গাজীপুরে জমিতে গরু প্রবেশ করে সবজি নষ্ট করার জেরে এক বৃদ্ধকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও মারধোর করে মারাতœক আহত করেছে তারই শ্যালক ও শ্যালকের ছেলে। প্রকাশ্যে কোপানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে পুলিশ ওই বৃদ্ধের শ্যালককে গ্রেপ্তার করেছে। গাজীপুর মহানগরীর সদর থানার নাগা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহতের মেয়ে ওয়াহিদা খাতুন বলেন, গাজীপুর মহানগরীর নাগা এলাকায় বাড়ি সংলগ্ন মসজিদের পাশেই ঘর তুলে সেই ঘরেই বসবাস করেন বাবা ওমেদ আলী (৭০)। তিনি মসজিদের আশপাশে পতিত জমিতে বেড়া দিয়ে বিভিন্ন ধরনের সবজি রোপন ও সেগুলো বিক্রি করে সংসার চালান। আমার মামা সাহিদের গরু প্রায়ই ওই সবজি ও বিভিন্ন ফলদ গাছপালা খেয়ে ফেলে। এনিয়ে মসজিদের পবিত্রতা রক্ষা ও গাছ পালা রক্ষার জন্য মামাকে একাধিকবার সতর্ক করেন আমার বাবা। রবিবার বিকেলে আমার বাবা মসজিদের পাশে বাঁশ দিয়ে বেড়া নির্মাণের কাজ করছিলেন। এসময় তার সঙ্গে মামা সাহিদের বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে বাবার হাত থেকে দা’ কেড়ে নিয়ে সাহিদ ও তার ছেলে আমার বাবার হাত থেকে দা’ কেড়ে নিয়ে ওই দা’ দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপায় এবং লাঠি পেটা করতে থাকে। তারা চলে যাওয়ার পর আহত বাবাকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।

তিনি আরও বলেন, কোপানোর ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে ওরা নিজেরাই হাত তাদের কেটে সাহিদও হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এখন পুলিশ পাহারায় রয়েছে। এঘটনায় থানায় মামলা করা হয়েছে।

বৃদ্ধের শ্যালক সাহিদ জানান, দুলাভাই ওমেদ আলী ও তার লোকজন আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর করেছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ছেলে তার উপর আক্রমণ করে। তাদের আক্রমণে আহত হওয়ায় আমাকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আমার দুলাভাই লোক ভালো না, নেশা পানি খায়, বোনের সঙ্গেও সম্পর্ক ভালো না।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, একটি পতিত জমিতে বৃদ্ধ ওমেদ আলীকে মাটিতে ফেলে শ্যালক সাদিক পেটাচ্ছে এবং তার ছেলে সাদ্দাম ধারালো দা দিয়ে এলোপাথারি কোপাচ্ছে। উপস্থিত কয়েকজন নারী চিৎকার করছেন। উপস্থিত কেউ বাধা দিতে এগিয়ে যাচ্ছেন না।

জিএমপি’র সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোঃ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ওই ঘটনায় বৃদ্ধের মেয়ে ওয়াহিদা খাতুন বাদি হয়ে রাতে থানায় মামলা করেছেন। মামলায় বৃদ্ধের শ্যালক সাহিদ, তার স্ত্রী রেবেকা ও ছেলে সাদ্দাম হোসেনকে আসামী করেছে। পুলিশ সাহিদকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃত সাহিদ পুলিশের প্রহরায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে, দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।