1দৈনিক বার্তা –মন্ত্রিসভাবাংলাদেশসেতু কর্তৃপক্ষ আইন,২০১৪ এর খসড়া নীতিগতভাবে অনুমোদন করেছে।সোমবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এম মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া সাংবাদিকদের একথা জানান। তিনি বলেন,সামরিক শাসনামলে করা বিদ্যমান আইনটি ইতিমধ্যে সুপ্রীম কোর্টের রায়ে অকার্যকর হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ১৯৮৫ সালে যমুনা মাল্টিপারপাস ব্রিজ অথারিটি অর্ডিন্যান্স’ নামে একটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়। ১৯৯৬, ১৯৯৮ ও ২০০৯ সালে সংশোধনের পর এটি ২০০৯ সালে ‘বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ আইন-এর রূপ নেয়।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে আগের সংশোধনীগুলো রেখে আইনটিকে আরো হালনাগাদ এবং বাংলায় করা হচ্ছে। তবে আইনটিতে কোন বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে না। তিনি বলেন, ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতুর কাজ শুরু করার সময় আইনটিতে সংশোধনী আনা হয়। পরে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ভবিষ্যতে ১৫শ’ মিটার বা এর বেশি দৈর্ঘ্যরে সেতু, বাইপাস বা এ জাতীয় স্থাপনার কাজ করা হবে এ আইনের আওতায়।

সচিব বলেন,যেহেতু ১৫শ’ বা এর বেশি দৈর্ঘ্যরে সেতু এ আইনের আওতায় হবে তাই ২০০৯ সালে আবার সংশোধনী এনে যমুনা মাল্টিপারপাস ব্রিজ অথোরিটি’ নামটি পরিবর্তন করে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ আইন করা হয়েছে।

তিনি বলেন,এ আইনের আওতায় সেতু নির্মাণ করবে সেতু বিভাগ। নির্মাণের পর ওই সেতু রক্ষণাবেক্ষণ করবে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। নির্বাহী পরিচালক হবেন এ প্রতিষ্ঠানের প্রধান। আবার এ প্রতিষ্ঠানের একটি বোর্ড থাকবে, তার নাম হবে বাংলাদেশ সেতু বোর্ড। এ বোর্ডের প্রধান হবেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় অর্থাৎ যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী।

মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৪’র খসড়ায় এসব বিধান যুক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ১৫শ’ মিটারের কম দৈর্ঘ্যরে সেতুর নির্মাণ কাজ সড়ক বিভাগ করবে খসড়ায় এমন বিধান যুক্ত করা হয়েছে।তবে সড়ক বিভাগ এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রণালয়ের কাজ প্রায় একই হওয়ায় যাতে কোন সমস্যা না হয়, তারও একটি বিধান এ আইনের খসড়ায় রাখা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, স্থানীয় দাবি ও চাহিদা অনুযায়ী যে সব কাজ হয় সেগুলো এলজিআরডি মন্ত্রণালয় করবে। আর ১৫শ’ মিটারের ছোট সেতু বা এ জাতীয় স্থাপনা নির্মাণের কাজ সড়ক বিভাগ করবে।

সচিব বলেন, সড়ক বিভাগ ও এলজিআরডি মন্ত্রণালয় কে কোন কাজ করবে তার একটি তালিকা তৈরির জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সড়ক বিভাগের সচিবকে নিয়ে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন,আজকের মন্ত্রিসভার বৈঠকে চারটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দ্বিতীয়টি ছিল বাংলাদেশ ও চিলির মধ্যে কুটনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুসমর্থনের প্রস্তাব অনুমোদন।

তিনি বলেন, প্রস্তাবটি অনুমোদন হওয়ায় দু’দেশের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি হবে। এছাড়া উভয় দেশের এ পাসপোর্টধারী নাগরিকরা অন্য দেশে ভিসাবিহীন ৯০ দিন অবস্থান করতে পারবেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এছাড়া ঢাকায় সার্ক মন্ত্রিপরিষদ সচিবগণের দ্বিতীয় সভার আয়োজন এবং ওই সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের অংশগ্রহণ সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয়।

তিনি আরো বলেন, ওই সভায় কান্ট্রি প্রেজেন্টেশন এবং সার্কভূক্ত দেশসমূহের নিজস্ব ব্যতিক্রমী ও উত্তম কাজগুলো তুলে ধরা হয়। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আইটি সাফল্যের নানা দিক তুলে ধরে। মিলেনিয়াস ডেভেলপমেন্ট গোলের সাফল্যের কথা তুলে ধরে অন্যান্য দেশের প্রতিনিধিবৃন্দ বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেও সচিব জানান।

তিনি আরো বলেন, সার্ক মন্ত্রিপরিষদ সচিবগণের তৃতীয় বৈঠক ২০১৫ সালে পাকিস্তানে ও চতুর্থ বৈঠক ২০১৬ সালে নেপালে অনুষ্ঠিত হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আজকের বৈঠকে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ১৭ থেকে ১৯ মার্চ সৌদি আরবের জেদ্দায় অনুষ্ঠিত ‘দ্বিতীয় ইসলামিক কনফারেন্স অব ইয়োথ এ্যান্ড স্পোর্টস মিনিস্টার্স (সিওয়াইএসএম)’এর কার্যক্রম অবহিত করেন।