2দৈনিক বার্তা : শনিবারের জনসভার অনুমতি দিতে সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। বিএনপির পক্ষ  থেকে বলা হয়েছে সরকার নিরাপত্তার স্বার্থে  যেখানে মনে করবেন  সেখানে অনুমতি দিলে তাতে বিএনপির কোনো আপত্তি  নেই। সেটা হোক  ডেমরার  যেকোনো জায়গায় কিংবা গণভবন বা বঙ্গভবন।

শুক্রবার সকালে দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সমন্বয়ক তরিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন।সংবাদ সম্মেলনে তরিকুল বলেন, আমরা তিনটি জায়গায় অনুমতি চেয়ে পুলিশ প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছি। তাদের সঙ্গে কথা বলেই মাতুয়াইল কনকর্ড হাউজিং মাঠে জনসভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তারা কোনো অনুমতি  দেননি।তিনি বলেন, প্রতিনিয়ত গলিত লাশ উদ্ধার হচ্ছে।যে  দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার,  ডেপুটি স্পিকার জনগণের ভোটের নির্বাচিত নয় তাদের কাছে জনগণ কিছু  পেতে পারে না।

বিএনপির এ  নেতা বলেন, সরকার  যেভাবে অত্যাচার নির্যাতন চালাচ্ছে তাতে করে শেষ রক্ষা হবে না। ইতিহাস তাই স্বাক্ষী  দেয়।  যেকোনো সময় বিস্ফোরণ ঘটতে এখন শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র।

সারাদেশে এখন অপহরণ খুন-গুম মহামারি আকার ধারণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।তিনি বলেন,‘নদী-নালা, খাল-বিল এমনকি বঙ্গপোসাগরের  মোহনাতে গুলিবিদ্ধ লাশ ভাসছে।আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, রক্ষক যখন ভক্ষকের ভুমিকা পালন করে তখন সমাজে ভয়াবহতা নেমে আসে।

অবৈধ সরকার আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীতে নিজেদের  লোক দিয়ে বিরোধী দলকে নিমূর্ল করার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে বিরোধী দল দমনে র‌্যাবকে লেলিয়ে  দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, পুলিশের সর্বস্তরের সঙ্গে  যোগাযোগ করেও এখন পর্যন্ত আগামীকালের জনসভার অনুমতি পাওয়া যায়নি। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, গণতান্ত্রিক উপায়ে রাজনীতি করতে চাই। জনগণের কাছে আমাদের বক্তব্য তুলে ধরতে চাই। এটা আমাদের  মৌলিক অধিকার। এই অধিকার  থেকে বঞ্চিত করার অধিকার কারোর  নেই।

বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি  দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের উদ্দেশে বলেন,গণতন্ত্রের জায়গা ( স্পেস) যেন নষ্ট করা না হয়। দরজা  যেন বন্ধ করা না হয়। এর পরিণতি ভালো হয় না।শনিবার রাজধানীর ডেমরায় পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সমাবেশ করার কথা রয়েছে। কিন্তু পুলিশ এখনো সমাবেশ করার অনুমতি  দেয়নি।

মির্জা ফখরুল জানান, সমাবেশের জন্য তাঁরা যাত্রাবাড়ীর শহীদ ফারুক সড়ক, কমপ্যাক্ট স্কুল মাঠ ও মাতুয়াইলের কনকর্ড হাউজিং মাঠের  যেকোনো একটিতে সমাবেশের অনুমতি  চেয়েছেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তাঁরা অনুমতি পাননি। তিনি বলেন, আমরা গণতান্ত্রিক উপায়ে রাজনীতি করতে চাই। সভা-মিছিলের মাধ্যমে জনগণের সামনে আমাদের বক্তব্য তুলে ধরতে চাই। এখানে বাধা  দেওয়ার অধিকার কারও  নেই।

যারা গুম-খুনের বিরুদ্ধে কথা বলছে, তারাই আক্রমণের শিকার হচ্ছে দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, বৃহস্পতিবার আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) কর্মকর্তা নূর খানকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়েছিল। নারায়ণগঞ্জে শহীদ  চেয়ারম্যান সত্য কথা বলায় তাঁকে ভয়  দেখানো হচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটি সাড়া পায়নি দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ভয়ে  কেউ সেখানে সাক্ষ্য দিতে পারছে না। এ ঘটনায় র‌্যাবের ওই তিন কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হবে কি না, এ নিয়েও সংশয় আছে।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব  মো. শাজাহান, বরকত উল্লাহ বুলু, রুহুল কবির রিজভী, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালাম, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন  চৌধুরী এ্যানি, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সহ-দফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি প্রমুখ।