জঙ্গী তৎপরতাকে বিবেচনায় রেখে নজিরবিহীন পাঁচ স্তরের নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে তাবলীগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমা শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে। রবিবার আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে প্রথম পর্বের ৩ দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমা শেষ হবে। নানা বিড়ম্বনাকে উপেক্ষা করে বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিতে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি শুক্রবারেও ইজতেমা ময়দানে ছুটে আসেন। রবিবার আখেরি মোনাজাতের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত মুসল্লিদের এ ঢল অব্যাহত থাকে। শুক্রবার প্রথম দিনে বাদ ফজর থেকে আমবয়ানের মধ্য দিয়ে বিশ্ব ইজতেমার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। ইজতেমার শুরুর দিন শুক্রবার জু’মার নামাজে অংশ নিতে ইজতেমাস্থলে মুসল্লি¬দের ঢল নামে। এদিন সকাল থেকেই টঙ্গী ও আশপাশ এলাকার হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মানুষ ছুটে আসেন টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে। নামাজের আগেই ইজতেমার পুরো প্যান্ডেল ও ময়দান কানায় কানায় ভরে যায়। প্যান্ডেলের নিচে জায়গা না পেয়ে মুসল্লি¬রা অংশ নেন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কসহ আশেপাশের সড়ক ও গলিগুলোর ওপরে। এদিকে শনিবার বাদ আসর ইজতেমার অন্যতম আকর্ষণ যৌতুকবিহীন বিয়ে অনুষ্ঠিত হবে। এবারের বিশ^ ইজতেমার প্রথম পর্বে লাখ লাখ মুসুল্লির সঙ্গে বিশ্বের প্রায় ৯০টি দেশের প্রায় ৭ হাজার মুসল্লি উপস্থিত হয়েছেন।

শুক্রবার বাদ ফজর ভারতের মাওলানা ওবায়দুল খোরশেদ আম বয়ানের মাধ্যমে এবারের বিশ্বইজতেমার মূল কজ শুরু করেন। এ বয়ান বাংলায় তরজমা করেন বাংলাদেশের মুরুব্বি মাওলানা মো. জাকির হোসেন। অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও উপস্থিত লাখ লাখ মুসল্লি¬র উদ্দেশে যথারীতি ঈমান, আমল, আখলাক ইত্যাদি বিষয়ে আমবয়ানের মাধ্যমে ইজতেমার প্রথম পর্বের ৩ দিনের কার্যক্রম শুরু হয়। ১৫ জানুয়ারি রবিবার জোহরের নামাযের পূর্বে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে প্রথম পর্বের সমাপ্তি ঘটবে। এর ৪ দিন পর আগামী ২০ জানুয়ারি শুক্রবার থেকে শুরু হবে দ্বিতীয় পর্বের ৩ দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমা।

বিশ্ব ইজতেমায় আগত ৬ মুসল্লির মৃত্যু ॥ এবারের বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিতে এসে হৃদযন্ত্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে শুক্রবার সকালে আরো এক মুসুল্লি মারা গেছেন। তার নাম বাবুল মিয়া (৬০)। তিনি ফেনীর দাগনভূইয়া উপজেলার মাছিমপুর এলাকার আব্দুর রশিদের ছেলে। এ নিয়ে বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিতে আসা ছয় মুসুল্লীর মৃত্যু হয়েছে। টঙ্গী সরকারি হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক মোকলেছুর রহমান জানান, শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে বাবুল মিয়াকে মৃতাবস্থায় ইজতেমা ময়দান থেকে হাসপাতালে আনা হয়। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা গেছেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে মানিকগঞ্জে সাহেব আলী (৩৫), বৃহস্পতিবার সকালে ময়মনসিংহের নান্দাইলের মারুয়া গ্রামের মৃত আহম্মদ আলীর ছেলে মো. ফজলুল হক (৫৬), বিকেলে সাতক্ষীরা জেলা সদরের খেজুরডাঙ্গা এলাকার মৃত আব্দুস সোবাহানের ছেলে আ: আব্দুস সাত্তার (৬০) এবং সন্ধ্যায় টাঙ্গাইলের ধনবাড়ি উপজেলার নিজবন্নী এলাকায় মো: জানু ফকিরের (৭০) এবং বুধবার দিবাগত রাতে মারা গেছেন কক্সবাজারের মো: হোসেন আলী (৬৫) মারা যান।

মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর।