বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, আওয়ামী লীগের দুঃশাসনে আজ গোটা সমাজ বিষাক্ত হয়ে গেছে। ছেলে মাকে জবাই করছে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিজেরাই আইন মানছে না যাকে ইচ্ছা ধরে নিয়ে গুলি করছে, নাটক সাজাচ্ছে।

তিনি বলেন, দেশ একটা অন্ধকার অরাজকতার মধ্যে ডুবে আছে। বিরোধী দলের ওপর নির্যাতন-অত্যাচার চালাচ্ছে, মানুষ হত্যা করছে, গুম করছে।

শনিবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ৭১ এর ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও আজকের বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর দ্বিতীয় ব্যক্তি ছিলেন। আর যারা ১৫ আগস্ট রাত পর্যন্ত মন্ত্রী ছিলেন তারা গিয়ে খন্দকার মোশতাকের ক্যাবিনেটে যোগ দিলেন। মোশতাকের ২৩ জন মন্ত্রীর মধ্যে ২২ জনই মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাকশালের মন্ত্রী ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীকে ইঙ্গিত করে বিএনপির এই নেতা প্রশ্ন করেন, একথা কেন আপনি বলেন না। সেনা-নৌ-বিমান বাহিনীর প্রধান খন্দকার মোশতাকের আনুগত্য করলো। জিয়াউর রহমান তো দ্বিতীয় পদে ছিলেন, তিনি তো যাননি। কমান্ড তো সেনাবাহিনীর প্রধানের কাছে থাকে। তিনি কিছু করতে পারতেন, কিন্তু তিনি তো কিছু করেননি। তিনি ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ থেকে এমপি হয়েছেন। বিমান বাহিনীর প্রধান আওয়ামী লীগের এমপি হয়েছেন। তারা তো বঙ্গভবনে গিয়ে মোশতাকের আনুগত্য প্রকাশ করেছিলেন। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের কোনো নেতা-এমপি-মন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী একটি কথাও বলেন না।

রিজভী বলেন, ৭০ এর নির্বাচনে এ দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছিল। জনগণ যে কারণে আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছিল তার প্রত্যেকটার সাথে তারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। একাত্তরে যুদ্ধ হয়েছে কিন্তু তারা নেতৃত্ব দিতে পারেনি। এটা তাদের অনুশোচনা, সেটি ঢাকার জন্য তারা জিয়া পরিবারের সমালোচনা করে। যুদ্ধের জন্য পুরো দেশ প্রস্তুত, জনগণ তাদের ভোট দিয়েছে, তাদের নেতৃত্ব দেওয়ার কথা কিন্তু তারা নেতৃত্বে ছিল না। স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন সেনাবাহিনীর একজন মেজর। এ জন্যই জিয়া পরিবারের প্রতি, জিয়াউর রহমানের প্রতি তাদের এত ক্ষোভ, এত জ্বালা।

তিনি বলেন, পাঁচটি আসনে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের নেত্রী দুটি আসনে পরাজিত হয়েছেন। আর দেশনেত্রী খালেদা জিয়া পাঁচটি আসনেই নির্বাচিত হয়েছেন। এই যে ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা, এই যে বিপুল জনপ্রিয়তা এটা কখনোই শেখ হাসিনা পছন্দ করতে পারেননি।

জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ৭১ এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক জিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, নিপুণ রায় চৌধুরী, কৃষকদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম, প্রজন্ম একাত্তর নেতা হাফেজ রুহুল আমীন প্রমুখ।