mizan

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৬ জুন: বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান প্রতিটি নাগরিকের মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা যাতে সাদা পোশাকে কাউকে গ্রেফতার করতে না পারে সেজন্যে সরকারের পক্ষ থেকে পরিপত্র জারির আহবান জানিয়েছেন।তিনি বলেন,কখনোই আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সাদা পোষাকে কোন নাগরিককে আটক করতে পারে না। সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে পরিপত্র জারির আহবান জানাচ্ছি।

ডেইলি স্টার সেন্টারে আয়োজিত এক সেমিনারে সভাপতির ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান। কমিশন আয়োজিত ‘নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু : আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো: আব্দুল আলীম।ড. মিজানুর রহমান বলেন, আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর যে কোন শাখার সদস্য কোন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে গেলে তাকে অবশ্যই তিনি কোন বাহিনীর সদস্য তার পরিচয়পত্র দেখাতে হবে। কোন ব্যক্তিকে আটকের সময় স্থানীয় অন্তত দুইজন লোকের সামনে আটক করতে হবে।

তিনি আটককৃত ব্যক্তিকে আটকের সময় কোথায় নেয়া হবে তা তার পরিবারকে জানানোর আদেশ জারির সুপারিশ করেন এবং আটকের ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাকে থানায় হাজির করার নির্দেশনা প্রদানের আহ্বান জানান।তিনি বলেন, সন্ত্রাস দমন করতে গিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যেন নিজেই সন্ত্রাসীতে পরিণত না হয়। রাষ্ট্রের দ্বারা যেন কেউ কোনোভাবে নির্যাতনের স্বীকার না হন। রাষ্ট্রের নাগরিকের নিরাপত্তা, মানবাধিকার রক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রকেই নিতে হবে। মানবাধিকারের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি হতে হবে উদার ও মানবিক।তা হতে হলে, প্রথম কর্তব্য হবে, বাস্তব পরিস্থিতিকে স্বীকার করে নেওয়া।

এখনকার বাস্তব পরিস্থিতি হলো; রাষ্ট্রের মাধ্যমে নির্যাতন, হেফাজতে মৃত্যু। আর এগুলো নিবারণে আইন প্রণয়ন হলেও এখন পর্যন্ত কোনো বিধি প্রণয়ন হয়নি। এ কারণেই আদালত এগুলো আমলে নিতে পারছে না।আইনের বিভিন্ন দুর্বলতা থাকা সত্ত্বেও নির্যাতন, হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন ২০১৩ করায় সরকারকে সাধুবাদ জানান তিনি।অধ্যাপক মিজান বলেন, আমি বারবার আইজিপিকে বলেছি, তিনি আসেননি। এই সেমিনারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধি থাকার দরকার ছিল। কেন আসেননি? স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জবাব নিতে হবে।

সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন রাউল ওয়ালেনবার্গ ইনস্টিটিউট অব হিউম্যান রাইটস সুইডেনের প্রফেসর লিয়াল সুঙ্গা, নিউজিল্যান্ডের ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলিংটনের পিএইচডি গবেষক এসএম মাসুম বিল্লাহ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল আলীম, জমাকনের সদস্য মিস আরমা দত্ত প্রমুখ।