Round Table_CNG------------1

দৈনিকবার্তা=ঢাকা, ১৬ জানুয়ারি: সীমান্তেধারাবাহিকভাবে মানুষ মরলেও বিজিবির কোনো পদক্ষেপ নেই৷ অথচ প্রয়োজনে বিজিবি গুলি চালানো’র ঘোষণা দিয়ে মূলত তারা দেশের জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্টজনেরা৷

শুক্রবারজাতীয়প্রেসক্লাবেরভিআইপি লাউঞ্জে সেন্টারফর ন্যাশনালিজম স্টাডিজ আয়োজিত ‘ইমপিডিমেন্টস ইন নেশন বিল্ডিং এন্ড দ্যা ওয়ে ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তারা এমন মন্তব্য করেন৷

দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে উদ্বেগ জানিয়ে সংকট সমাধানে সংলাপের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজউদ্দীন আহমদ৷বর্তমানের সহিংস পরিস্থিতি চলতে থাকলে বাংলাদেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপির শীর্ষ এই পরামর্শক৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমাজ উদ্দিন আহমদ বলেন, দেশের মানুষের ওপর বিজিবির গুলি চালানোর ঘোষণা গ্রহণযোগ্য নয়৷ তাদের কাজ অপরাধীদের আটক করে শাস্তির বিধান করা৷ গুলি চালানোর নির্দেশ তারা কখনোই দিতে পারে না৷তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন বিভক্ত জাতিতে পরিণত হয়েছে৷ দেশে চলছে বিষাক্ত রাজনীতির চর্চা৷ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ না করে তারা নিজেরাই গুম-খুন ও সন্ত্রাসের মতো জঘন্য কাজ করছে৷ বিচারের উপরে মানুষের আর আস্থা নেই৷ রাজনৈতিক বিষের প্রভাবে সব প্রতিষ্ঠান বিষাক্ত হচ্ছে৷ এভাবে চলতে থাকলে দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হতে বাধ্য৷বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দেখলে পায়ে গুলি করার নির্দেশ দেয় যে সংসদ সদস্য, সংসদে তার স্থান হয় কিভাবে? অনির্বাচিত সরকার গঠনের কারণেই তারা আজ সংসদ সদস্য হতে পেরেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷

তিনি বলেন, রাজনীতির দায়িত্ব সমস্যার সমাধান করা, সমস্যার সৃষ্টি করা নয়৷ আমরা দেশে গণতান্ত্রিক রাজনীতি চাই৷ যা ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা৷ আর দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফিরে আনতে হলে অবশ্যই বিরোধীদল ও সরকারকে একসঙ্গে বসে সংলাপ করতে হবে এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমেই এ রাজনৈতিক সংকট থেকে দেশকে রক্ষা করা সম্ভব৷

বিজিবিকে গুলি চালানো ঘোষণা দেওয়ার অধিকার কে দিয়েছে এমন প্রশ্ন রেখে প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকতমাহমুদ বলেন,বিজিবির কাজ সীমান্ত পাহারা দেওয়া৷সেখানে বিএসএফ বাংলাদেশিদের হত্যা করছে বিজিবি পদক্ষেপ না নিয়ে নিজের দেশের মানুষকে হত্যার ঘোষণা দিয়েছে৷ বিজিবি জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে৷

তিনি বলেন, সাগর-রুনিকে হত্যার মাধ্যমে এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে যেন সাংবাদিকরা তাদের দায়িত্ব পালন করতে না পারে৷ তাই তাদের বিচার পর্যন্ত করছে না সরকার৷ পুলিশ গুলি করলে কোনো খবর হয় না৷ কিন্তু পুলিশকে মারলে মানবিক সংবাদ তৈরি হয়, এতেই বুঝতে হবে মিডিয়া তাদের জাতীয় দায়িত্ব পালন করছে না৷

শওকত মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সাত দফা আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলো সরকারকে৷ কিন্তু সরকার তা মেনে না নিয়ে বিএনপিকে ইচ্ছে করে রাজপথে আন্দোলনে ঠেলে দিচ্ছে৷ আমরা চাই শান্তি৷ আর এজন্য সংলাপের বিকল্প নেই৷ সংলাপের মাধ্যমেই সরকার এ সংকট দূর করতে পারে৷

তিনি আরো বলেন, স্বৈরতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদ দিয়ে জাতি গঠন হয় না৷ সুন্দর জাতি গঠন করতে চাই গণতন্ত্র৷ আর গণতন্ত্র রক্ষার একটাই পথ সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন৷আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ব্যারিস্টার ফাতেমা আনোয়ারের সভাপতিত্বে আলোচনায় বক্তব্য রাখেন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. দিলারা চৌধুরী, বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট কনসালটেন্ট মাহবুবুর রহমান, আশারাফ আল দীন প্রমুখ৷