pabna-photo_02

ডিবি পুলিশ শহরতলীর হেমায়েতপুর ইউনিয়নের গাফুরিয়াবাদ এলাকায় একটি অবৈধ অস্ত্র তৈরীর কারখানার সন্ধান পেয়েছে। ডিবি পুলিশ ওই অস্ত্র তৈরীর কারখানা থেকে ২টি রিভলবার, অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামসহ এক অস্ত্র প্রস্তুতকারক ও ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে। সোমবার দুপুর ১২ টায় এই অভিযান চালানো হয়। পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের গাফুরিয়াবাদ এলাকায় এই অভিযান চালানো হয় বলে পাবনার পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির তাঁর কার্যালয়ে দুপুর ২টায়এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি হলেন,সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের গাফুরিয়াবাদ গ্রামের শাহজাহান মল্লিকের ছেলে মো: রেজাউল করিম ওরফে রেজাউল মল্লিক। সে একজন অস্ত্র প্রস্তুতকারক ও ব্যবসায়ী বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছেন।অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সিদ্দিকুর রহমান (অপরাধ ও তদন্ত) জানান, গোপন সংবাদে জানতে পারেন যে, সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের গাফুরিয়াবাদ নামক এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে নিজ বাড়িতে অবৈধ অস্ত্র তৈরি ও বিক্রি করা হচ্ছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে পাবনা ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম সেখানে অভিযানে যায়। এ সময় গ্রেপ্তারকৃত রেজাউল করিমের বাড়িতে অবৈধ অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পায়। সেখান থেকে ২টি রিভলবার ও বিপুল পরিমান অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামীমা আক্তার জানান, অভিযান চলাকালে একটি পূর্ণ রিভলবার, একটি অসম্পন্ন রিভলবার, ৪৯টি রিভলবারের ম্যাগজিন (গুলির চেম্বার), ১টি লেদ মেশিন, ১টি ড্রিল মেশিন,একটি দেশীয় তৈরী পাইপগানের অংশবিশেষ, কার্টার, বাটাল, হাতুড়িসহ বিপুল সংখ্য অস্ত্র তৈরির অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার করা হয়।

সাংবাদিকদের সামনে অস্ত্রপ্রস্তুতকারকরেজাউল করিমকে হাজির করা হলে জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, একটি রিভলবারের কিছু অংশ সে ভারত থেকে এনে এখানে তৈরি করছিল। পূর্ণ একটি রিভলবার তৈরীর পর সে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করতো। পেশায় একজন লেদ মেকানিক্স হলেও সে অস্ত্র তৈরির কৌশল রপ্ত করেছে। এর মাঝে বিদেশে পাড়ি দিয়ে সম্প্রতি দেশে ফিরে আবার সে নিজ বাড়িতে ওয়ার্কশপের আড়ালে অস্ত্র তৈরি শুরু করে। পাবনার পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির বলেন, পাবনা থেকে তৈরিকৃত এই অস্ত্রগুলো সস্তায় দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হয়ে থাকে এমন তথ্য পুলিশের কাছে ছিল। কিন্তুকোথায় অস্ত্র তৈরি করা হয় সে বিষয়ে ওয়াকিবহাল না থাকায় অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান মেলাতে পারছিলো না পুলিশ ।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সবে মাত্র তাকে (অস্ত্র প্রস্তুততকারক রেজাউল) গ্রেপ্তার করেছি। কি পরিমান অস্ত্র তৈরি করে, কত টাকায় কাদের কাছেকিভাবে বিক্রি বা লেনদেন হয়, তার সাথে আর কারা কিভাবে সম্পৃক্ত আছে সে বিষয় গুলো খতিয়ে দেখতে সময়ের প্রয়োজন। এদিকে এই অস্ত্র ব্যবসার আড়ালে কোন জঙ্গী সম্পৃক্ততা বা সন্ত্রাসী বাহিনীর ইন্ধন আছে কি না সে বিষয়ে পুলিশের কাছে জানতে চাইলে অধিকতর তদন্ত করে পরবর্তীতে এ বিষয়ে বলা সম্ভব বলে দাবী করেন পুলিশের এই শীর্ষ কর্মকর্তা।

এসপি কবির বলেন, অধিকতর তদন্তের জন্যে সোমবার বিকেলে তাকে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে। রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এই অস্ত্র তৈরির কারখানা, জড়িত কারা, এ সকল বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।