সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে করা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় তাকে ২৭ লাখ ৮৬ হাজার ৩৬৪ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক প্রদীপ কুমার রায় অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গত ৬ মার্চ এ আদেশ দেন।

তবে জমির উদ্দিন সরকারের আইনজীবী হান্নান ভূঁইয়া আজ সোমবার আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আজই জরিমানার টাকা দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব।

এর আগে ২০১০ সালের ২৮ ডিসেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান খান ও উপ-সহকারী পরিচালক এস এম খবীরউদ্দিন চারজনের বিরুদ্ধে ডিএমপির শেরেবাংলা নগর থানায় পাঁচটি মামলা করেন।

মামলায় জমির উদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে বলা হয়, জাতীয় সংসদের স্পিকার থাকাকালীন তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিদেশে চিকিৎসার জন্য অবৈধ উপায়ে সরকারি অর্থ অনুমোদন এবং তা নগদে তুলে আত্মসাৎ করেছেন। সেই সঙ্গে সরকারি বাসভবনের আসবাব কেনা ও তা আত্মসাৎ এবং অতিরিক্ত অর্থ তোলার অভিযোগও করা হয়েছে।

এর মধ্যে একটি (১৪/২০১৯) মামলায় জমির উদ্দিনকে চিকিৎসা ভাতা হিসেবে নেওয়া ২৭ লাখ ৮৬ হাজার ৩৬৪ টাকা সরকারি কোষাগারে জরিমানা হিসেবে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। আদেশে বিচারক উল্লেখ করেন, এ মামলায় জরিমানার টাকা জমা দিলে বাকি চার মামলা থেকেও তিনি অব্যাহতি পাবেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন, জাতীয় সংসদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার আখতার হামিদ সিদ্দিকী এবং জাতীয় সংসদের কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম।

এর আগে গত বছরের ২৫ আগস্ট প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ জমির উদ্দিন সরকারের পাঁচটি মামলার কার্যক্রম বাতিল করে পূর্ণাঙ্গ রায় দেন। তবে চিকিৎসা ভাতা হিসেবে নেওয়া অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দিতে বলা হয়।

পরবর্তীতে পাঁচ মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। আদালত অভিযোগ আমলে নিলে মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন জমির উদ্দিন সরকার। পরে মামলাগুলোর কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট।

এর পর ২০১৬ সালের ১৯ মে শুনানি শেষে মামলায় দ্বিধাবিভক্ত রায় দেন হাইকোর্টের বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ।

পরে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি গঠিত একক বেঞ্চ বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ করেন। এরপর ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়। ওই আপিলের শুনানি নিয়ে সর্বশেষ রায় দেন আদালত।