fok-187

দৈনিকবার্তা-নীলফামারী, ১৬নবেম্বর: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, স্বৈরাচার অবৈধ সরকারকে আর ক্ষমতায় রাখা যায়না৷ অবিলম্বে মধ্যবর্তী নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে নইলে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে ক্ষমতাচূ্যত করা হবে৷ আন্দোলন মানে হরতাল অবরোধ নয়,আমরা আন্দোলনের মধ্যেই আছি৷ আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা দেশব্যাপী জনসংযোগ করছি,সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি৷ তিনি রবিবার বিকেলে স্থানীয় পৌরসভা টাউন হলে সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপি’র দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন৷

তিনি আরো বলেন, নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত ৪২ দলের মধ্যে ৩০ টি রাজনৈতিক দলই গত ৫ জানয়ারীর নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেনি৷ আওয়ামী লীগ সংবিধান লঙ্ঘন করে ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের প্রতি চরম অশ্রদ্ধা জানিয়েছে৷ কাজেই এ সরকারের আমলে সুষ্ঠু,নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়৷ দেশের কল্যাণের জন্য, মানুষের কল্যাণের স্বার্থে এবং সংবিধান অক্ষুন্ন রাখতে সকল রাজনৈতিক দলের অংশ গ্রহণে শিগগিরই নির্বাচনের দাবি জানান তিনি৷

সম্মেলনে সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আলহাজ্ব মো. আব্দুল গফুর সরকার সভাপতিত্ব করেন৷ এই অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন৷বিএনপি’র রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক উপ-মন্ত্রী অধ্যক্ষ মো.আসাদুল হাবীব দুলু, সাবেক এমপি এজেএম রেজওয়ানুল হক, সাবেক এমপি আখতারুজ্জামান মিয়া, দিনাজপুর বিএনপি সভাপতি লুত্‍ফর রহমান চৌধুরী, রংপুর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সাবেক মজিলা এমপি বিলকিছ ইসলাম, সাবেক এমপি ও সৈয়দপুর পৌরসভা মেয়র অধ্যক্ষ মো. আমজাদ হোসেন সরকার প্রমূখ৷

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম ছাত্রলীগ সম্পর্কে যে কথা বলেছেন তার জন্য তিনি ধন্যবাদ জানান এবং বলেন সরকারের চরিত্র এতে প্রকাশ পেয়েছে৷ তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার বিচার বিভাগকে দলীয় করেছে এবং প্রশাসনের অবস্থাও তথৈবচ৷ এর আগে প্রধান অতিথি দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন৷ দমন-পীড়নের মাধ্যমে সৃষ্ট অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য সরকারই দায়ী এর ফলে সন্ত্রাসবাদের উত্থানের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর৷ ৷এর দায় সরকারকেই বহন করতে হবে উল্লেখ করে বিএনপির এ নেতা আরো বলেন, বিএনপিকে নেতৃত্বশূণ্য করার নীলনকশার অংশ হিসেবে মিথ্যা মামলা দিয়ে ধর পাকড় চালানো হচ্ছে৷

প্রশাসনে দলীয়করণের যে অভিযোগ বিএনপি করে আসছে, তার প্রমাণ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের বক্তব্যকে তুলে ধরলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর৷একদিন আগে ছাত্রলীগের এক অনুষ্ঠানে এইচ টি ইমামের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বৃহস্পতিবার বলেছেন, এতে সরকারের দলীয়করণের চরম বহিঃপ্রকাশ বলে আমরা মনে করি৷সরকারের প্রভাবশালীর এই বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, প্রশাসনের কী অবস্থা? ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রলীগের সোনার ছেলেদের চাকরি দেওয়া হবে, অন্যদের চাকরি দেওয়া হবে না৷

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এইচ টি ইমাম বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের এক অনুষ্ঠানে সহযোগী সংগঠনটির নেতাদের প্রতিষ্ঠিত করার কথা বলে তাদের উদ্দেশে বলেছিলেন, চাকরিসহ যে কোনো প্রতিযোগিতামূলক লিখিত পরীক্ষায় ভালো করতে হবে৷ আমি প্রয়োজনে কোচিং ক্লাস নিতে রাজি আছি৷ তারপরে আমরা দেখব, আগে নয়৷ফখরুল বলেন, সরকার বিচার বিভাগ দলীয়করণ করেছে, তাদের প্রশাসনের অবস্থাও একই৷ যুবলীগ-ছাত্রলীগ না হলে চাকরি হয় না৷ সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ইন্টিলিজেন্স রিপোর্টের সময়ে দেখা হয়, তার বংশের ওেলাকজন আওয়ামী লীগের কি না৷ শুনেছি- নেত্রীর ( শেখ হাসিনা) কাছে চাকরির জন্য আবেদন নিয়ে গেলে তিনি না কি বলেন,ছেলেটা কাদের,ছেলেটা আমাদের কি না৷ সেনাবাহিনীতেও দলীয়করণ হচ্ছে বলে শোনা যায়, বলেন বিএনপির মুখপাত্র৷

৭ নভেম্বর নিয়ে এই আলোচনা সভায় ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বাইরে একটি দল- একথা বললে বিতর্কের সৃষ্টি হবে৷ এই দলটির সঙ্গে ৭ নভেম্বরের বৈরী সম্পর্ক৷ আসলে ৭ নভেম্বর থাকলে আওয়ামী লীগ থাকে না, সেজন্য ৭ নভেম্বরে কর্মসূচি করতে তারা দেয় না৷