স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালস্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, মাদকদ্রব্য পাচার প্রতিরোধে ভারত ও মায়ানমারের সাথে সম্মিলিতভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ সরকার। মন্ত্রী বলেন, সম্মিলিত উদ্যোগের কারণে ভারতের সীমান্তে এলাকায় ফেন্সিডিল কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে ভারত এবং মায়ানমার সরকার সীমান্তে কাটাতারের বেড়া দিয়ে মাদকদ্রব্য পাচার বন্ধ করতে তৎপরতা গ্রহণ করেছে। অচিরেই বাংলাদেশ এর সুফল পাবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে “মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস-২০১৬” উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি টিপু মুন্সী এমপি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোজাম্মেল হক খান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মাদকদ্রব্যের সরবরাহ হ্রাসে, মাদকদ্রব্যের ক্ষতি হ্রাসে ও মাদকদ্রব্যের ব্যবহার রোধে ব্যাপক কাযক্রম গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ মাদকদ্রব্য উৎপাদক দেশ নয়। কিন্তু অবৈধ পাচারের কারণে মাদকের শিকার হওয়া দেশ। তিনি বলেন, আইন দিয়ে দেশকে মাদকমুক্ত করা যায় না। তাই সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে মাদকের বিরুদ্ধে আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছি। যার প্রচেষ্ঠায় দেশের ৩৭ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাদকবিরোধী কমিটি গঠন করা হচ্ছে। মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়াই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।

মন্ত্রী বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সরকার “জিরো টলারেন্স” নীতি গ্রহণ করেছে। তাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মাদকবিরোধী অভিযান সফল করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আসছে। মাদক বিষয়ক মামলা নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ আদালত স্থাপন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে যুগোপোযোগী করা হচ্ছে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে টিপু মুন্সী বলেন, বাংলাদেশে অবৈধভাবে মাদক পাচার হয়ে আসে গোল্ডেন ক্রিসেন্ট ও গোল্ডেন ট্রাইংগেল দিয়ে। বাংলাদেশকে তারা রুট হিসাবে ব্যবহার করে। এটা বন্ধ করতে হবে।

বিশেষ অতিথি ড. মোজাম্মেল হক খান বলেন, বাংলাদেশ সরকার মাদকবিরোধী কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। মাদক পাচারের সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারের জন্য সবার্ত্মক উদ্যোগ সরকারের রয়েছে। সভাপতির বক্তব্যে রাকিবুর রহমান বলেন, দেশে বর্তমানে ৬৪ লাখ মাদকাসক্ত রয়েছে। তাদেরকে চিকিৎসা ও কাউন্সিলিংকের মাধ্যমে সুস্থ করে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এর জন্য বিদ্যমান চিকিৎসা কেন্দ্রের পাশে আরো প্রয়োজনীয় চিকিৎসা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেন, দেশের কারাগারের বন্দীদের মধ্যে ৩০ ভাগ বন্দী মাদক মামলার আসামী। দেশে প্রায় ৫০ হাজার মাদক মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এসব মামলার দ্রুত মীমাংসার জন্য বিশেষ আদালত স্থাপনের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।