বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপটি দুর্বল হয়ে পড়লেও এর প্রভাবে বৃষ্টি হচ্ছে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায়।ঝড়ো হাওয়ার শঙ্কায় সমুদ্র বন্দরগুলোকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।অধিদপ্তরের শনিবার সকালের বুলেটিনে বলা হয়, পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি আরও উত্তর-উত্তর পশ্চিমে অগ্রসর হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়। এটি আরও উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে দুর্বল হয়ে নিম্নচাপ রূপে উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

নিম্নচাপের প্রভাবে সকাল থেকে ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি হচ্ছে রাজধানী ঢাকায়; আকাশ রয়েছে মেঘলা। ঢাকার পাশাপাশি রাজশাহী, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় আগামী ২৪ ঘণ্টা বৃষ্টি চলবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত ছিল বাগেরহাটের মোংলায়, ৩৪ মিলিমিটার।বুলেটিনে রাতের তাপমাত্রার পাশাপাশি দিনের তাপমাত্রাও ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে।নিম্নচাপের প্রভাব কেটে যাওয়ার পর বাতাসের তাপমাত্রা আরও কমতে পারে; তাতে তীব্রতা বাড়বে শীতের।

শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল কক্সবাজারের টেকনাফে ৩০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস; সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন ছিল ১৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি হওয়ায় উপকূলীয় এলাকার উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে।নিম্নচাপের কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ এখন ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।সাগর উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপের প্রভাবে ঢাকাসহ দেশের চার বিভাগে ভারী বর্ষণ হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। আবহাওয়াবিদ এ কে এম রুহুল কুদ্দুছ জানান, শনিবার (০৯ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খুলনা, বরিশাল, চট্টগাম ও ঢাকা বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী (২৩-৪৩ মিমি/২৪ ঘণ্টা) থেকে ভারী (৪৪-৮৮ মিমি/২৪ ঘন্টা) বর্ষণ হতে পারে।এরই মধ্যে ঢাকায় সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির পর দুপুর থেকে মাঝারি ধরনের ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা কমে এসেছে। এতে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি আরও সামান্য উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি দুপুর ১২ টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৬০ কি. মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৪৫ কি. মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৭৫ কি. মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৫০৫ কি. মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর/উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে। নিম্নচাপটির প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দর সমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। নিম্নচাপটির কেন্দ্রের ৪৪ কি. মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কি. মি. যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কি. মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপটির কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দর সমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।

Image : Shohrab Hossain Titu