এমাজউদ্দীন আহমদ

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৫ নভেম্বর ২০১৫: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেছেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। এ অবস্থায় দেশে যেকোনো সময় যেকোনো কিছু ঘটে যেতে পারে। এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, দেশে যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরণের ঘটনা ঘটে যেতে পারে। এমন একটা আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই অবস্থার অবসান হওয়া দরকার।৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন। সভার আয়োজন করে স্বাধীনতা ফোরাম কেন্দ্রীয় সংসদ।এমাজউদ্দীন বলেন, দেশের প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান আজ দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ায় যে কোনো সময় যে কেউ নিহত হতে পারে। দেশের মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। মানুষের নিরাপত্তা দেয়া সরকারের দায়িত্ব।এসময় দেশের সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।সরকার অপরাধ ছাড়াই বিরোধী মতের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে অভিযোগ করে এমাজউদ্দীন বলেন, সরকার বিরোধী শক্তিকে যদি মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে নির্বাচন করতে চায় তাহলে সেটা প্রহসন ছাড়া আর কিছুই হবে না।তিনি আরো বলেন, সরকার বিরোধী দলের ভালো ভালো নেতাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করছে। এটা ইতিহাসে নজিরবিহীন। দেশে গণতন্ত্রের কঠিন সংকট চলছে বলেও মন্তব্য করেন এমাজউদ্দীন।

তিনি বলেন, দেশে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ী-জনতা কারও মধ্যে কোনো ঐক্য নেই। জাতি দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে, এটা জাতির অস্তিত্বের জন্য বড় হুমকি। ক্ষমতাসীন নীতিনির্ধারকদের এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য ভেবে দেখা উচিত। একইসঙ্গে জাতিকে বাঁচাতে সুশীল সমাজকেও এগিয়ে আসতে হবে।বিএনপিপন্থি এ শিক্ষাবিদ বলেন, এখন একটি বিষয় দেখা যাচ্ছে, ২-৩ বছর আগেও এটা ছিল না। যে কাউকে যখন খুশি, অসুস্থাবস্থায় ধরে নিয়ে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। এই সরকার ১৯ হাজার মামলার মাধ্যমে বিরোধী মতের পাঁচ লাখ নেতাকর্মীকে আসামি করেছে।এসব নেতাকর্মীদের মুক্তি না দিয়ে কোনো ধরনের নির্বাচন যেন না দেওয়া হয় সেজন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান এমাজউদ্দীন আহমদ।

সভার প্রধান বক্তা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, দেশের মানুষ চরম নির্যাতনের মুখে। অভিজিতের স্ত্রী, দীপনের বাবা এবং হত্যাকাণ্ডের শিকার অন্যদের স্বজনরাও এই সরকারের কাছে বিচার চাইছেন না। কারণ এই সরকারের প্রতি কারও আস্থা নেই।এই অবস্থায় সরকারের বিরুদ্ধে গণঐক্য গড়ে উঠেছে দাবি করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এই ঐক্যের প্রতি সম্মান দেখিয়ে তা তৃণমূল পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। মানুষের ঐক্যকে সম্মান না জানালে রাজনৈতিকভাবেও এসব সমস্যার সমাধান হবে না। নোমান বলেন, সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হওয়া দরকার, বিএনপির নেতাদের কারাগারে নিয়ে সরকারের বিশেষ উদ্দেশ্য সফল হবে না।সভায় বিএনপির আরেক ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান বলেন, আজ পুরো বাংলাদেশ অন্ধকারে। মানুষ বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। খালেদা জিয়ার ডাকে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

আয়োজক সংগঠন স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতউল্লাহ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন। এসময় আরো বক্তব্য দেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, ভাসানি সমর্থক পরিষদের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।