11
এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তার জেরা শেষ

ঢাকা,৬জুলাই, দৈনিক বার্তা : জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) এম ইদ্রিস আলীকে রোববার জেরা শেষ করেছে আসামিপক্ষ।

ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ মামলার বিচার কার্যক্রম চলছে। আইও প্রসিকিউশনের ১৯তম এবং সর্বশেষ সাক্ষী। গত ১৫ জুন আইও জবানবন্দি পেশ করেন।আজ আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুস সোবহান তরফদার আইও’কে জেরা শেষ করেন।

আসামিপক্ষ সাফাই সাক্ষ্যের জন্য ১৫ জনের একটি তালিকা দিয়ে তা অনুমোদনের জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেছে। অপরদিকে এ তালিকা খারিজে প্রসিকিউশনও আবেদন করেছে। প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম, তাপস বল ও চেমন আরা।বিষয়টি ওপর শুনানি মুলতবি করে মামলার তারিখ সোমবার ধার্য করা হয়েছে।

আইও ইদ্রিস আলী তার জবানবন্দিতে বলেছেন, ২০১২ সালের ১৫ এপ্রিল এ টি এম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন অনুযায়ী অপরাধের তদন্তভার গ্রহণ করে তিনি তদন্ত শুরু করেন। তদন্ত করতে গিয়ে তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, বিভিন্ন লেখকের বই ও পত্র-পত্রিকা পর্যালোচনা করার পাশাপাশি সংশি¬ষ্ট বই ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিবেদন সম্বলিত পত্রিকার কাটিং সংগ্রহ করেন বলে জবানবন্দিতে বলেন।

তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দোসর জামায়াত, মুসলিম লীগ, নেজামে ইসলামী এবং পিডিবিসহ বিভিন্ন দলের নেতারা শান্তি কমিটি, রাজাকার, আলবদর, আল-শামসসহ বিভিন্ন বাহিনী গঠন করে। তিনি বলেন, এসব বাহিনী পারস্পরিক যোগসাজশে দেশে রাজনৈতিক, সাম্প্রদায়িক এবং ধর্মীয় বিদ্বেষ তৈরি করে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত রংপুরসহ সারা বাংলাদেশে ব্যাপকহারে গণহত্যা, হত্যা, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, নারী নির্যাতন, ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধ অপরাধ সংঘঠিত করে।

সংঘটিত এসব অপরাধের মূল ধারায় সম্পৃক্ত থেকে আজহার অপরাধ করেন বলে জবানবন্দিতে উলে¬খ করেন আইও।

এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে গত বছর ২৬ ডিসেম্বর থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এর আগে তার বিরুদ্ধে গত ১২ বছর নভেম্বর ৬টি অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযোগ গঠন করা হয়। তার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত ৯ ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধে ৬টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হয়েছে, যার মধ্যে সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটির (ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়) রয়েছে। অপরাধের মধ্যে রয়েছে গনহত্যা, হত্যা, লুন্ঠন, ধর্ষণ, নির্যাতন, আটক, অপহরণ,শুরুতর জখম ও অগ্নিসংযোগ। মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে এ মামলায় ট্রাইব্যুনালের আদেশে রাজধানীর মগবাজারস্থ নিজ বাসা থেকে ২০১২ সালের ২২ আগস্ট আজহারকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।