হান্নান শাহ

নিজের ঘরে ইহুদী রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্যর ঘরে ইহুদী খোঁজার চেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ। তিনি বলেছেন,ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ও তাদের লোকজনের যোগাযোগ ও উঠা-বসা আছে। আর এটা শতভাগ সত্য।

রোববার দুপরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তন মিলনায়তনে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) আয়োজিত এক গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ দাবি করেন তিনি। ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চ স্মরণে ও ভারতীয় পানি আগ্রাসনের প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে হান্নান শাহ বলেন, নিজের ঘরে ইহুদি রেখে অন্যের ঘরে ইহুদি খোঁজার চেষ্টা করবেন না। আপনার ( শেখ হাসিনা) পুত্রবধূ তো ইহুদি। তবে কি আমরা বলবো, ইসরায়েলের সঙ্গে আপনাদের সম্পর্ক আছে। এ ব্যাপারে তাকে (প্রধানমন্ত্রীর পুত্রবধূ) ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। কিন্তু আমরা এমনটা চাই না। শুধু বলবো, কাঁচের ঘরে থেকে অন্যের ঘরে ঢিল ছুড়বেন না। রোববার দুপুরে সিএমপিতে বিট পুলিশিং কার্যক্রম উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কমিশনার ইকবাল বাহার বলেন, ভারতে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ’র এজেন্টের সঙ্গে সরকার উৎখাতের বৈঠক’র অভিযোগে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীকে পেলেই গ্রেপ্তার করা হবে। সেজন্য তার দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

ইকবাল বাহারের বক্তব্যের জবাবে হান্নান শাহ বলেন, বিএনপি তথা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি তো নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। কথা বললেই বিরোধী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, কোনো প্রতিবেশি দেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ভাল না। শুধু বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে তাদের ভাল সম্পর্ক আছে। কী কারণে সম্পর্ক আছে, তা সবাই জানেন। ফারাক্কা বাঁধের কারণে বাংলাদেশের অনেক নদীর পানি শুকিয়ে গেছে। বাংলাদেশের কিছু দালালের কারণে আমরা অধিকার বঞ্চিত হচ্ছি। এ সরকার আমাদের অধিকার রক্ষায় কাজ করবে না। কারণ, তারা অনির্বাচিত সরকার। জনগণের কাছে তাদের কোনো দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা নেই।বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট জনগণের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে কাজ করছে বলে দাবি করেন হান্নান শাহ। দেশবাসীর উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, বর্তমান সরকার ভারতের স্বার্থে কাজ করছে। তাই ভারতের দালালদের প্রত্যাখ্যান করতে হবে এবং যারা দেশের স্বার্থে কাজ করে তাদের গ্রহণ করতে হবে।

হান্নান শাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পুত্রবধূ ইহুদী। তাই আমরা কি ঢোল বাজাবো ইসরাইলের সঙ্গে তার কি সর্ম্পক আছে। আমরা এমনটা চাই না। শুধু বলবো কাঁচের ঘরে থেকে ঢিল ছুড়বেন না।তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সঙ্গে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার লোকদের ওঠা-বসা আছে। এটা শতভাগ সত্য। তাতে কোনো সমস্যা হয় না।বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি সর্ম্পকে হান্নান শাহ বলেন, বিএনপির তথা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি তো নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার।হাইজ্যাক, ক্রসফায়ারের কথা আগে কখনো শুনিনি। এগুলো ভারত থেকে আনা হয়েছে বলেন হান্নান।

হান্নান শাহ বলেন, ভারতের সঙ্গে কোনো প্রতিবেশি দেশের সর্ম্পক ভাল নেই। শুধু বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে ভাল সর্ম্পক আছে। কি কারনে সর্ম্পক আছে তা সবাই জানেন। ফারাক্কা বাধের কারনে বাংলাদেশের অনেক নদীর পানি শুকিয়ে গেছে। বাংলাদেশের কিছু দালালের কারনে আমরা অধিকার বঞ্চিত হচ্ছি। এ সরকার আমাদের অধিকার রক্ষায় কাজ করছে না। তারা ক্ষমতায় থাকা আর লুটপাট করতে যা যা দরকার তাই করছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দ জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করছেন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ৬১৬টি গার্মেন্ট কারখানা বন্ধ ও ৩১৪ টি বন্ধ হওয়ার পথে। এতে কত লোক বেকার হয়ে পড়ছে। আরো কত লোক বেকার হবে। এই যদি হয় উন্নয়নের নমুনা। এ সরকার শুধু মুখে মুখে উন্নয়নের কথা বলে। খোঁজ নিয়ে দেখেন হাজার হাজার মানুষ চাকরিচ্যুত হচ্ছে। বেকারদের চাকরি হচ্ছেনা।তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার ভারতের স্বার্থে কাজ করছেন। তাই ভারতের দালালদের প্রত্যাখ্যান করতে হবে। আর যারা দেশের স্বার্থে কাজ করে তাদের গ্রহন করতে হবে।

জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধানের সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তব্য রাখেন-জাতীয় পার্টির (জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গাণি ও মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, এনডিপির চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, বাংলাদেশ জাতীয় দল চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা ও জাগপার সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ জামাল উদ্দিন প্রমুখ।