1
 বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় এক কিশোরীর মৃত্যু ঘটেছে। সোমবার সন্ধ্যায় ফাতেমাতুজজোহরা পুতুল(১৪) নামের  মেয়েটি মারা যায়। সে নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের বাদশারহাট এলাকার শাহ আলম মোল্লার মেয়ে। জানা গেছে, নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের উমাজুরী গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম মোল্লার মেয়ে হামেজিয়া দাখিল মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণির ছাত্রী ফাতেমাতুজজোহরা ওরফে পুতুল ১৬ মার্চ জ্বর জনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ে। ওই দিন তাকে মোড়েলগঞ্জ হাসপাতালের আরএমও ডা. অসীম কুমার সমদ্দারের কাছে আনা হয়। ডা. অসীম সমদ্দার কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করিয়ে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন এ্যান্টিবয়োটিক ইনজেকশন ‘ভারটেক্স’ ৭টিসহ কিছু ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেন। ওই পরামর্শ অনুযায়ী পুতুলের শরীরে ‘ভারটেক্স’ ইনজেকশন প্রথমটি পুশ করার পর থেকেই প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। বিষয়টি ডা. অসীম কুমারকে জানানো হলে তিনি ওষুধ চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এভাবে তিনটি ইনজেকশন করার পরে পুতুলের শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি ঘটে। এ অবস্থায় ডা. অসীম কুমারের কাছে আবারো আনা হলে তিনি পুতুলকে দ্রুত খুলনায় স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। ১৯মার্চ খুলনা ২৫০শয্যা হাসপাতালে নেয়া হলে ডাক্তাররা জানান, ওষুধের রিএ্যাকশনে পুতুলের গোটা শরীর পুড়ে গেছে। এরপর তাকে বার্ন ইউনিটে ভর্তি করে সমস্ত শরীর ব্যান্ডজ করে চিকিৎসায় রাখেন। কিন্তু  কোন চিকিৎসায়ই অবস্থার উন্নতি হয়নি বরং অবনতি হয়েছে পুতুলের। মাথার চুল পড়ে যায়, চামড়া উঠে যায়। এ অবস্থায় রবিবার খুলনার ২৫০ শয্যা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুতুলের ছাড় পত্র দিয়ে ঢাকায় স্থানান্তরের পরামর্শ দেয়। ঢাকায় নেওয়ার পথে সমস্ত শরীর থেকে রক্ত ক্ষরণ শুরু হলে ফিরিয়ে আনা হয় বাড়িতে। সেখানে সোমবার সন্ধ্যায় পুতুল মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এ সময় এলাকার শতশত লোক ও পুতুলের সহপাঠীরা তাকে শেষ বারের মত দেখতে ভিড় জমায়। শোকের ছায়া নামে ওই গ্রামে। পুতুলের এ অকাল মৃত্যুর জন্য তার পিতা মাতা ডা. অসীম কুমারকে দায়ী করছেন। অপরদিকে ডা. অসীম কুমার জানান, চিকিৎসা সঠিক ছিল তবে বিষয়টি দুঃখজনক। বিশেষজ্ঞদের মতে ড্রাগ রিএ্যাকশনের কারণেই পুতুলের শরীর পুড়ে গেছে এবং সে মারা যায়।