জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে শুরু হচ্ছে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিডি) টিকাদান কার্যক্রম।

সারা দেশের পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়রত কিশোরীদের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরেও ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের এ টিকা দেয়া হবে। মোট ১৮ দিনের ক্যাম্পেইনে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে। এর প্রথম ধাপের কার্যক্রম শুরু হবে ঢাকা বিভাগের সব জেলা, উপজেলা, সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভায়। দ্বিতীয় ধাপে দেয়া হবে চট্টগ্রাম ও বরিশালের সব জেলা উপজেলায়। তৃতীয় ধাপে টিকা পাবে রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, ময়মনসিংহ এবং সিলেট অঞ্চলের কিশোরীরা। এতে করে জরায়ু ক্যান্সারে মৃত্যু এবং আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য কমবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সোমবার সচিবালয়ে এ সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, সার্ভিকাল ক্যানসারের টিকা এইচপিভি ভ্যাকসিন বাংলাদেশে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছি। বাংলাদেশে বছরে প্রায় ২৭ হাজার নারী এ রোগে আক্রান্ত হন এবং সাড়ে ৬ হাজার মারা যায়। এ টিকা দিতে পারলে মৃত্যুর সংখ্যা, সংক্রমণ ও রোগীর সংখ্যা কমবে।
সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এ টিকা দেওয়া হবে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্কুল থেকে এ টিকা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করা হবে। কারণ ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী মেয়েদের এ টিকা দেওয়া হয়। পর্যায়ক্রমে এই বয়সী সব মেয়েদের এ টিকা দেবো। সেপ্টেম্বর মাস থেকে টিকাদান কার্যক্রম শুরু করবো।

ইতোমধ্যে সাড়ে ২৩ লাখ টিকা হাতে এসেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, পর্যায়ক্রমে চট্টগ্রাম, বরিশাল দ্বিতীয় দফায় রাজশাহী, খুলনা, রংপুর ও ময়মনসিংহে টিকা দেওয়া হবে। নভেম্বরে আরও ২০ লাখ এবং ডিসেম্বরে ১২ লাখ টিকা পাওয়া যাবে। আগামী বছরে ৪২ লাখ টিকা এবং ২০২৫ সালে ২৩ লাখ টিকা পাওয়া যাবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ টিকা আমাদের দেবে।
জাহিদ মালেক বলেন, বাংলাদেশে ভালো করে করোনার টিকা দিতে পারায় গ্যাভি (টিকা ব্যবস্থাপনার বৈশ্বিক জোট) এবং ডব্লিউএইচও খুবই খুশি। তারা আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আগামী ৫ বছরে ১০ কোটি করোনার টিকা দেবে। ৫ কোটি মানুষকে সেই টিকা দিতে পারব। বিনামূল্যে আমরা এ টিকা পাবো বলে আশা রাখি। যার মূল্য প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। এ টিকা দিতে খরচ হবে ৬০০ কোটি টাকা।

পোস্ট গ্র্যাজুয়েট এবং ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বাড়লো:
এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট এবং ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বাড়ানোর ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, বেসরকারি চিকিৎসকেরা যারা বিএসএমএমইউয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট পড়ছেন তারা বাড়তি ভাতার দাবি করছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে আমরা তার অনুমতিক্রমে ভাতা ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা করে দিয়েছি। ইন্টার্ন চিকিৎসকদেরও দাবি ছিল। তারা এখন মাসে ১৫ হাজার টাকা করে ভাতা পান, সেটিকে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করছেন সাড়ে ৬ হাজার আর সাড়ে ৪ হাজার ইন্টার্ন চিকিৎসক রয়েছেন। তাদের বাড়তি টাকা দিতে খরচ হবে ৬৪ কোটি টাকা। এটি অনুমোদনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।