ক্ষমতায় টিকে থাকারজন্য সরকার মানবাধিকারকে জলাঞ্জলি দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেনবিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।রোববারজাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথিরবক্তব্যে এমন মন্তব্য করেন তিনি। ১০ ডিসেম্বর ‘বিশ্ব মানবাধিকারদিবস উপলক্ষে মানববন্ধনের আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলবিএনপি। দেশ আজ কারাগারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিবমির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, তারেক রহমানকেমিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে, খালেদা জিয়াকে ট্রায়ালেরাখা হচ্ছে, তাই দেশ আজ কারাগারে। দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতানেই দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যারা ভিন্ন মত প্রকাশ করছেন,হয় তাদের খুন করা হচ্ছে, আর না হয় তো গুম করা হচ্ছে। ফরহাদমজহারকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং তাকে ১৬৪ ধারায়জবানবন্দি দিতে বাধ্য করা হয়েছে।বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন,পাঁচ বছর ধরে নিখোঁজ সন্তানের মায়েরা আহাজারি করছেন। এপাঁচ বছরে অসংখ্য পরিবারকে আশাহত করেছে এই অবৈধ সরকার।নিখোঁজ ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরওবলেন, ‘বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে যাদেরতুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তাদের ফিরিয়ে দিন। মানববন্ধনেবিএনপি মহাসচিব বলেন, গত কয়েক বছরে দেশের অসংখ্য পরিবারঅসহায় হয়ে গেছে। তাদের সন্তান, পরিবার, সদস্য হারিয়েছে।সিলেটে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলীর সন্তানএখনো কাঁদে। প্রতিবছর ঈদের দিন তারা দরজার দিকে তাকিয়েথাকে, এই বুঝি তাদের বাবা আসবে, তাদের সঙ্গে ঈদ করবে। বর্তমান সরকারকে ‘অবৈধ সরকার’ মন্তব্য করে ফখরুল আরো বলেন,শুধুমাত্র ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সব গণতান্ত্রিক পদ্ধতিকে জলাঞ্জলিদিয়ে, মানবাধিকারকে জলাঞ্জলি দিয়ে, শুধুমাত্র শক্তির জোরে তারাক্ষমতায় টিকে আছে। তাদের এ কাজে যারাই প্রতিবাদ করছে হয় তারাগুম হচ্ছে, না হয় খুন হচ্ছে। আজকে খবরের কাগজ পড়লে দেখতে পারবেনফরহাদ মজহারকে কিভাবে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো।তিনি ৫ মাস পর তার বর্ণনা দিয়েছেন। তাকে গুম করার চেষ্টা করাহয়েছিলো।ফখরুল আরো বলেন, শুধু ফরহাদ মজহার নয়, কয়েকদিন আগেএকজন রাষ্ট্রদূত নিখোঁজ হয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র,

সাংবাদিক উৎপল, রাজনৈতিক নেতা কেউ ফিরে আসেননি।এসময়তিনি দলের করা একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, শুধুমাত্র বিএনপিনেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলার সংখ্যা ৭৮ হাজার ৩২৩টি,আসামির সংখ্যা ৭ লাখ ৮৩ হাজার ২৩৮ জন, মোট খুনের সংখ্যা৫২০, অপহরণের সংখ্যা ৬৪৭। এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন ১৫৭ জন,নির্যাতনের শিকার ৩৭ লাখ মানুষ। মির্জা ফখরুল বলেন, আজকেসারাদেশে হত্যা, গুম, খুন, মামলায় জর্জরিত, একটি পরিবার নেইযারা হয়রানির শিকার নয়। রিজভী তার বক্তব্যে বলেন, আজকে দেশে কথাবলার অধিকার নেই, সমাবেশ করার অধিকার নেই। মানবাধিকারপ্রতিষ্ঠার দাবিতে আজকে এ মানববন্ধন বন্ধেও সরকারের কতোআয়োজন। আজকে চোরকে বলতে হবে সাধু, মিথ্যুককে বলতে হবেসত্যিবাদী, মিথ্যাকে বলতে হবে সত্য। এসময় তিনি সরকারের গুম,হত্যা, খুন, লুটপাটের জন্য সামনে ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে বলেহুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।ড. মঈন খান তার বক্তব্যে বলেন, গত কয়েকবছরে দেশের মানুষকে গুম করে, হত্যা করে যে নির্যাতন করা হয়েছেতাতে দেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার গুম হয়ে গেছে।মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপি স্থায়ী কমিটিরসদস্য ড., আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শওকতমাহমুদ, চেয়ারপারপনের উপদেষ্টা আমানুলাহ আমান, বিএনপিরসিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী,নিখোঁজ পরিবারের সদস্যদের পক্ষে সানজিদা ইসলাম প্রমুখ।