মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে অসোমবার তৃতীয় দিনের মতো আমরণ অনশন অব্যাহত রেখেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।চলমান কর্মসূচিতে রোববার রাতে দর্শন বিভাগের ফয়সাল আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থী যোগ দিয়েছেন। এ নিয়ে অনশনকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা দাঁড়াল পাঁচ।গত শনিবার শহীদ মিনারের পাদদেশে প্রথমে অনশন শুরু করেন ইংরেজি বিভাগের সরদার জাহিদুল ইসলাম, তাহমিনা জামান ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের পূজা বিশ্বাস। গতকাল সকালে তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী খান মুনতাসির আরমান।অনশনরত পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে জাহিদুল ও পূজার বিরুদ্ধে মামলা আছে। বাকি তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা নেই।সকালে অনশনস্থলে গিয়ে দেখা যায়, জাহিদুল, পূজা ও তাহমিনাকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের খন্ডকালীন চিকিৎসক আনিছুর রহমান বলেন, অনশনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে তিনজনের রক্তচাপ কমে গেছে। কিছু না খাওয়ায় তাঁদের শরীরে শর্করাসহ অন্যান্য উপাদান কমে গেছে। এ কারণে ত্ােদর স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে।অনশনরত শিক্ষার্থীরা জানান, মামলা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা অনশন চালিয়ে যাবেন।শিক্ষার্থীদের অনশনের মুখে গতকাল দুপুরে জরুরি সিন্ডিকেট সভা বসে। সভায় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট জানায়, মামলা প্রত্যাহার করা সম্ভব নয়।উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মামলার বাদী রাষ্ট্র। আমাদের পক্ষে মামলা প্রত্যাহার করা সম্ভব নয়।’

গত ২৬ মে ভোরে ক্যাম্পাস-সংলগ্ন সিঅ্যান্ডবি এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে দুর্ঘটনায় নাজমুল হাসান ও মেহেদি হাসান নামের বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। দুই শিক্ষার্থীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, ঘাতক চালকের শাস্তি ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে পরদিন ২৭ মে বেলা পৌনে ১১টা থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। বিকেলে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। এতে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুর করেন। এ সময় কয়েকজন শিক্ষক লাঞ্ছিত হন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ৫৪ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষকদের একটি অংশ এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন।