লিয়নেল মেসি

কর ফাঁকির অভিযোগে বার্সেলোনার তারকা ফরোয়ার্ড লিওনেল মেসিকে ২১ মাসের কারাদন্ড দিয়েছে স্পেনের একটি আদালত।২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত প্রায় প্রায় ৪১ লাখ ইউরো কর ফাঁকির জন্য বুধবার আর্জেন্টিনার এই তারকা ফুটবলারের বাবা হোর্হে মেসিকেও ২১ মাসের কারাদ- দেওয়া হয়।তবে স্পেনে সহিংস অপরাধ না করলে দুই বছরের নিচে সাজার ক্ষেত্রে কারাবাস হয় না।মেসি ও তার বাবার আগের কোনো ক্রিমিনাল রেকর্ড না থাকায় তাদের আপাতত কারাগারে যেতে হবে না।

তবে সাজা হলেও জেলে যেতে হচ্ছে না আর্জেন্টিনা ও বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড এবং তাঁর বাবাকে। স্প্যানিশ নিয়ম অনুযায়ী, প্রথম অপরাধের ক্ষেত্রে (যদি হিং¯্র না হয়) সাজার মেয়াদ ২ বছরের কম হলে সাধারণত জেলে যেতে হয় না। আপাতত জেলের সাজাটা তাই স্থগিতই থাকছে।সরকারি আইনজীবীদের অভিযোগ, বেলিজ ও উরুগুয়েতে নিবন্ধিত কয়েকটি কোম্পানির মাধ্যমে মেসির ইমেজ স্বত্ব থেকে পাওয়া আয় গোপন করা হয়। কিন্তু মেসি বারবারই বলে আসছিলেন, তার আর্থিক বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। সব দেখেন তার বাবা। তিনি শুধু ফুটবল খেলেন।২০১৩ সালের অগাস্টে মেসি ও মেসির বাবা ফাঁকি দেওয়া কর আর এর সুদ বাবদ ৫০ লাখ ইউরো পরিশোধ করেছিলেন।

জেলের সাজা স্থগিত হলেও জরিমানা ঠিকই দিতে হবে। রয়টার্সের খবর অনুযায়ী, আদালত আর্জেন্টাইন অধিনায়ককে ২০ লাখ এবং তাঁর বাবাকে ১৫ লাখ ইউরো জরিমানা করেছে।২০০৭ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে প্রায় ৪১ লাখ ইউরো কর ফাঁকি দিয়েছিলেন মেসি ও তার পরিবার। স্প্যানিশ আদালতের রায়, ইমেজ-সত্ত্ব থেকে পাওয়া অর্থের ওপর কর ফাঁকি দিতে ‘ট্যাক্স হ্যাভেন’ বলে পরিচিত বেলিজ ও উরুগুয়েতে বিভিন্ন নামী-বেনামি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেছিলেন মেসি।গত জুনে কোপা আমেরিকা শুরু হওয়ার ঠিক আগে ২৯ বছর বয়সী আর্জেন্টাইনের বিরুদ্ধে মামলার শুনানি হয়েছিল। বার্সেলোনার আদালতে শুনানির সময় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি বলেছিলেন, বার্সেলোনা ও আর্জেন্টিনার হয়ে মাঠে দুর্দান্ত নৈপুণ্যের কারণে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি ঠিকই আছে মেসির। তবে বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড ও তাঁর বাবা অবৈধভাবে নিজেদের আয় গোপন করেছেন। এ কারণে দুজনেরই জেলের সাজা ও জরিমানার শাস্তির সুপারিশ করেছিলেন কৌঁসুলি।

সে সময় মেসি ও তাঁর বাবা দুজনই ইচ্ছাকৃত কোনো অপরাধের কথা অস্বীকার করেছেন। সব সময়ের মতো মেসি সেদিনও দাবি করেছিলেন, অর্থ সংক্রান্ত বিষয় কিছুই জানতেন না। তিনি সব সময় মাঠের ফুটবলে মনোযোগ দিয়েছেন, অর্থের ব্যাপারগুলো সব সময় দেখতেন তাঁর বাবা ও আইনজীবী। মেসি শুধু তাঁদের কথামতো সই করেছেন।মামলার একটা পর্যায়ে শোনা গিয়েছিল, আদালত মেসির কথা মেনে নিয়েছেন, কোনো সাজাই হবে না তাঁর। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির যুক্তির পর এই স্থগিত সাজা ও জরিমানা পেতে হলো মেসি ও তাঁর বাবাকে।

২০১৩ সালে প্রথম শিরোনামে আসে মেসির কর ফাঁকির খবর। এরপর থেকে মেসি পরিবার বিভিন্ন সময়ে বকেয়া ও অতিরিক্ত পাওনা হিসেবে স্প্যানিশ কর্তৃপক্ষকে ৫০ লাখ ইউরোর মতো অর্থ দিয়েছেন। এ ছাড়া ২০১০ ও ২০১১ সালের ইমেজ-সত্ত্বের ওপরও নিয়ম মেনে ১ কোটি ইউরো কর দিয়েছেন মেসি।