1দৈনিক বার্তাঃ শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, এ বছর বিদেশ থেকে লবণ আমদানির কোনো অনুমতি দেয়া হবে না।তিনি বলেন,  দেশের চাষিদের উৎপাদিত লবণের উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিত করতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর ফলে লবণ চাষিরা উপকৃত হবে।

বিসিক এবং গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমপ্র“ভড নিউট্রিশনের (গেইন) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘সার্বজনীন আয়োডিনযুক্ত লবণ নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী এ কথা জানান। রাজধানীর রূপসী বাংলা হোটেলে বুধবার এ সেমিনার আয়োজন করা হয়।মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুম্কি সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন।

বিসিক চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিসিকের সার্বজনীন আয়োডিনযুক্ত লবণ প্রকল্পের পরিচালক আবু তাহের খান। এতে পৃথকভাবে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইসিডিডিআরবি’র পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ ও গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমপ্র“ভড্ নিউট্রেশনের (গেইন) ব্যবস্থাপক রিজোয়ান ইউসুফ আলী। অনুষ্ঠানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ফরহাদ উদ্দিন, বিসিক পরিচালক পতিত পাবন বৈদ্য, গেইনের বাংলাদেশ কান্ট্রি ব্যবস্থাপক বসন্ত কুমার কর আলোচনায় অংশ নেয়।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, আয়োডিনের ঘাটতির ফলে জনগণের গলগন্ড, বামনত্ব, শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধীত্বসহ নানা রকম সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে। পরিমিত পরিমাণে আয়োডিন মিশ্রিত ভোজ্য লবণ ব্যবহার করে এসব শারীরিক সমস্যা মোকাবেলা করা সম্ভব। বিসিক গৃহিত সার্বজনীন আয়োডিনযুক্ত লবণ প্রকল্পের ফলে দেশে আয়োডিনের অভাবজনিত রোগ-বালাই কমে আসছে। ১৯৯৩ সালে দেশে আয়োডিন ঘাটতিজনিত মানুষের পরিমাণ শতকরা ৬৯ ভাগ হলেও বর্তমানে তা অর্ধেকের নীচে নেমে এসেছে বলে তারা উল্লেখ করেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, বিশ্বায়নের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য দক্ষ ও মেধাবী জনসম্পদ প্রয়োজন। জ্ঞানভিত্তিক শিল্পায়নের কাক্সিক্ষত গন্তব্যে পৌঁছতে বর্তমান সরকার সৃজনশীল ও মেধাবী প্রজন্ম গড়ে তোলার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। ২০১৬ সালের মধ্যে দেশের শতভাগ লবণে পরিমিত পরিমাণ আয়োডিন মিশ্রণ নিশ্চিত করার পাশাপাশি শতভাগ পরিবারকে আয়োডিনযুক্ত ভোজ্য লবণ ব্যবহারের আওতায় আনা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এটি জাতি হিসেবে আমাদের জন্য একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ হলেও এ উদ্যোগ সফল করতে তিনি সরকারের সহায়ক শক্তি হিসেবে বেসরকারি খাত এগিয়ে আসার আহবান জানান।

উল্লেখ্য, চলতি বছর দেশে ১৭ লাখ ৫৩ হাজার মেট্রিক টন লবণ উৎপাদিত হয়েছে। এটি লবণ উৎপাদনের সর্বোচ্চ রেকর্ড। বর্তমানে দেশে লবণের চাহিদা ১৫ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন। ২০১২-২০১৩ মৌসুমে লবণ উৎপাদন হয়েছিল ১৬ লাখ ৩৪ হাজার মেট্রিক টন। বর্তমানে দেশে উৎপাদিত শতকরা ৫৮ ভাগ ভোজ্য লবণে পরিমিত পরিমাণ আয়োডিন মিশ্রণ হচ্ছে। আয়োডিযুক্ত লবণ ব্যবহার করছে শতকরা ৮৪ ভাগ পরিবার।