরুতেই বলা হয়েছে, অসাম্প্রদায়িক, বহু মতের সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশ বাংলাদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর উপর বেসামরিক প্রশাসনের ‘কার্যকর নিয়ন্ত্রণ’ রয়েছে।এরপর জঙ্গিবাদ নিয়ে আলোচনার পরপরই বলা হয়েছে, বাংলাদেশে মানবাধিকারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড।এছাড়া অবৈধভাবে আটক, সরকারি বাহিনীর হাতে গুম, জঙ্গিদের মাধ্যমে হত্যাকান্ড, বাল্য বিয়ে, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা,শ্রমিকদের জন্য অনিরাপদ কর্মপরিবেশের বিষয়টি নিয়েও উদ্বেগজনক বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র।জঙ্গি দমনের ক্ষেত্রে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড ঘটছে বলে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগের কথা বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।
বাংলাদেশের বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড নিয়ে দেশ-বিদেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলো সরব হলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল দুদিন আগেই বলেছিলেন, দেশে কোনো বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড ঘটছে না।এই ধরনের কোনো অভিযোগ এলে সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করলেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক্ষেত্রে সরকারের পদক্ষেপ খুবই সীমিত।এসব ঘটনার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বাহিনীকে দায় মুক্তি দেওয়া হচ্ছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষণ।নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনাগুলোর তদন্ত ও দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে সরকারের পদক্ষেপ সীমিত।পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর আস্থাহীনতার কারণে জনগণ অনেক সময়েই তাদের শরণাপন্ন হয় না বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় সরকারের পক্ষ থেকে ‘ভিকটিমদের’ দায়ী করে সরকারের বক্তব্যের সমালোচনাও করা হয়েছে, যা প্রকারান্তরে নিরাপত্তা বাহিনীকে দায়মুক্ত করছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি।বাংলাদেশের বিচার বিভাগের দুর্বলতা এবং বিচার ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে আটকের বিষয়টিও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অন্তরায় হিসেবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র।রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সহিংসতার কথাও বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।এছাড়া অনলাইনে মত প্রকাশ এবং এনজিওগুলার কাজে নিয়ন্ত্রণ আরোপকেও দেখানো হয়েছে মানবাধিকারের ক্ষেত্রে অন্তরায় হিসেবে।
গুলশান হামলাসহ বিভিন্ন হত্যাকান্ডে জড়িতদের সঙ্গে আইএস-আল কায়েদার মতো আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর যোগাযোগ রয়েছে বলে মনে করে যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৬ সালের বৈশ্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার প্রকাশিত মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্ষিক প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করা হয়েছে।বার্ষিক প্রতিবেদন বলা হয়, গুলশান হামলাসহ বাংলাদেশে বিভিন্ন হত্যাকান্ডে জড়িতদের সঙ্গে আইএস, আল-কায়েদার মতো আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর যোগাযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে জঙ্গি সংগঠনগুলোর তৎপরতা বেড়েছে যারা নিজেদেরকে আইএস ও আল-কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখার সহযোগী বলে দাবি করে।প্রতিবেদনে বলা হয়, গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিলেন বিদেশিরা; এর আগে হত্যাকা-ের শিকার হন ব্লগার, লেখক, অধ্যাপক, ভিন্ন মতাবলম্বী মুসলিম, হিন্দু পুরোহিত, খ্রিস্টান ধর্মযাজক, সমকামী অধিকারকর্মীরা।গত বছরের গুলশান হামলাসহ এর আগে-পরে অনেকগুলো হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে কখনও আইএস, কখনো আল-কায়েদার নামে বার্তা এসেছিল। তবে বাংলাদেশ সরকার ওইসব বার্তা আমলে না নিয়ে বরাবরই বলে আসছে দেশি জঙ্গিরাই এসব সন্ত্রাসী হামলা ও হত্যাকান্ড ঘটিয়ে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীগুলোর নাম ভাঙাচ্ছে।প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে গুম, অবৈধভাবে আটকের সমালোচনা করা হলেও নিরাপত্তা বাহিনীর উপর বেসামরিক প্রশাসনের কর্তৃত্ব অক্ষুন্ন। আর এর পেছনে সরকারের মদদ রয়েছে বলে ইঙ্গিত করেছে দেশটি।প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা হয়েছে, অসাম্প্রদায়িক, বহুত্ববাদী ও সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশ বাংলাদেশ। ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় আরোহন করে, যদিও বেশির ভাগ আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক ওই নির্বাচনকে বিতর্কিত আখ্যা দিয়ে এটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নয় বলে উল্লেখ করেছে।প্রকাশিত এ প্রতিবেদনের শুরুতেই বলা হয়েছে, অসাম্প্রদায়িক, বহু মতের সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশ বাংলাদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর উপর বেসামরিক প্রশাসনের ‘কার্যকর নিয়ন্ত্রণ’ রয়েছে।

এরপর জঙ্গিবাদ নিয়ে আলোচনার পরপরই উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে মানবাধিকারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল বিচার বহির্ভূত হত্যাকা-। এছাড়া অবৈধভাবে আটক, সরকারি বাহিনীর হাতে গুম, জঙ্গিদের মাধ্যমে হত্যাকান্ড, বাল্য বিয়ে, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা, শ্রমিকদের জন্য অনিরাপদ কর্মপরিবেশের বিষয়টি নিয়েও উদ্বেগজনক বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র।জঙ্গি দমনের ক্ষেত্রে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড ঘটছে বলে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগের কথা বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক্ষেত্রে সরকারের পদক্ষেপ খুবই সীমিত। বন্দুকযুদ্ধের মতো ঘটনাগুলোকে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড হিসেবেই দেখছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষণে এসব ঘটনার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বাহিনীকে দায় মুক্তি দেয়া হচ্ছে। নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনাগুলোর তদন্ত ও দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে সরকারের পদক্ষেপ সীমিত।প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর আস্থাহীনতার কারণে জনগণ অনেক সময়েই তাদের শরণাপন্ন হয় না। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় সরকারের পক্ষ থেকে ‘ভিকটিমদের’ দায়ী করে সরকারের বক্তব্যের সমালোচনাও করা হয়েছে, যা প্রকারান্তরে নিরাপত্তা বাহিনীকে দায়মুক্ত করছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি।বাংলাদেশের বিচার বিভাগের দুর্বলতা এবং বিচার ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে আটকের বিষয়টিও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অন্তরায় হিসেবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সহিংসতার কথাও বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।এছাড়া অনলাইনে মত প্রকাশ এবং এনজিওগুলার কাজে নিয়ন্ত্রণ আরোপকেও দেখানো হয়েছে মানবাধিকারের ক্ষেত্রে অন্তরায় হিসেবে।