লিবিয়ার আল-ঘানি তেলক্ষেত্র থেকেই বাংলাদেশীদের অপহরণ করা হয়।
দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৪ মার্চ: লিবিয়ায় জিম্মি হিসেবে আটক থাকা বাংলাদেশী হেলাল উদ্দিনের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ হয়েছে বলে তার পরিবার বলছে। জামালপুরে বসবাসকারী তার স্ত্রী আলেয়া বেগম বিবিসিকে বলেছেন, তার স্বামী তাকে টেলিফোন করে জঙ্গীদের কাছে কষ্টকর অবস্থায় জিম্মি থাকার কথা জানিয়েছেন। তবে কোন মুক্তিপণ বা কোন চাহিদার বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।

এদিকে লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা বলেছেন, গত ৬ই মার্চ হেলাল উদ্দিনসহ দু’জন বাংলাদেশীর অপহৃত হওয়ার ঘটনা পর থেকে এখন পর্যন্ত তাদের সম্পর্কে কোন তথ্য তারা পায়নি। লিবিয়ায় তেলক্ষেত্র থেকে অপহৃত হওয়ার ১৮ দিন পর হেলাল উদ্দিন জিম্মি অবস্থায় থেকেই দেশে জামালপুর জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম দক্ষিণ গজারিয়ায় তার পরিবারের সাথে টেলিফোনে কথা বলেছেন। তার স্ত্রী আলেয়া বেগম বলেছেন, মঙ্গলবার সকালে টেলিফোনে চার মিনিটের কথোপকথনে তার স্বামী জঙ্গীদের কাছে আটক থাকা এবং কষ্টের কথা জানিয়েছেন।

তবে অপহরণকারিরা মুক্তিপণ চায় কিনা, বা তাদের কোন চাহিদা আছে কিনা, এসব বিষয়ে হেলাল উদ্দিন তার স্ত্রীকে কিছু বলেননি। আলেয়া বেগম বলেন, ”টেলিফোনে কন্ঠ শুনে আমি আমার স্বামীকে চিনেছি। আমার স্বামী বলেছেন, জঙ্গীরা তাকে একটা ঘরে আটকে রেখে তাকে শুধু একবেলা খাবার দিচ্ছে। টেলিফোন করার সুযোগ দিলেও জঙ্গীরা বেশি কথা বলতে দেয়নি। ভয়ে আমার স্বামী বিস্তারিত কিছু বলেননি।”

লিবিয়ার অনেকখানি জায়গাই এখন বিদ্রোহীদের দখলে।
লিবিয়ার অনেকখানি জায়গাই এখন বিদ্রোহীদের দখলে।

”আমার স্বামীকে প্রশ্ন করেছিলাম, তাকে কোথায় আটকে রেখেছে বা কারা আটকে রেখেছে? কোন জবাব দিতে পারে নি। এক পর্যায়ে টেলিফোন লাইন কেটে যায়।” লিবিয়ার আল-ঘানি তেল ক্ষেত্র থেকে পাঁচটি দেশের নয়জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছিল গত ৬ই মার্চ। সেই নয়জনের মধ্যে বাংলাদেশের জামালপুরের হেলাল উদ্দিন এবং নোয়াখালীর আনোয়ার হোসেন রয়েছে বলে তখনই নিশ্চিত হয় বাংলাদেশ সরকার। এর বাইরে সরকার কোন তথ্য না পাওয়া কথাই বলে আসছে।

এখন হেলাল উদ্দিন টেলিফোনে স্ত্রীর পাশাপাশি তার স্কুল-পড়ুয়া মেয়ের সাথেও কথা বলেছেন। মোসাম্মৎ হেলেনা বলেছেন, তার পিতা বেঁচে আছেন, এখন এই সান্তনাটুকু পেলেন। লিবিয়ায় বাংলাদেশের দূতাবাসের লেবার কনস্যুলার এএসএম আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, অন্য যে পাঁচটি দেশের নাগরিক জিম্মি রয়েছে, সেই দেশগুলো এবং লিবিয়ার সরকারের সাথে বাংলাদেশ যোগাযোগ রাখছে। কিন্তু অপহৃতদের ব্যাপারে এখনও কোন তথ্যই পাওয়া যায়নি। এই পরিস্থিতিতে জিম্মি অবস্থা থেকে টেলিফোনে পরিবারের সাথে কথা বলার বিষয়টিকে মি. ইসলাম আশ্চর্যজনক বলে মনে করছেন।

তবে এই কথোপকথনের বিষয়কে ধরে কোন সূত্র খুঁজে পাওয়া যায় কি না, তারা সেই চেষ্টা করবেন। এদিকে, হেলাল উদ্দিনের পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের কথোপকথনের বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।