চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় মোঃ শফি নামে এক ব্যক্তিকে অপহরণের অভিযোগে করা মামলা তুলে নিতে বাদীকে মারধর ও অব্যাহত হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মামলার আসামিদের এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

ভুক্তভোগী শফি অভিযোগ করেছেন পটিয়া ৬নং কুসুমপুরা ইউনিয়নের সারাং বাড়ির মোঃ হোসেন পুত্র মোঃ রেজাউল করিম (৩০), নুরুল আজিম প্রকাশ ইয়াবা বাচা (২৬), ৩। এনামুল করিম (২৮) ও গোরনখানের গিয়াস উদ্দীন ও মোঃ গোলাপ বারবার হুমকি দিচ্ছেন। এদের সবাই অপহরণ মামলার এজাহারভুক্ত আসামী। এতে করে ওই পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান।

ঘটনা সুত্রে জানা গেছে, পটিয়া কুসুমপুরা পূর্ব মনসা এলাকার মরহুম মোঃ মুন্না মিয়ার পুত্র মোঃ শফি (৪৫) চট্টগ্রাম সাব রেজিষ্ট্রার অফিসের রেকর্ড রুমে নকল নবীশ পদে কর্মরত রয়েছেন। অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন যাবৎ তাঁর কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা লাভের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। এর জেরে বিগত ১৬ জুন দুপুরে কোতোয়ালী থানাধীন ফিরিঙ্গী বাজারস্থ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন অফিসের সামনে অভিযুক্তরা শফিকে হত্যা ও গুম করার পরিকল্পনায় অপহরণ করেন। এ ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় মামলা হয়। ১৫ জুন কোতোয়ালিতে মামলাটি (নং-১৬-৬-২২ ইং) দায়ের করা হয়। মামলাটি বর্তমানে অভিযোগপত্র দাখিলের জন্য রয়েছে।

ভুক্তভোগী শফি জানান, ওই মামলা করার পর হতে আসামীগণ আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে আছে। প্রায়শ এলাকায় তাকে অপহরণ মামলাটি তুলে নিতে হুমকিসহ চাপ দিতে থাকেন। অন্যথায় জানে মেরে ফেলা, লাশ গুম করবে সহ নানা প্রকার ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন।’

শফি বলেন, এরমধ্যে গত ১৪ সেপ্টেম্বর সকালে আমি নগদে ১২ লক্ষ টাকা নিয়ে পাকা দালানের ব্যবহৃত টাইলস কেনার জন্য বের হয়ে শান্তির হাট বাজারস্থ ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড, শান্তির হাট শাখায় গেলে ব্যাংক কর্মকর্তারা উক্ত টাকা শহরের কোন ব্যাংকে জমা দেওয়ার কথা বলেন। আমি ব্যাংক থেকে বের হয়ে শহরে যাওয়ার জন্য যাত্রীবাহী লেগুনা টেম্পু গাড়িতে উঠি। সাড়ে ১১ টায় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আসামীরা আমাকে ধরে ভেল্লাপাড়া ব্রিজ সংলগ্ন বালির টালের ভেতরে নিয়ে যান। এরা আমাকে ব্যাপক মারধর করে। কিরিচ দিয়ে মাথায় আঘাত ও হাটুতে রক্তাক্ত জখম করেন। আমার টাকার ব্যাগ; দুটি মোবাইল নিয়ে পেলে। এমনকি ৩টি অলিখিত নন-জুডিসিয়াল ষ্ট্যাম্পে জোর পূর্বক স্বাক্ষর নেন। এরা আমার মোবাইল হতে আমার ভাই মোঃ সেলিমকে ফোন করে অপহরণ মামলাটি তুলে নিতে বলেন। নাহয় আমাকে খুন করবে বলে জানান।

পরে ওরা পালিয়ে গেলে স্থানীয় লোকজন শফিকে উদ্ধার করে পটিয়া উপজেলা স্বাক্ষ্য কমপ্লেক্সে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সীতে চিকিৎসা নেন। বর্তমানে চমেকের সার্জারী বিভাগে চিকিৎসারত রয়েছেন বলে জানান।

মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোঃ রেজাউল করিম সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে আহত শফির ভাগিনা দিদার সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, পুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তার না করার সুযোগে, আসামিরা অপহরণ মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন। এখন মামলা তুলে নিতে মারধর ও প্রাণনাশসহ অব্যাহত হুমকি দিচ্ছেন। এতে আমার মামা ও পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।’

কর্ণফুলী থানার ওসি মোঃ দুলাল মাহমুদ বলেন, ‘এ ধরনের কোন ঘটনায় অভিযোগ এখনো থানায় আসেনি। আসলে আইনি ব্যবস্থা নিবো।’