সিরিয়ায় নিহত জঙ্গি সুজনের কোম্পানিকে ব্যবহার করেই স্পেনের বার্সেলোনার সাম্প্রতিক হামলার আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা সংগ্রহ করা হয়েছে। মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআই-এর গোপন নথিকে উদ্ধৃত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার রবিবারের (সানডে টাইমস) এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। এফবিআই-এর ধারণা অনুযায়ী, হামলার নজরদারি প্রযুক্তিও ওই কোম্পানিকে ব্যবহার করেই স্পেনে পাঠানো হয়েছিল।  ফেডারেল আদালতে এফবিআইয়ের দেওয়া একই নথির বরাত দিয়ে ক’দিন আগে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছিল, আইব্যাকস নামের নিজস্ব প্রযুক্তি কোম্পানির মাধ্যমে জনপ্রিয় অনলাইন শপিং সাইট ই-বেতে কম্পিউটারের প্রিন্টার বিক্রির নাটক সাজাতো সিরিয়ায় নিহত বাংলাদেশি জঙ্গি সুজন। আর পেপাল অ্যাকাউন্টে ওই প্রিন্টারের দাম বিনিময় হতো। আসলে প্রিন্টার বিক্রির আড়ালে ব্রিটেন থেকে জঙ্গি অর্থায়নের টাকা সংগ্রহ করত সে, যে টাকা এসেছে বাংলাদেশেও।

এবার টাইমস অব ইন্ডিয়ার রবিবারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইএস ব্রিটিশ কোম্পানির নাম ব্যবহার করে স্পেনে নজরদারির জন্য ড্রোনসহ বিভিন্ন নজরদারি সামগ্রী পাঠিয়েছিল। প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশটিতে রকেট হামলার জন্যও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ওয়েলসের কার্ডিফ দিয়ে স্পেনে পাঠানো হয়। টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী ‘বাগ সুইপ ইউনিটস’ এবং রকেট উৎক্ষেপণে ব্যবহৃত সফটওয়্যার এর অর্ডারসহ অন্য ক্রয়কৃত পণ্য ওয়েলসের কারডিফ রুট হয়ে আনা নেওয়া করা হতো।

মাদ্রিদে যে ব্রিটিশ কোম্পানিগুলো নজরদারি ব্যবস্থা সরবরাহ করেছিলো তার মধ্যে একটি পিটার সোরেন নামে ভুয়া ব্যক্তির ও প্রতিষ্ঠানের নামে ছিলো। মার্কিন আদালতের নথির বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া আরও জানায়, ওয়েলসের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে জড়িত এসব ব্যক্তি ছদ্মবেশে তাদের কর্মকাণ্ড চালাতো। ধারণা করা হচ্ছে ওই ব্যক্তি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জঙ্গি সাইফুল সুজনের সহযোগী ছিলেন। আইটি বিশেষজ্ঞ সুজন তিনবছর আগে সাউথ ওয়েলস ত্যাগ করে আইএসে যোগ দিতে সিরিয়া চলে যান। এরপর রাকায় এক ড্রোন হামলায় নিহত হন।

২০০৩ সালে পড়াশোনা করতে যুক্তরাজ্য যান সুজন। এরপর দুইবছর পর তার স্ত্রী আক্তারও সেখানে যা। ২০১১ সালে সন্তানকে নিয়ে তারা পন্তিপ্রিডে বসবাস করছিলেন। পরে কার্ডিফে চলে যান। কাছেই ছিলো আলেক্সান্দ্রা গেট বিজনেস পার্ক। তুরস্ক যাওয়ার আগে একবার বাংলাদেশেও আসেন এই দম্পতি। আলেক্সান্দ্রা গেটে আইব্যাকস নেটওয়ার্ক নামের কোম্পানিটি গড়ে তোলেন। স্থানীয় রেস্টুরেন্টগুলোকে ওয়েবসাইট ও প্রিন্টিং সার্ভিস দিতো তারা। তবে এফবিআই ও ব্রিটিশ সন্ত্রাস বিরোধী পুলিশ ইউনিটের দাবি, সাইফুল সিরিয়া যাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি তাদের জঙ্গি কার্যক্রম বৃদ্ধি করে।