গাজীপুরে পৃথক ঘটনায় এক অটো রিক্সা চালকসহ দু’জনকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ দু’জনের লাশ উদ্ধার করলেও অটো রিক্সা চালকের দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধার হয়নি। নিহতরা হলো- সিলেট সদর থানার মোগলগাঁও গ্রামের আইবুর রহমানের ছেলে অটো রিক্সা চালক মাফিজুর রহমান (১৮) এবং ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশঙ্কর থানার পাশরী গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে ফিরোজ খান (২৫)।

কাপাসিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক জানান, অটোরিক্সা চালক মাফিজুরের বাবা কাপাসিয়া সদর পোষ্ট অফিসের নাইডগার্ডের চাকুরি করেন। তারা দীর্ঘ দিন যাবত কাপাসিয়া সদর ইউনিয়নের সাফাইশ্রী গ্রামে ভাড়া বাসায় বসবাস করছে। মঙ্গলবার সকালে মাফিজুর যাত্রীবহনের জন্য ব্যাটারী চালিত তিন চাকার অটোরিক্সা নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে রাত ৯টার দিকে নিখোঁজ হয়। স্বজনরা বিভিন্নস্থানে খোঁজ করেও তার সন্ধান পায়নি। বুধবার দুপুরে এলাকাবাসি কাপাসিয়ার তরুণ পশ্চিমপাড়া বেপারী পাড়া এলাকার বিলুর বাড়ির দক্ষিনে বিলের পাশে একটি জঙ্গলের ভেতর আম গাছের নীচে গলাকাটা মাথা বিহীন মাফিজুরের লাশ দেখতে পায়। নিহতের পিতা ঘটনাস্থলে গিয়ে ছেলের লাশ সনাক্ত করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য লাশ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। তবে দেহ থেকে তার বিচ্ছিন্ন মাথাটি পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, দুর্বৃত্তরা নির্জন স্থানে নিয়ে মাফিজুরকে হত্যা করে তার অটো রিক্সাটি নিয়ে গেছে এবং দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন মাথাটি গুম করেছে।

জয়দেবপুর থানার চক্রবর্তী ফাঁড়ির এসআই মো. হারুন অর রশিদ ও মা ফিরোজা বেগম জানান, কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুরের আন্ধারমানিক এলাকায় আব্দুল কাইয়ুমের বাসায় ভাড়া থাকতেন ফিরোজ খান। তিনি স্থানীয় আন্ধারমানিকসহ বিভিন্ন এলাকায় মাদকের ব্যবসা করতেন। ব্যবসায় প্রভার বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত কিছুদিন ধরে স্থানীয় ‘মাদক বিক্রেতা’ আবু উজ্জ্বল, আরিফ সরকার ও সাইফুলসহ কয়েকজনের সঙ্গে তার বিরোধ চলে আসছিল। মঙ্গলবার গভীর রাতে বেড়ানোর কথা বলে প্রতিপক্ষের লোকজন ফিরোজকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। তারা জয়দেবপুর থানাধীন স্থানীয় মাধবপুরের দক্ষিণ বাগদের এলাকায় এফডিসি শুটিং স্পটের ২নং গেইট এলাকায় নিয়ে ধারালো অস্ত্রদিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে সেখানে ফিরোজকে ফেলে পালিয়ে যায়। পরদিন বুধবার সকালে স্থানীয়রা ফিরোজ খানের লাশ দেখতে পায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য লাশ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। নিহতের মাথা ও পিঠসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, মাদক ব্যবসার নিয়ে বিরোধের জেরে ফিরোজ খানকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
নিহতের মা ফিরোজা বেগম বলেন, তার ছেলে দুই/তিন বছর ধরে মাদক সেবন ও বিক্রি করে আসছিল। ব্যবসার টাকা নিয়ে উজ্জ্বল, আরিফ, সাইফুলসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে তার বিরোধ ছিল। মঙ্গলবার রাতে মোবাইলে ফোন পেয়ে সে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিহত হয়।