1দৈনিক বার্তাঃ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন,বিরোধীদল দমানোর জন্য পুলিশ ও র‌্যাবকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। যার দৃষ্টান্ত হল বৃহস্পতিবারে বিএনপিকে সমাবেশ করতে না  দেওয়া।

রিজভী বলেন, এ সরকারের আমলে  দেশব্যাপী নির্যাতন, খুন, গুম, অপহরণ, ক্রসফায়ার ও বন্দুক যুদ্ধের নামে বিচার বহির্ভূত হত্যা জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।দেশে এখন ভয়ঙ্কর সামাজিক অস্থিরতা চলছে।শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে রিজভী আগামী ২৫ মে (রোববার) ঢাকা মহানগরসহ প্রতিটি  জেলা শহরে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচির  ঘোষণা  দেন।

উল্লেখ্য,বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি’র পূর্ব  ঘোষিত নাগরিক সভায় পুলিশ বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়। নাগরিক সভায় বিএনপি’র  চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপস্থিত থাকার কথা ছিল।

গুম, খুনের দিকে দেশকে আর একটুও নিয়ে যেতে  দেওয়া হবে না- এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে রিজভী বলেন, জনগণের  চোখে-মুখে এখন নিঃশব্দ ঘৃণা ও দৃঢ় প্রতিবাদের ভাষা ফুটে উঠেছে। এ সময় তিনি বিএনপি’র  নেতাদের নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারেরও দাবি জানান।তিনি আরো বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এখন  বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা এখন খুব সহজেই অনৈতিক ও নিষ্ঠুর কাজে অংশ গ্রহণ করছে। টাকার বিনিময়ে তারা মানুষ হত্যা করতেও দ্বিধাবোধ করে না।

বৃহস্পতিবার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ মিলনায়তনে সভা করতে না  দেওয়ায় রোববার ঢাকা মহানগরের থানায় থানায় ও সারাদেশের জেলায় জেলায় বিক্ষোভ মিছিল করবে বিএনপি।সারাদেশে খুন, গুম ও অপহরণের প্রতিবাদে নিহত ও অপহৃতদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে সভা করার কথা ছিল বিএনপির। কিন্তু পুলিশি বাধার মুখে সভা করতে পারেনি দলটি।পুলিশ জানায়, প্রশাসনের অনুমতি না থাকায় কোনো ধরনের সভা করতে দেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম দৈনিক বার্তাকে বলেন, সম্মেলন করতে প্রশাসনের কোনো অনুমতি বিএনপি নেয়নি। তাই সম্মেলন করতে  দেওয়া হয়নি।পরে সন্ধ্যায় গুম-অপহরণের শিকার হওয়াদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে  বৈঠক করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।সংবাদ সম্মেলনে রিজভী অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার পুলিশ কর্মকর্তা শিবলী  নোমান ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউট থেকে তারা বের না হলে গুম করে  দেওয়ার হুমকি দেন।

তিনি বলেন, সারাদেশে গুম অপহরণ খুনের সঙ্গে জড়িত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরা সদস্য ও ক্ষমতাবানদের ঘনিষ্ঠজনরা। আজ গদফাদারদের আতঙ্কে সাধারণ মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে।ফেনী ও নারায়ণগঞ্জের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে রিজভী বলেন, এর মাধ্যমে সরকারের কুৎসিত  চেহারা পুরোপুরি ফুটে উঠেছে।

তিনি বলেন, সরকার ক্ষমতা হারানোর ভয়ে বিরোধীমতালম্বীদের ওপর বর্বর নৃশংস  স্বৈরতান্ত্রিক আচরণ করছে।তিনি এসময় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের মামলায় বিএনপির  নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মওদুদ আহমেদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ  যেসব  নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে তার তীব্র নিন্দা জানান।

রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি মনে করে পুলিশ বেআইনি ও অসাংবিধানিকভাবে ওই নাগরিক সমাবেশ করতে  দেয়নি। পুলিশ কর্তৃক  দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নাগরিক সমাবেশ করতে না দেয়ার প্রতিবাদে আমরা এই কর্মসূচি ঘোষণা করছি।রাজধানীতে প্রতিটি থানায় আলাদাভাবে বিক্ষোভ করা হবে বলে জানান তিনি।

ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে কেন্দ্রীয় নেতা সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করীম শাহিন,রফিক শিকদার ও মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা উপস্থিত ছিলেন।