abdul-latif-siddique-4_301736

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২ আগস্ট: আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী দাবি করেছেন,তাকে বহিষ্কারের এখতিয়ার আওয়ামী লীগের নেই। নির্বাচন কমিশনের চিঠির জবাবে রোববার দুপুরে এক চিঠিতে একথা বলেন, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী। লতিফ সিদ্দিকী তার চিঠিতে দাবি করেন, আওয়ামী লীগ থেকে তাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তটি ভুল ছিল।

তিনি আরো দাবি করেন, আওয়ামী লীগের ভুল ব্যাখ্যার উপর ভিত্তি করে তাকে সংসদের সদস্যপদ থেকে সরিয়ে দেয়া সংগতিপূর্ণ হবে না। সেই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনকে শুনানি বিতর্কে না গিয়ে বিষয়টি স্পিকারের কাছে পাঠানোরও অনুরোধ করেন তিনি। এদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এক চিঠিতে বলা হয়েছে, দল বহিষ্কার করায় তিনি সংসদ সদস্য পদে থাকতে পারেন না।

রোববার দুপুরে প্রধান নির্বাচন কমিশন বরাবর দেওয়া চিঠিতে লতিফ সিদ্দিকী লেখেন, ধর্ম অবমাননার বানোয়াট ও ভিত্তিহীন যে অভিযোগ আনা হয়েছে আলোচনার স্বার্থে তা যদি ধরেও নেওয়া হয় তা হলেও আওয়ামী লীগ থেকে সদস্যপদ বাতিল করার এখতিয়ার কেন্দ্রীয় সংসদের নেই। কারণ আমি জনপ্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য দিয়েছি। আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবে বক্তব্য দিয়েছি বলে বিবেচনার সুযোগ নেই। বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ভুল ব্যাখ্যার ওপর ভিত্তি করে নেওয়া হয়েছে এবং সংবিধানের ৬৬ (৪) অনুযায়ী তা নিষ্পত্তি ও সংগতিপূর্ণ নয়।

লতিফ সিদ্দিকীর ব্যক্তিগত সহকারী মো. রুবেল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বরাবর লিখিত এ চিঠিটি জমা দেন।জাতীয় সংসদের প্যাডে লেখা চিঠিতে সইয়ের নিচে নিজেকে টাঙ্গাইল-৪ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।চিঠিতে লতিফ সিদ্দিকী দাবি করেন, সংবিধানের ৬৬ (৪) অনুচ্ছেদ অনুসারে বিতর্ক নিষ্পত্তির বিষয়টি তার ক্ষেত্রে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।এই যুক্তিতে ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে শুনানিতে না গিয়ে স্পিকারকে চিঠি পাঠাতে অনুরোধ করেন বরখাস্ত হওয়া সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী।

তিনি বলেন, উপর্যুক্ত আলোচনার আলোকে এ বিষয়টি স্পষ্ট, মাননীয় স্পিকার কর্তৃক প্রেরিত ও উল্লিখিত সংবিধানের ৬৬(৪) দফায় বর্ণিত সারমর্মের সঙ্গে আমার বিষয় ও বিতর্কটি সংগতিপূর্ণ নয়। ফলে মাননীয় নির্বাচন কমিশন সুনির্দিষ্টভাবে ৬৬(৪) দফার বিষয়ে যা বলার এবং কার্যক্ষেত্রে ৬৬(২) ও ৭০ ধারার কোনো ব্যত্যয় না ঘটায়, কোনো কিছু করণীয় আছে বলে মনে হয় না।উল্লেখ্য, গত বছরের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে এক অনুষ্ঠানে হজ নিয়ে মন্ত ব্যের কারণে বিভিন্ন মহলের দাবির মুখে লতিফ সিদ্দিকীকে মন্ত্রিসভা থেকে সরানোর পাশাপাশি দল থেকেও বহিষ্কার করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে দলের গঠনতন্ত্রের ৪৬(ক) ও (ঞ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী লতিফ সিদ্দিকীকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়

হজ নিয়ে মন্তব্যের কারণে মন্ত্রিত্ব ও দলীয় সদস্যপদ হারানো সংসদ সদস্য আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, আওয়ামী লীগ থেকে তাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তটি ভুল ছিল।সংসদ সদস্য পদ বাতিলের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে বিষয়টি স্পিকারের কাছে পাঠানোর জন্য নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করেছেন তিনি। নির্বাচন কমিশনের চিঠির জবাবে রোববার দুপুরে এক চিঠিতে এই অনুরোধ জানিয়েছেন সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী লতিফ।জাতীয় সংসদের প্যাডে লতিফ সিদ্দিকীর স্বাক্ষরিত ওই চিঠি তার ব্যক্তিগত সহকারী প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদের কার্যালয়ে জমা দিয়ে যান।

চিঠিতে লতিফ বলেন, আমার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার কষ্টকল্পিত বানোয়াট ও ভিত্তিহীন যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা আলোচনার স্বার্থে যদি ধরেও নেওয়া হয় যে আমি ওই বক্তব্য দিয়েছি, তাহলেও আওয়ামী লীগ থেকে সদস্যপদ বাতিলের এখতিয়ার কেন্দ্রীয় সংসদের নেই।জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি বক্তব্য দিয়েছি। আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবে বক্তব্য দিয়েছি বলে বিবেচনার সুযোগ নেই। আমাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ভুল ব্যাখ্যার উপর ভিত্তি করে নেওয়া হয়েছে।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে এক অনুষ্ঠানে হজ নিয়ে মন্তব্যের কারণে বিভিন্ন মহলের দাবির মুখে লতিফ সিদ্দিকীকে মন্ত্রিসভা থেকে সরানোর পাশাপাশি দল থেকেও বহিষ্কার করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।দেশে ফেরার পর ওই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মামলায় নয় মাস কারাগারে থাকাতে হয় টাঙ্গাইলের এই সাংসদকে। সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পান ৭৭ বছর বয়সী এই রাজনীতিক।লতিফকে বহিষ্কারের আট মাস পর বিষয়টি জানিয়ে আওয়ামী লীগের পাঠানো চিঠি গত ৫ জুলাই স্পিকার শিরীন শারমিনের হাতে পৌঁছায়।

এ অবস্থায় লতিফের সংসদ সদস্য পদ থাকবে কি না, তা মীমাংসার জন্য স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে চিঠি দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।সংসদ সদস্য (বিরোধ নিষ্পত্তি) আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন এরপর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এবং লতিফ সিদ্দিকীর বক্তব্য জানতে চেয়ে চিঠি দেয়। রোববার সেই চিঠিরই জবাব দিলেন লতিফ।চিঠিতে লতিফ সিদ্দিকী দাবি করেছেন, সংবিধানের ৬৬ (৪) অনুচ্ছেদ অনুসারে বিতর্ক নিষ্পত্তির বিষয়টি তার ক্ষেত্রে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।এই যুক্তিতে ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে শুনানিতে না গিয়ে স্পিকারকে চিঠি পাঠাতে অনুরোধ করেছেন লতিফ।এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের লিখিত জবাবও রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে দলের উপ-সম্পাদক এবিএম রিয়াজুল কবির কাওসার জানিয়েছেন।