রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা হিসেবে ব্যাপক হারে নগদ টাকা দেয়ায় নাশকতা সৃষ্টিসহ অপরাধের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার আশংকা করছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। প্রশাসনের কঠোর নিষেধাজ্ঞা সত্বেও প্রতিদিন দেশি-বিদেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান রোহিঙ্গাদের মাঝে লাখ লাখ টাকা বিলি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর নগদ টাকার লোভে পুরাতন রোহিঙ্গারাও আশ্রয় শিবির ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসায় ত্রাণ বিতরণে চরম বেগ পেতে হচ্ছে প্রশাসনকে।

রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ শুরু হওয়ার প্রথম দিকে স্থানীয়ভাবে ত্রাণ বিতরণ চললেও পর্যায়ক্রমে এর সাথে সম্পৃক্ত হয়েছে সরকার। বর্তমানে ত্রাণ বিতরণে বড় ধরণের ভূমিকা রেখে চলেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী কিছুটা স্পর্শকাতর হওয়ায় ত্রাণ হিসেবে নগদ টাকা বিতরণে প্রথম থেকেই নিরুৎসাহিত করে আসছে প্রশাসন। যদিও কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ হিসেবে টাকা নেয়ার অংশ জন্য একটি ব্যাংক হিসাবও খোলা হয়েছিলো।

প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থানে গিয়ে রোহিঙ্গাদের মধ্যে লাখ লাখ নগদ টাকা বিলি করছে নানা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। প্রতিটি রোহিঙ্গাকে সর্বনিন্ম ৩০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত দেয়া হয়। নগদ টাকা দেয়ার ক্ষেত্রে মাদ্রাসা এবং এতিমখানার প্রাধান্য বেশি। দুই মাদ্রাসা কর্মী বলেন, কিছু টাকা তাদের দেয়া হচ্ছে ওষুধ পত্র কেনা বাচ্চাদের দুধ কেনার জন্যে। তাদের চিকিৎসার জন্যে আমরা টাকা পয়সা দিচ্ছি।

জামায়েত-উলমা-ই-হিন্দের মাওলানা হাকিম উদ্দিন কাসেমী বলেন, আমরা এ পর্যন্ত ৫০ লাখ রুপি দিয়েছি। স্কুল বানানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মুসলিম ভাতৃত্বের অংশ হিসেবে এটা করা আমাদের দায়িত্ব। নগদ টাকা বিতরণের ফলে পুরাতন রোহিঙ্গারাও লোভে পড়ে তাদের আশ্রয় শিবির ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসায় নতুনদের মাঝে ত্রাণ বিতরণে জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। লে. মেহেদী পিয়াস বলেন, পুরাতন রোহিঙ্গারাও মাটির পথ ধরে আসছে টাকার লোভে।

এ অবস্থায় রোহিঙ্গাদের মাঝে নিয়ন্ত্রণহীন নগদ টাকা বিলির কারণে অপরাধের মাত্রা বাড়তে পারে বলে আশংকা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর। সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি থেকে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে উখিয়া এবং টেকনাফে ১২টি পয়েন্টে প্রতিদিন রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ শুরু হয়। এছাড়া বিদেশি বিভিন্ন দাতা এবং উন্নয়ন সংস্থা নিজেরাও পৃথকভাবে ১০টির বেশি স্থানে ত্রাণ বিতরণ করছে।