বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। দলীয় মনোনয়ন না পেয়েও জনগণের সঙ্গে কাজ করতে চান তিনি। মনোনয়ন না পাওয়ার পর এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছেন, জনগণ চাইলে আমি মেয়র পদে নির্বাচন করবেন।

আগামী ২৫ মে অনুষ্ঠিত হবে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। এ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান, সাময়িক বরখাস্তকৃত সিটি মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, যুবলীগের কামরুজ্জামান সরকার রাসেল সহ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ১৭ জন নেতা আবেদন করেন। শনিবার দুপুরে গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার ও জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভায় মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খানকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে চ’ড়ান্ত করা হয়। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভায় দলীয় প্রার্থিতা ঘোষণার পর মহানগরীর টঙ্গী সহ মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় আজমত উল্লাহ খানের সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দেয়। দুপুরে কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে টঙ্গী ভরান হাজী মাজার মসজিদ থেকে আজমত উল্লাহ খানের আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হয়। সন্ধ্যায় জেলা শহর জয়দেবপুরে আওয়ামীলীগ মনোনীত দলীয় প্রার্থী আজমত উল্লাহ খানের সমর্থনে ছাত্রলীগের কর্মীরা একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে।

এদিকে আজমত উল্লাহ খানকে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ঘোষণার পর সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ ও যুবলীগ নেতা কামরুজ্জামান সরকার রাসেলের সমর্থকদের মধ্যে চরম হতাশা লক্ষ্য করা গেছে। জাহাঙ্গীর আলম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার সমর্থকদেরকে প্রচারণা চালাতে দেখা যাচ্ছে।

এদিকে মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম দলের মনোনয়ন না পাওয়ার পর বিকেলে এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আমি সব সময় রাজনীতির মাঠে ছিলাম, আছি এবং থাকবো। আমি নগরবাসীর জন্য অনেক কাজ করেছি। গাজীপুর সিটিবাসী আমাকে মেয়র হিসেবে চায়। আমি যেহেতু রাজনীতি করি, তাই জনগণ যা চায়, আমি তাই করব। এলাকার নাগরিক ও ভোটার যদি চায়, তবে আমি তাদের নিরাশ করব না। তারা চাইলে আমি মেয়র পদে নির্বাচন করব। সিটিবাসীর অনুরোধে আমি নির্বাচনে অংশ নেব।

অপরদিকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চাওয়া আরেক প্রার্থী আবদুল্লাহ আল মামুন মন্ডলও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মেয়র পদে নির্বাচন করবেন বলে ইতোমধ্যে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
অন্যদিকে এবারের নির্বাচনে আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় কারারুদ্ধ বিএনপি নেতা নূরুল ইসলাম সরকারের ছেলে সরকার শাহ নূর ইসলাম রনি স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হিসেবে ইতোমধ্যে আঁটঘাট বেঁধে নির্বাচনী মাঠে নামছেন। এছাড়াও মেয়র পদে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন জাতীয় পার্টির গাজীপুর মহানগর শাখার সভাপতি ও সাবেক সচিব এমএম নিয়াজ উদ্দিন ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা গাজী আতাইর রহমান সহ একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী।