n11

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৫: গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ভোলা, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও মুন্সিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নদ-নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ ভেঙে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন লাখো মানুষ। পানিবন্দি এসব দুর্গত মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। প্রয়োজনীয় খাবার, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করলেও তাদের দেখার যেন সত্যিই কেউ নেই। এসব বানভাসি মানুষের দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে। এরসঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে পানিবাহিত রোগ।এদিকে, মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান ভারী ও মাঝারি বর্ষণ বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে কমে আসতে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।অধিদপ্তরের কর্তব্যরত পূর্বাভাস কর্মকর্তা আরিফ হোসেন বুধবার দুপুরে বলেন, শুক্রবারের পর থেকে আবহাওয়া ও বৃষ্টি স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে তারা আশা করছেনগত কয়েকদিন ধরে দেশের বেশিরভাগ এলাকায় ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হচ্ছে। বুধবারও এই ধারা অব্যাহত থাকবে। তবে বৃহস্পতিবার থেকে কমে আসবে।আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বুধবার সকাল থেকে ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে।উত্তাল সাগরে ঝড়ো হাওয়ার শঙ্কায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে অধিদপ্তর।

এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।বুধবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত রাজধানীতে ২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। আগেরদিন বেলা ১২টা থেকে বুধবার ভোর ৬টা পর্যন্ত হয়েছে ৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টি। ওই সময়ে কক্সবাজারে দেশের সর্বোচ্চ ১৭০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।এদিকে টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে ঢাকায় তীব্র জলজট ও যানজটে নাগরিক ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে।মঙ্গলবার সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির পর বেলা সোয়া ১১টার দিকে মুষলধারে বর্ষণ শুরু হয়। এতে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সড়ক ও নিচু এলাকা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। পরে তা অলিগলিতে ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।বুধবার সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি ও সড়কে জমে থাকা পানিতে নগরবাসীর সেই দুর্ভোগে পড়তে হয়।

রংপুর: অতিবৃষ্টি ও বন্যায় রংপুর অঞ্চলের প্রায় ৮২হাজার হেক্টর ফসলি জমি তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় ৭৬৫ কোটি ৪ লাখ ৯৯ হাজার টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন কৃষকরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বন্যায় তলিয়ে যাওয়া ৭৯ হাজার ৭৮৭ হেক্টর রোপা আমন ধানের জমি তলিয়ে গেছে। এই জমিতে প্রায় দুই লাখ ৬৮ হাজার ৪৮০ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হতো। যার বাজার মূল্য ছিল ৭০৯ কোটি ৭৪ লাখ ৯৯ হাজার টাকা।আর বন্যার পানিতে দুই হাজার ৩৯৮ হেক্টর সবজি ক্ষেত সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। এখানে প্রায় ৫২ কোটি ৫৭ লাখ টাকার সবজি উৎপাদনের আশাবাদ করছিলেন কৃষকরা। এছাড়া কলায় এক কোটি ৩৫ লাখ এবং আদা চাষে প্রায় ২৮ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বীজতলাসহ অন্যান্য ফসলেরও ক্ষতি তো আছেই।

বুধবার রংপুরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের আঞ্চলিক কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ভোক্তভোগী কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে এসব চিত্র পাওয়া গেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, চলতি বছরের জুলাইয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ফসলি জমি তলিয়ে যায়। এতে বেশ বড় মাপের ক্ষতির সম্মুখীন হন কৃষকরা। এছাড়া আগস্ট মাসের বিভিন্ন সময়ের টানা বর্ষণে শুধু রংপুর অঞ্চলেই এক লাখ ৩১ হাজার ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। প্লাবিত জমির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আউশ ও আমন ধান ছাড়াও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের মধ্য আমনের বীজতলা, বোনা আমন, বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি, মরিচ, পানের বরজ, কলা উল্লেখযোগ্য। গত তিনদিন ধরে রংপুরের পীরগাছা, কাউনিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, এসব এলাকার ফসলি জমিসহ ঘর-বাড়ি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। রোপা আমন তলিয়ে যাওয়ায় বেশ ভাবনায় পড়েছেন চাষিরা। আকস্মিক এ প্রাকৃতিক দুযোর্গে ভেঙে পরেছেন তারা। কেননা এই ধান থেকেই খোরাকের যোগান আসে এ অঞ্চলের বর্গা, প্রান্তিক ও ভূমিহীন চাষিদের।এরমধ্যে রয়েছে আবার ঋণের চিন্তাও। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা জানান, ফসল বোনার সময় বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ধার-দেনা ধান চাষ শুরু করেছিলেন তারা। কিন্তু হঠাৎ করে অসময়ের বন্যায় সব ভাসিয়ে নিল। ক্ষতিগ্রস্ত এসব চাষির সহযোগিতায় এখনও পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

ভোলা: ভোলায় জোয়ারের পানি ১৭ সেন্টিমিটার কমলেও এখনো প্লাবিত রয়েছে ৫০টি গ্রাম। এতে পানিবন্দি রয়েছে লাখো মানুষ।বুধবার মেঘনার পানি বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাবিত হচ্ছে। মঙ্গলবার ছিলো বিপদসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার উপরে।এদিকে, ভোলা সদর, দৌলতখান, মনপুরা ও চরফ্যাশন উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নের বাঁধের ভেতর ও বাইরে রাস্তাঘাট, বসতঘর, ফসলের খেত, পুকুর ও ঘের তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষজন। ক্ষতিগ্রস্ত অধিকাংশ মানুষ উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রতিদিন দিনে দু’বার ভোর ও দুপুরে জোয়ারের পানি বেড়ে লোকালয়ে প্রবেশ করায় ঠিকমত রান্না-বান্নাও করতে পারছেন না বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ।অপরদিকে দুর্গত এলাকায় ডায়রিয়া, আমাশয়, জ্বরসহ পানি বাহিত বিভিন্ন রোগ বালাই ছড়িয়ে পড়ায় ৭৫টি মেডিকেল টিম গঠন করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এছাড়া কমিউনিটি ক্লিনিক থেকেও বিশেষ ব্যবস্থায় দুর্গতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভোলার সিভিল সার্জন ডা. ফরিদ আহমেদ বলেন, জেলার ৬৮টি ইউনিয়নে একটি করে ও উপজেলায় সাতটিসহ মোট ৭৫টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। সেখানে পর্যাপ্ত ওষুধ ও স্যালাইল সরবরাহ রয়েছে।ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল হেকিম বলেন, বুধবার সকাল পর্যন্ত মেঘনার পানি ১৭ সেন্টিমিটার কমেছে।

গাইবান্ধা: দফায় দফায় বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে গাইবান্ধায় ঘাঘট, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও করতোয়া নদ-নদীর পানি ফের বাড়তে শুরু করেছে।বুধবার (০২ সেপ্টেম্বর) সকালে ব্রক্ষ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এছাড়া অন্যান্য নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি চলে এসেছে। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে বন্যা কবলিত এলাকার শুকিয়ে যাওয়া রাস্তাঘাট, ফসলের ক্ষেত ফের জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়া নদী ভাঙনও তীব্র আকার ধারণ করেছে।জেলার সুন্দরগঞ্জ, গোবিন্দগঞ্জ, সাঘাটা ও ফুলছড়িতে নদী ভাঙনের তীব্রতা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে, এখনও ফসলের ক্ষেতে পানি থাকায় নতুন করে আমন চারা বা সবজি চাষ করতে না পেরে কৃষকরা বেকায়দায় পড়েছেন। বন্যা দীর্ঘায়িত হলে শাকসবজি ও রোপা আমন ধান উৎপাদন বিঘ্নিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

অন্যদিকে, বন্যার পানিতে পুকুর উসলে পুকুরের অধিকাংশ মাছ বেরিয়ে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন মৎস্যচাষিরা। তারা মাছের পোনা অভাবে পুকুরে নতুন করে মাছ চাষ করতেও পারছেন না।ত্রাণ ও পুনর্বাসন দপ্তর জানায়, বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষের জন্য ত্রাণ সহায়তা হিসেবে জেলার সাতটি উপজেলায় ২৪০ মেট্রিক টন চাল ও ৬ লাখ ১০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। তবে সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি হওয়ায় ওই উপজেলায় অতিরিক্ত আরও ২৫ মে. টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।আকস্মিক বন্যায় এ পর্যন্ত পানি নিমজ্জিত হওয়ায় ৩৮ হাজার ৬৮৬ হেক্টর জমির আমন বীজতলা, আউশ ও আমন ধান এবং সবজি ক্ষেত, পানের বরজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ।

রংপুর : প্রধান প্রধান নদনদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় আজ ব্রক্ষপুত্র অববাহিকার চর ও নি¤œাঞ্চলের আরও নতুন নতুন এলাকা আজ প্লাবিত হয়েছে। জেলার প্রধান প্রধান নদনদীগুলোর পানি বিভিন্ন পয়েন্টে অবিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সকাল ৬টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত কম হওয়া সত্ত্বেও ও উজান থেকে আসা পানির কারনে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারি, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ত্রান ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিবৃন্দ এবং বিভিন্ন এনজিও বন্যা কবলিত এলাকার বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করছেন এবং ত্রান সামগ্রি বিতরনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন।রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ দিলাওয়ার বখত সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের সাথে সমন্বয় করছেন, অন্যদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বিভিন্ন উপদ্রুত এলাকা পরিদর্শন করছেন। কুড়িগ্রামের ত্রান ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবদুল মোতালিব, গাইবান্ধার হাবিবুর রহমান এবং আবদুস সালাম জানান, বন্যা দুর্গতদের মাঝে চাল ও নগদ অর্থ বিতরন করা হচ্ছে।

এদিকে, পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে সকাল ৬টায়, যমুনা নদী বাহাদুরাবাদ, সারিয়াকান্দি ও সিরাজগঞ্জে বিপদসীমার যথাক্রমে ১৫ সেমি, ৯ সেমি ও ৭ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আর ধরলা নদী কুড়িগ্রাম পয়েন্টে বিপদসীমার ২০ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। অন্যদিকে, আজ তিস্তার পানি ডালিয়া ৫ সেমি কমলেও তা বিপদসীমার ২৫ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। উজান থেকে নেমে আসা জলরাশি ব্রক্ষপুত্র নদ ফুলছড়ি ও চিলমারী পয়েন্টে যথাক্রমে বিপদসীমার ৫ সেমি এবং ৩ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত

জামালপুর: যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জামালপুর জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সূত্র জানায়, দুপুর ১২টা পর্যন্ত বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনার পানি বিপদসীমার ১৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গত ২৪ ঘন্টায় পানি বেড়েছে ১৬ সেন্টিমিটার। উজান থেকে ঢল নামায় এবং অব্যাহত বৃষ্টিপাতের ফলে পানি আরো বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।এদিকে, সরিষাবাড়ি উপজেলায় বাসুরিয়া এবং ইসলামপুরের বেলগাছায় নদীর ভাঙ্গন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ, বকশিগঞ্জ, মাদারগঞ্জ, মেলান্দহ, সদর এবং সরিষাবাড়ি উপজলায় এক লাখ ৪৬ হাজার ৩৪০ জন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।জেলা প্রশাসক এম সাহাবুদ্দিন খান জানান,পরিস্থিতি মারাত্মক নয়। আমরা ঘনিষ্টভাবে তা মনিটরিং করছি।

কুড়িগ্রাম: টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের নদ-নদীর পানি বাড়তে থাকায় সার্বিক বন্যা পরি¯ি’তির আরো অবনতি হয়েছে।ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এবং ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার খুব কাছ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরি¯ি’তির মারাতœক অবনতি ঘটেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১ লাখ মানুষ। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজার রহমান জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্রে ১৭ সেন্টিমিটার, ধরলায় ২৫ সেন্টিমিটার, দুধকুমোরে ১৭ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। চর, দ্বীপচর ও নদ-নদী তীরবর্তী এলাকার ২ শতাধিক গ্রামের ১ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।প্লাবিত হয়েছে আরো নতুন নতুন এলাকা। রাস্তা ও বাঁধের উপর আশ্রিত অনেকেই এখনও ঘরে ফিরতে পারেননি। তার ওপর নতুন করে বন্যা দেখা দেয়ায় তাদের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন জানান, এ পর্যন্ত বন্যার্তদের জন্য ১৪৯ মে. টন চাল ও আড়াই লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। উজানের পানির তীব্র ¯্রােতের কারণে জিঞ্জিরাম নদীর উপর খাটিয়ামারী সুইচগেটটি ভাঙ্গনের মুখ পড়েছে। ধরণী নদীর পানির তীব্র ¯্রােতে তিনদিনে ২৫টি ঘর নদীতে ভেসে গেছে। বন্যার পানিতে প্রায় ৫৬ হাজার হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত রয়েছে। যার বেশীরভাগই নষ্ট হবার আশংকা করছে কৃষিবিভাগ।