বিএনপির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হটাতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার শপথ নিয়েছেন দলটির নেতারা।শনিবার সকালে শেরে বাংলা নগরে চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়ার কবরে ফুল দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলটির নেতারা।ফুল দেওয়ার পর ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, এই অবৈধ সরকার দেশের মানুষের সমস্ত অধিকার হরণ করে নিয়েছে, রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে।আজকে এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে আমাদের শপথ হচ্ছে, এই দানব ফ্যাসিস্ট সরকারকে অপসারণ করে, এই দুঃশাসনের অবসান ঘটাতে গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।অচিরেই সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে সফল হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব।২০০৮ সালের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিএনপিকে বাইরে রেখে ২০১৪ সালের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে দেশ শাসন করছে।

আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় একাদশ সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনে করার এবং খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার দাবি বিএনপি করে এলেও তাতে সরকারের গা নেই।বিএনপির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এখন কী- সাংবাদিকদের প্রশ্নে ফখরুল বলেন, বিএনপির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা, মানুষের অধিকারগুলোকে ফিরিয়ে দেওয়া।প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দুপুরে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জনসভার কর্মসূচিও রয়েছে বিএনপির।এর আগে ভোরে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে পোস্টার ছাপানো হয়েছে।লন্ডনে থাকা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পৃথক পৃথক বিবৃতিতে নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।দলের প্রতিষ্ঠাতার সমাধিতে ফুল দেওয়ার সময় ফখরুলের সঙ্গে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ সহ¯্রাধিক নেতা-কর্মী।

এ সময়ে দলের জ্যেষ্ঠ নেতা আলতাফ হোসেন চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, রুহুল আলম চৌধুরী, জয়নাল আবেদীন, আহমেদ আজম খান, এজেডএম জাহিদ হোসেন, আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, মশিউর রহমান, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, ফরহাদ হালিম ডোনার, তৈমুর আলম খন্দকার, কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবউদ্দিন খোকন,খায়রুল কবির খোকন,রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, হাবিবুর ইসলাম হাবিব, মীর সরফত আলী সপু, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আমিনুল ইসলাম, দেওয়ার মো. সালাউদ্দিন বাবু, নাজিমউদ্দিন আলম, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, আবদুল আউয়াল খান, আমিরুজ্জামান খান প্রমূখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।অঙ্গসংগঠনের মধ্যে ড্যাবের একেএম আজিজুল হক, ঢাকা মহানগরের কাজী আবুল বাশার, মু্ক্িতযোদ্ধা দলের ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাদেক আহমেদ খান, যুব দলের মোরতাজুল করীম বাদরু, এসএম জাহাঙ্গীর, স্বেচ্ছাসেবক দলের শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়ের, ইয়াছিন আলী, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসেইন, নুরুল ইসলাম খান নাসিম, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান, তাঁতী দলের আবদুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাব, ছাত্র দলের আলমগীর হাসান সোহান, জাসাসের মামুন আহমেদ, হেলাল খান, বাবুল আহমেদ, জিয়া পরিষদের আবদুল কুদ্দুস, জিসাসের আবুল হাশেম উপস্থিত ছিলেন।১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ছয়টি রাজনৈতিক দল ও মতের অনুসারীদের এক মঞ্চে নিয়ে ‘জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি’ গঠন করেন। দলের ৪০ বছরের ইতিহাসে ৩৫ বছর ধরে দলের একটানা সাংগঠনিক নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া।গত ৮ ফেব্র“য়ারি জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলায় ৫ বছরের সাজার রায় হওয়ার পর খালেদা জিয়া পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন। চার বার ক্ষমতায় ও দুই বার বিরোধী দলের থাকা এই দলটি এখন সবচেয়ে বড় সঙ্কটকাল অতিক্রম করছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ভাষ্য।