গাজীপুরের শ্রীপুরে দুধের সঙ্গে বিষ প্রয়োগে আট মাসের এক শিশুকে হত্যা করেছে তার পাষন্ড মা। এলাকাবাসি ঘাতক মা’কে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। আটককৃতের নাম সামিয়া আক্তার বিথী (২০)। সে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার চকপাড়া এলাকার পোল্ট্রি ব্যবসায়ী হারুন অর রশীদ খানের স্ত্রী।

শ্রীপুর মডেল থানার ওসি আসাদুজ্জামান ও এলাকাবাসি জানায়, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার চকপাড়া এলাকার পোল্ট্রি ব্যবসায়ী হারুন অর রশীদ খানের সঙ্গে প্রায় আড়াই বছর পূর্বে মুন্সিগঞ্জ জেলার টুঙ্গীবাড়ি থানার সোনারং গ্রামের আঃ করিম বেপারীর মেয়ে সামিয়া আক্তার বিথীর বিয়ে হয়। বিথী শ্রীপুর উপজেলার চকপাড়া দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণীর ছাত্রী। প্রায় আট মাস আগে এ দম্পতির আদনান লাবিব সাদ নামের এক ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। জন্মের পর থেকেই ছেলে সাদ ঠান্ডা জনিত রোগে ভুগছিল। পুত্রের কান্নাকাটি ও সংসারের কাজকর্ম বিথীর ভাল লাগতো না। এনিয়ে গত কয়েকদিন ধরে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়ার বিবাদ চলে আসছিল। বুধবার রাতে ফিডারে দুধের সঙ্গে কীটনাশক মিশিয়ে তা ঘুমন্ত ছেলে সাদকে খাওয়ায় মা বিথী। এর অল্পকিছুক্ষণের মধ্যেই সাদ মারা যায়। রাতে হারুন বাড়ী ফিরে ঘুমন্ত ছেলে সাদকে আদর করার সময় তার শরীর ঠান্ডা ও মুখ ফেনা দেখতে পায়। তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হলে সাদকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বিছানায় সাদের পাশে পড়ে থাকা ফিডার থেকে কীট নাশকের গন্ধ বের হতে দেখে স্থানীয়দের মনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। এসময় এলাকাবাসি বিথীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিথী জ¦ালা মেটাতে ফিডারে দুধের সঙ্গে কীটনাশক মিশিয়ে তা ঘুমন্ত সাদকে খাইয়ে হত্যা করার কথা স্বীকার করে। খবর পেয়ে শ্রীপুর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত শিশুর লাশ উদ্ধার করে। এসময় আটক বিথীকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে স্থানীয়রা। এঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

নিহতের বাবা হারুন অর রশীদ খান জানান, বিথী বেপরোয়া চলাফেরা করতো এবং পরিবারের কারো কথা শুনতো না। ছোট খাটো বিষয় স্বামী ও বিভিন্নজনের সঙ্গে বিথী ঝগড়া বিবাদে জড়িয়ে পড়তো। অসুস্থ্য পুত্রের কান্নাকাটি ও সংসারের কাজকর্ম তার কাছে ভাল লাগতো না। তার উশৃঙ্খল আচরণের কারনে তার বাবা-মাও বিথীর তেমন খোঁজ খবর নিত না।