শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, বর্তমান সরকার কারিগরি শিক্ষাকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে। এই সরকারের বিগত বছরগুলোতে কারিগরি শিক্ষায় অনেক অর্জন করেছে। কেননা, কারিগরি শিক্ষায় দক্ষ না হলে দেশ এগুবে না, আর জাতি হিসেবেও সামগ্রিকভাবে আমরা পিছিয়ে পড়বো। এজন্য কারিগরি শিক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।শুক্রবার রাজধানীর সরকারি গ্রাফিক আর্ট ইন্সটিটিউটের ৫০ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি এক কোটি শ্রমিকের বেশির ভাগই অদক্ষ, এ কারণে তারা খুবই কম বেতন পায় এবং ছোট কাজ করে। অন্যদিকে বাংলাদেশের গার্মেন্টসখাতের উচ্চপদে চাকরি করে বিদেশীরা বছরে ৫ বিলিয়ন ডলার নিয়ে যাচ্ছে। এসব বিষয় চিন্তা করে দেশের কারগরি শিক্ষা প্রসার ও মান বাড়াতে নিরলস প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার।

তিনি আরও বলেন, ঐতিহ্যবাহী সরকারি গ্রাফিক আর্ট ইন্সটিটিউটের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ১০তলা ভবন এবং মেয়েদের জন্য স্বতন্ত্র হল করে দেয়া হবে। আর গ্রাফিক আর্টসে বিএসসি ডিগ্রী করার সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ইতিমধ্যে এ উদ্যোগের প্রাথমিক কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। শিগগিরই এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে। সরকারি গ্রাফিক আর্টস ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী নিহার রঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন-সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, শিক্ষামন্ত্রণালয়ের মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাবিভাগের সচিব মোঃ আলমগীর, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান, ব্যবসায়ী নেতা আতিকুল ইসলাম ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজিব প্রমুখ।

এরআগে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়। আলোচনা সভা শেষে বিকালে অনুষ্ঠিত হয় সাস্কৃতিক অনুষ্ঠান।৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে নবীন প্রবীনদের মিলনমেলায় মুখরিত হয়ে উঠে ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণ। এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন ছাত্র দেলোয়ার হোসেন যুগান্তরকে বলেন, দীর্ঘদিন পর সবাইকে একসঙ্গে পেয়ে খুবই ভালো লাগছে। এ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আমাদের সেতু বন্ধন আরও দৃঢ় হবে।

প্রসঙ্গত, সরকারি গ্রাফিক আর্টস ইন্সটিটিউট বাংলাদেশের একমাত্র প্রিন্টিং অ্যান্ড গ্রাফিক ডিজাইন ইন্সটিটিউট। ১৯৬৭ সালে এই ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে চারবছর মেয়াদী ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে তিনটি বিভাগ চলমান রয়েছে। মোহাম্মদপুর সাতমসজিদ রোডে অবস্থিত এই ইন্সটিটিউটের যাত্রা শুরু হয় ২৫ জন শিক্ষার্থী দিয়ে। বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০০ জন। ২০ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত এই ইন্সটিটিউটের বর্তমান জনবল সংখ্যা ৪০ জন। আর কম্পিউটার, গ্রাফিক ডিজাইন ও প্রিন্টিং টেকনোলজিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী দেয়া হচ্ছে। এ ইন্সটিটিউটের ২০০ সিট বিশিষ্ট ছাত্রদের একটি হল রয়েছে।