গাজীপুরে পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে গার্মেন্টস কর্মীকে হত্যার দায়ে এক যুবকের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ-ের আদেশ দিয়েছেন আদালত। রায়ে একই সঙ্গে দ-প্রাপ্ত আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক মাসের সশ্রম কারাদ- দেয়া হয়েছে। বুধবার দুপুরে গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ এ.কে.এম এনামুল হক এ রায় ঘোষণা করেন।

দন্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম মোঃ ফরহাদ হোসেন ওরফে মারুফ (৩০)। সে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের বারবৈকা এলাকার মৃত নান্নু মিয়ার ছেলে। রায় ঘোষণাকালে আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

গাজীপুর জজ আদালতের পরিদর্শক মোঃ রবিউল ইসলাম জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের বারবৈকা এলাকার মৃত মুক্তিযোদ্ধা নূরুল হক ভূইয়ার ছেলে মোঃ নিরু মিয়া ওরফে বিজয় নগপাড়া এলাকায় গার্মেন্টসে কাজ করতো। বিজয়ের কাছ থেকে একই এলাকার মারুফ স্ট্যাম্পের মাধ্যমে কয়েকদিনের জন্য ৫০হাজার টাকা ধার নেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে ওই টাকা পরিশোধ না করায় বিজয় ওই টাকার জন্য মারুফকে একাধিকবার তাগাদা দেন। এনিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। বার বার টাকার জন্য তাগাদা দেয়ায় মারুফ ক্ষিপ্ত হয়ে বিজয়কে বিভিন্ন সময় হত্যার হুমকি দেয়। ঘটনাটি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানান বিজয়। এক পর্যায়ে ২০১২ সালের ১০মে মারুফ তার ভাই সোহরাব (২৮) ও বোন শাহনাজ (৩৫) কে সঙ্গে নিয়ে নিরুদের বাড়িতে যায় এবং স্ট্যাম্পটি ফেরত দিয়ে পাওনা টাকা আনার জন্য তাদের সঙ্গে (আসামিদের) বাসায় যেতে বলেন। এসময় নিরু স্ট্যাম্প নিয়ে আসামিদের সঙ্গে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। এর তিনদিন পর ১৩ মে স্থানীয় মো. কফিল উদ্দিনের বাসার পশ্চিমের একটি ডোবা থেকে নিরু মিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের মা নিলুফা বেগম বাদি হয়ে জয়দেবপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জয়দেবপুর থানার এআই এসএম কামরুজ্জামান তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ওই তিন জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। আদালত ১১জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ ও শুনানী শেষে বুধবার আসামি ফরহাদ হোসেন ওরফে মারুফকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ- ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক মাসের সশ্রম কারাদ- দেন। তবে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার অপর দুই আসামি সোহরাব ও শাহনাজকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।

রাষ্ট্র পক্ষে পিপি অ্যাডভোকেট হারিছ উদ্দিন আহমদ ও আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট ড. শহিদউজ্জামান ও অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন।