nu2

দৈনিকবার্তা- নারায়ণগঞ্জ, ১১ মার্চ: নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের মামলায় গ্রেপ্তারকৃত ৩০ জনকে বুধবার সকালে নারায়ণগঞ্জের একটি আদালতে হাজিরা দিতে আনা হয়েছিল। শুনানি শেষে পরবর্তী শুনানির জন্য ১১ মে দিন ধার্য করেছেন আদালত।নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এইচ এম শফিকুল ইসলাম বুধবার সকালে এ আদেশ দেন। নির্ধারিত হাজিরার দিন সকালে আদালতে হাজির করা হয় মামলার আসামী র‌্যাবের সাবেক কর্মকর্তা তারেক সাঈদ, আরিফুর রহমান, এম এম রানা সহ ৩০ আসামীকে।শুনানিতে র‌্যাবের ওই তিনজনকে হ্যান্ডকাফ ছাড়া আদালতে আনায় শুনানির সময়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন আইনজীবীরা। তাঁরা আদালতে বিচারককে বলেন, আইন সবার জন্য সমান। কিন্তু তিনজন আসামী হওয়া সত্যেও তাদের হ্যান্ডকাফ পড়ানো হয়নি যা আইনসম্মত না।

নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান জানান, তিনজনকে হ্যান্ডকাফ না পড়ানোয় আমরা আদালতে ক্ষোভ জানিয়েছি। মামলার প্রধান আসামী নূর হোসেনকে এখনো ভারত থেকে না আনায় আমরা অসন্তোষ প্রকাশ করে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার দাবী জানিয়েছি। আর ঘটনার এক বছরেও এখনো চার্জশীট না দেওয়াটা ভিন্ন কোন উদ্দেশ্য থাকতে পারে।শুনানি শেষে ১১ মে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।আদালতের কোর্ট পরিদর্শক হাবিবুর রহমান হাবিব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। প্রসঙ্গত, গত ২৭ এপ্রিল নাসিকের প্যানেল মেয়র নজরুল, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহীম অপহৃত হন। পরে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।৭ খুনের দুটি মামলায় এ পর্যন্ত র‌্যাবের ১৭ জন সদস্যসহ মোট ৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে তিন র‌্যাব কর্মকর্তাসহ ১৮ জন আদালতে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেন। এ ছাড়াও ঘটনার সাক্ষী হিসেবে ইতোমধ্যে ১৬ জন আদালতে জবানবন্দী দিয়েছেন।

গত বছর ২০১৪ এর ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে র‌্যাব সদস্য পরিচয়ে তুলে নেয়া হয় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে। ৩০ এপ্রিল ও ১ মে ইটের বস্তা দিয়ে বাঁধা তাদের লাশ ভেসে ওঠে শীতলক্ষ্যা নদীতে। লোমহর্ষক এ ঘটনার পর র‌্যাব-১১ এর কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, একই ব্যাটালিয়নের দ্বিতীয় অধিনায়ক মেজর আরিফ হোসেন এবং সিদ্ধিরগঞ্জ ক্যাম্প কমান্ডার নৌবাহিনীর লে. কমান্ডার এমএম রানার দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন নিহত নজরুল ইসলামের শ্বশুর।৬ কোটি টাকার বিনিময়ে র‌্যাবের ওই কর্মকর্তারা নজরুলসহ সাতজনকে অপহরণের পর হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করা হয়।