দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৭ ফেব্রুয়ারি: জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বেগম খালেদা জিয়াকে আগুন সন্ত্রাসের নেত্রী হিসাবে অভিহিত করে বলেছেন, আগুনে পোড়া মানুষ ডিঙিয়ে সরকার তার সঙ্গে কোনো সংলাপে বসতে পারে না৷
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া আর সরকারের মাঝখানে আগুনে পোড়া অসংখ্য মানুষ রয়েছে৷ এই আগুনে পোড়া মানুষদের ডিঙিয়ে সরকার আগুন সন্ত্রাসের নেত্রীর সঙ্গে কোনো সংলাপে বসতে পারে না৷
হাসানুল হক ইনু বলেন, বেগম জিয়া সরকার এবং প্রশাসনের বিরম্নদ্ধে কোনো আন্দোলন পরিচালনা করতে পারছেন না, তারা জনগণের বিরম্নদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে, জনগণের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে, নিরীহ জনগণকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারছে৷ এটা নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতা৷ খালেদা জিয়ার এই নিষ্ঠুরতা এবং বর্বরতা ইতিহাসে নজিরবিহীন৷
হাসানুল হক ইনু আজ রাজধানীর উত্তরা হাউজ বিল্ডিং মোড়ে ঢাকা মহানগর জাসদ (উত্তর) আয়োজিত অবরোধ-হরতালের বিরম্নদ্ধে মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন৷ অন্যান্যের মধ্যে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা মহানগর জাসদের সমন্বয়ক মীর হোসাইন আখতার, জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদক নঈমুল আহসান জুয়েল, জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা মুখলেসুর রহমান মুক্তাদির, নারীনেত্রী রোকেয়া সুলতানা আনজু ও উত্তরার আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল চেয়ারম্যান৷
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেত্রী রাজনীতি এবং গণতান্ত্রিক রীতিনীতির সব নিয়মকানুন বাদ দিয়ে সরাসরি সন্ত্রাসের পথ অবলম্বন করছেন৷ মহাজোটের সরকার জনগণকে সাথে নিয়ে পরিস’িতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে৷ তিনি বলেন, ‘আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে শানত্মিপূর্ণ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়ার সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সমালোচনা এবং মোকাবেলা করছি৷ আমরা আইনের মধ্যে থেকে আগুন সন্ত্রাসী, গুপ্ত হত্যাকারী, চোরাগুপ্তা হামলাকারীদের মোকাবেলা করছি৷
দেশের পরিস্থিতি এখন আগের চেয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে উলেস্নখ করে হাসানুল হক ইনু বলেন, ছেলেরা পরীক্ষা দেওয়া শুরু করেছে৷ যান চলাচল এখন অনেকটা স্বাভাবিক৷ কিন্তু এখনো খালেদা জিয়ার আগুন সন্ত্রাসীরা রাতের অন্ধকারে চোরাগুপ্তা হামলার মধ্য দিয়ে জনগণের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে৷
মন্ত্রী বলেন, একাত্তরে পাকিসত্মানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের দোসর আলবদররা নিরীহ জনগণের উপর যে অনাচার এবং অত্যাচার চালিয়েছিল, বেগম জিয়া সেই রাজাকারদের মতোই এদেশের জনগণের উপর হায়েনার মতো আক্রমণ পরিচালনা করছেন৷
খালেদা জিয়া মুসলিস্নদের ধর্মকর্মের ধার ধারেন না, স্বরসতী পূজার তোয়াক্কা করেন না, ঈদে মিলাদুন্নবীর তোয়াক্কা করেন না, বাচ্চাদের পরীৰার তোয়াক্কা করেন না উলেস্নখ করে মন্ত্রী বলেন, উনি অস্থির, অস্বাভাবিক, অমানবিক ও নিষ্ঠুর আচরণ করছেন৷ বেগম খালেদা জিয়ার এই অস্থিরতার কারণ এক রহস্যজনক এজেন্ডা৷ যে গোপন এজেন্ডা বাসত্মবায়নের জন্য বেগম জিয়া এই অস্বাভাবিক আগুন সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছেন৷
ইনু বলেন, বর্তমানে খালেদা জিয়ার দোসত্ম এবং মিত্র চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীরা ফাঁসির কাষ্ঠে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে৷ এতিমদের টাকা আত্মসাতের দুর্নীতির মামলা রায়ের অপেৰায় রয়েছে৷ তার পুত্র তারেকের দুর্নীতি এবং হত্যা মামলা জনগণের সামনে প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে৷ ২১ আগস্ট নৃশংস গ্রেনেড হামলা মামলার তদনত্ম রিপোর্ট এখন চূড়ানত্ম৷ সবকিছু খালেদা জিয়ার বিপক্ষে৷ তিনি ৰমতায় থাকাকালে জনগণের সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণ করেছেন, হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছেন৷ এখন ক্ষমতার বাইরে এসেও তিনি আগুন সন্ত্রাসীদের দিয়ে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছেন৷
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘উনি এখন নির্বাচন-সংলাপের কথা বলছেন৷ মহাজোটের সরকার এবং আগুন সন্ত্রাসের নেত্রী খালেদা জিয়ার মাঝখানে আগুনে পোড়া অসংখ্য মানুষ৷ এই পোড়া মানুষকে ডিঙিয়ে সরকার আগুন সন্ত্রাসের নেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক সমঝোতায় যেতে পারে না৷ এই আগুনে পোড়া মানুষের আর্তনাদ উপেৰা করে মহাজোটসহ কোনো সরকারের পৰেই আলোচনা সম্ভব নয়৷ ডাকাতের সঙ্গে কোনোদিন আলোচনা হয় না, তেমনি আগুন সন্ত্রাসের নেত্রী খালেদার সঙ্গে কোনো আলোচনা সম্ভব নয়৷
তিনি বলেন, আগুন সন্ত্রাসের কাছে আত্মসমর্পণের অর্থ হলো বাংলার মানুষের আকাঙ্ৰাকে ধ্বংস করে দেওয়া, আগুনে পোড়া মানুষদের আর্তনাদকে অগ্রাহ্য করা৷ এখন একটাই পথ খোলা আছে, আগুন সন্ত্রাসীদের পরাজিত করা এবং আগুন সন্ত্রাসের নেত্রী খালেদা জিয়াকেও আত্মসমর্পণে বাধ্য করা৷ এছাড়া আর কোনো পথ নেই৷তিনি ধৈর্য ধরে আগুন সন্ত্রাসীদের সম্পর্কে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে সর্বসত্মরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে বলেন এবং আগুন সন্ত্রাসীদের পরাজিত করার মধ্য দিয়ে বেগম জিয়াকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করে বিচারের মুখোমুখি করার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন৷