সারাদেশেই জেঁকে বসেছে শীতÑকোনো কোনো জায়গায় সূর্যের দেখা মিললেও বাড়ছে শীতের তীব্রতা।প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে ঠান্ডায় কষ্টে রয়েছেন ছিন্নমূল মানুষেরা। বেড়েছে শীতজনিত রোগের প্রকোপ।পৌষের শীত কাঁপন ধরাতে পারেনি। শনিবার থেকে মাঘ মাস শুরু। তবে মাঘের আগে শীতের কাঁপন ধরেছে দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা কুড়িগ্রাম ও নীলফামারীতে। মৌসুমের প্রথম দিকে শীতের তীব্রতা তেমনটা বোঝা না গেলেও জানুয়ারিতে এক সমপ্তাহের ব্যবধানে বইতে শুরু করেছে দ্বিতীয় মৈতপ্রবাহ। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার বার রংপুর ও সিলেট বিভাগের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইতে শুরু করেছে।নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে শীতের তীব্রতা বোঝা না গেলেও পৌষের শেষে ঘন কুয়াশা, তীব্র শীত ও কনকনে ঠা-ায় বিপর্যস্ত দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ।মৃদু শৈত্য প্রবাহে জেলা পঞ্চগড়ে গত ৪ দিনে সূর্যের মুখ দেখতে পায়নি মানুষ। তীব্র শীতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী ও খেটে খাওয়া মানুষ। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না কেউ।

শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় চরম কষ্টে রয়েছে দিনাজপুরের মানুষ। ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন নার্স ও চিকিৎসকরা।শীতে অবর্ণনীয় কষ্টে আছেন মৌলভীবাজার জেলার মানুষ। কনকনে ঠান্ডায় স্থবির হয়ে পড়েছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ ও দরিদ্র চা শ্রমিকদের।শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ বলেন, ঘন কুয়াশা ও বাতাসে জলীয় বাষ্পের কারণে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। নীলফামারীর রাজারহাটে শীতের তীব্রতা আরও বেশি। আজ শুক্রবার সকালে সেখানকার তাপমাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এবারের শীত মৌসুমে এটি সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড।

রংপুর বিভাগের বেশির ভাগ এলাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে চলে এসেছে। পাশের বিভাগ রাজশাহীর অবস্থাও একই। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম রুহুল কুদ্দুস প্রথম আলোকে বলেন, নীলফামারী ও কুড়িগ্রাম জেলায় তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার কারণে ঠান্ডা পড়ছে। শীতের এই দাপট আরও দুই-এক দিন থাকতে পারে। পৌষের বিদায়বেলার শীতের প্রভাব ঢাকাসহ দেশের মধ্য ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলেও পড়েছে। আজ সকালে রাজধানী ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, গতকাল বৃহস্পতিবার এটি ছিল ১৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বিভাগীয় শহর খুলনায় ১১ দশমিক ২, চট্টগ্রামে ১৪, ময়মনসিংহে ১১ দশমিক ৬, রাজশাহীতে ৯ দশমিক ২, রংপুরে ৬ দশমিক ৮, সিলেটে ১৩ ও বরিশালে ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।আবহাওয়ার পূর্বাভাস: শুক্রবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, নীলফামারী ও কুড়িগ্রাম অঞ্চলের ওপর দিয়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং মাদারীপুর, টাঙ্গাইল, সীতাকুন্ড, রাঙামাটি, শ্রীমঙ্গল ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে চলা শৈত্যপ্রবাহ আরও বিস্তার লাভ করতে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।