শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় বিজ্ঞ আদালত গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান এবং নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারা ও অর্থদন্ডের সাজা দিয়েছে। তাদের শ্রম আইনের ৩০৩ (ঙ) ধারায় সর্বোচ্চ ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাদন্ডের রায় ঘোষনা করেন এর বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা। মামলার অপর তিনজন সাজাপ্রাপ্তরা হচ্ছেন, গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।

আজ সোমবার (০১ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকার শ্রম আদালত-৩ এর বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা এ রায় দেন।
তবে আদালত এক মাসের মধ্যে আপিল করার শর্তে তাকে জামিন দিয়েছ।
একই সাথে আদালত এই সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের ক্ষেত্রে আইন লঙ্ঘন করে যেসব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে, তা বিধি সংশোধন করে সেসব সুবিধা প্রদান করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

অপরদিকে রায় ঘোষানর প্রতিক্রিয়ায় ড. ইউনূস বলেন, যে দোষ করিনি, সেই দোষের শাস্তি পেলাম। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আদালত থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের কাছে এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তিনি। অন্যদিকে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। তিনি বলেন, এই রায়ের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে যে, বাংলাদেশে আইনের শাসন আছে। যে যত বড় হোক, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চার জনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ শ্রম বিধিমালা ১০৭ বিধি ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

গত ২২ আগস্ট এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে গত ৮ নভেম্বর আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য রাখেন তারা। এরপর থেকে মামলাটিতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। সেই থেকে দশম দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। গত ২৪ ডিসেম্বর এ মামলায় উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রাত সোয়া ৮টার দিকে রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন আদালত।

ড. ইউনূসের পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন ও কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পক্ষে আইনজীবী খুরশিদ আলম খান উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও রায় শুনতে বিশিষ্ট নাগরিক ও মানবাধিকারকর্মীরা আদালতে জড়ো হন।